Home Bangla Recent পোশাক রপ্তানি বন্ধ হতে যাচ্ছে সাত শতাধিক কারখানার!

পোশাক রপ্তানি বন্ধ হতে যাচ্ছে সাত শতাধিক কারখানার!

সংস্কারে পিছিয়ে থাকায় লাইসেন্স নবায়ন হচ্ছে না

গত কয়েক বছর ধরে নানামুখী উদ্যোগ সত্ত্বেও যেসব গার্মেন্টস কারখানা সংস্কারে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি করতে ব্যর্থ হয়েছে, সেসব কারখানার লাইসেন্স নবায়ন করবে না সরকার। শ্রম মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর (ডিআইএফই) সম্প্রতি মাঠপর্যায়ের অফিসগুলোকে এ নির্দেশনা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, যেসব কারখানার সংস্কার ৮০ শতাংশের বেশি হয়েছে- কেবল ওইসব কারখানার লাইসেন্স আগামীতে নবায়ন করার জন্য ডিআইএফই থেকে মাঠপর্যায়ের উপ মহাপরিদর্শকদের (ডিআইজি) নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ডিআইএফই সূত্র জানিয়েছে, সরকারি উদ্যোগে বর্তমানে ৭৪৫টি কারখানার সংস্কার চলমান রয়েছে। এর মধ্যে ৮০ শতাংশের উপরে সংস্কার হওয়া কারখানা মাত্র ৩৪টি। এর বাইরে ৭১১টি কারখানার লাইসেন্স নবায়ন হবে না। অন্য দিকে, ইউরোপ ও আমেরিকাভিত্তিক ক্রেতাদের কারখানা পরিদর্শন জোট অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সভুক্ত কারখানার ক্ষেত্রেও এ নির্দেশনা প্রযোজ্য হবে। ফলে এসব কারখানা সরাসরি বিদেশী ক্রেতার কাছ থেকে কোনো ক্রয়াদেশ পাবে না। অন্য দিকে, সাব কন্ট্রাক্ট ভিত্তিতেও পণ্য উত্পাদন করতে গেলে জটিলতায় পড়বে। ফলে দীর্ঘমেয়াদে রপ্তানি বন্ধ হয়ে যেতে পারে এসব কারখানার।

ডিআইএফই’র মহাপরিদর্শক সামসুজ্জামান ভূঁইয়া ইত্তেফাককে বলেন, যেসব গার্মেন্টসের ৮০ শতাংশের উপরে সংস্কার সম্পন্ন হয়েছে, কেবল ওইসব কারখানার লাইসেন্স নবায়ন করতে মাঠপর্যায়ের অফিসগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সরকারি উদ্যোগে সংস্কারের তালিকায় থাকা কারখানার পাশাপাশি অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সভুক্ত কারখানার ক্ষেত্রেও এ নির্দেশনা প্রযোজ্য হবে। তিনি বলেন, কারখানাকে নিরাপদ করার স্বার্থে আমাদের উদ্যোগ চলমান থাকবে।

এর আগে সংস্কারে পিছিয়ে থাকা তিন শতাধিক কারখানার ইউডি সেবা (ইউটিলিটি ডিক্লারেশন বা রপ্তানি আদেশের বিপরীতে কাঁচামাল আমদানির প্রাপ্যতা ঘোষণা) বন্ধ করে দিতে পোশাক শিল্প মালিকদের দুটি সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএকে চিঠি পাঠায় ডিআইএফই। একইভাবে চিঠি পাঠায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতাধীন কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটকেও। অবশ্য ওই সেবা এখনো বন্ধ করেনি বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ। এমন পরিস্থিতিতে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল ডিআইএফই।

২০১৩ সালে রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় বহু শ্রমিক হতাহতের পর দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের গার্মেন্টস কারখানা সংস্কারের জোর দাবি উঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরই ইউরোপ ও আমেরিকার ক্রেতাদের কাছে রপ্তানি করে- এমন দুই হাজার দুইশ কারখানা সংস্কারে অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স নামে দুটি জোট গঠিত হয়। ওই জোটভুক্ত কারখানাগুলোর সংস্কার অগ্রগতি ৯০ শতাংশের উপরে। তবে এ দুটি জোটভুক্ত ক্রেতাদের কাছে পোশাক রপ্তানি হয় না, এমন দেড় হাজার কারখানা সংস্কারের লক্ষ্যে ২০১৫ সালের শুরুতে উদ্যোগ নেয় সরকারের শ্রম মন্ত্রণালয়। তিন বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এ কারখানাগুলো ভবনের কাঠামো, অগ্নি ও বৈদ্যুতিক ত্রুটির সংস্কার হয়েছে গড়ে এক তৃতীয়াংশ। এই সময়ের মধ্যে বন্ধ হয়ে যাওয়া, স্থানান্তর কিংবা অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সে যুক্ত হওয়া কারখানা বাদ দিয়ে এখন ৭৪৫টি কারখানার সংস্কার দেখভাল করছে ডিআইএফই। গত এক বছর ধরে দফায় দফায় সভা করেও খুব কম সংখ্যক কারখানায়ই আশানুরূপ সংস্কার হয়েছে। সর্বশেষ গত ফেব্রুয়ারিতে কারখানাগুলোকে ৬ মাসের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। অন্যথায় বন্ধ করার হুমকিও দেওয়া হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here