বাংলাদেশে ইউরোপীয় ক্রেতাদের সমন্বয়ে গঠিত কারখানা পরিদর্শন জোট অ্যাকর্ডের সংস্কার তদারকির কার্যক্রমের সময়সীমা না বাড়লে ৫৩২টি কারখানার রপ্তানি হুমকিতে পড়তে পারে। সম্প্রতি অ্যাকর্ডভুক্ত ব্র্যান্ডগুলোকে ওই জোটের পক্ষ থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। অ্যাকর্ডের প্রধান নিরাপত্তা পরিদর্শক স্টিফেন কুইন স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, আগামী ৩০ নভেম্বরের পর কারখানার সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞা না উঠলে অ্যাকর্ডের পক্ষে কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হবে না। ফলে বাধ্যতামূলকভাবেই ঢাকায় অ্যাকর্ডের অফিস বন্ধ করে দিতে হবে। সেক্ষেত্রে অ্যাকর্ডভুক্ত ব্র্যান্ডগুলো ওইসব কারখানা থেকে পণ্য নিতে পারবে না। অর্থাত্ এসব কারখানার সঙ্গে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে। সংস্কারের দুই ধাপে থাকা এরকম ৫৩২টি কারখানার একটি তালিকাও দেওয়া হয়েছে অ্যাকর্ডের পক্ষ থেকে। অ্যাকর্ডের সংস্কারের তালিকায় রয়েছে প্রায় দেড় হাজার কারখানা।
এদিকে অ্যাকর্ডের মেয়াদ বৃদ্ধির নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য গত মঙ্গলবার উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়েছে। গতকাল ওই আবেদনের উপর শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও আদালতের কোনো নির্দেশনা আসেনি। আগামী সপ্তাহে ফের শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। গত সোমবার এক অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ আদালতের নির্দেশনা থাকায় অ্যাকর্ডের কার্যক্রমের মেয়াদ বাড়ানো হবে না বলে ফের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
২০১৩ সালে রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় বহু শ্রমিক হতাহতের পর দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের গার্মেন্টস কারখানা সংস্কারের জোর দাবি উঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরই ইউরোপ ও আমেরিকার ক্রেতাদের কাছে রপ্তানি করে – এমন দুই হাজার দুইশ’ কারখানা সংস্কারে অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স নামে ৫ বছরের জন্য আলাদা দুটি জোট গঠিত হয়। ওই জোটভুক্ত কারখানাগুলোর সংস্কার অগ্রগতি ৯০ শতাংশের উপরে। তবে এ দুটি জোটভুক্ত ক্রেতাদের কাছে পোশাক রপ্তানি হয় না, এমন দেড় হাজার কারখানা সংস্কারের লক্ষ্যে ২০১৫ সালের শুরুতে উদ্যোগ নেয় সরকারের শ্রম মন্ত্রণালয়।
অ্যাকর্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে সোয়া দুইশ’ বায়ার ও ব্র্যান্ড। অবশ্য গত অ্যাকর্ডের বেশকিছু কার্যক্রম ও সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকার ও কারখানা মালিকদের সঙ্গে অ্যাকর্ডের দূরত্ব তৈরি হয়। এমন পরিস্থিতেই বাংলাদেশকে না জানিয়ে ফের তিন বছরের জন্য ‘২০১৮ অ্যাকর্ড’ নামে কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয় অ্যাকর্ড। অবশ্য ওই সিদ্ধান্তে সম্মতি জানিয়ে স্বাক্ষর করা ব্র্যান্ডের সংখ্যা ৫০ এর কিছু বেশি।