পোশাক খাতের নতুন মজুরি কাঠামো নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারছেন না শ্রমিকরা। গতকাল শিল্প অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোর কিছু কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে নতুন মজুরি কাঠামো নিয়ে অসন্তোষ দেখতে পেয়েছে শিল্প গোয়েন্দারা।
রোববার ও গতকাল শিল্প অধ্যুষিত দুটি অঞ্চলের পোশাক কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। ৯ ডিসেম্বর আশুলিয়া এলাকার মেট্রো নিটিং অ্যান্ড ডায়িং মিলস লিমিটেড, এআর জিন্স প্রডিউসার লিমিটেড, নিট এশিয়া গার্মেন্টস লিমিটেড, আর্টিস্টিক ডিজাইন হা-মীম গ্রুপ লিমিটেড, ইথিক্যাল গার্মেন্টস লিমিটেড, ভিনটেক্স গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা সকালে নিয়মিত সময়ে কাজে যোগদান করেন। এর কিছু পরে শ্রমিকরা কারখানায় নতুন মজুরি কাঠামোর প্রজ্ঞাপন বিজ্ঞপ্তি টাঙানোর দাবি জানান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, প্রজ্ঞাপনে উল্লেখিত কাঠামোয় মজুরির হার দেখে সন্তুষ্ট হতে পারেননি গ্রেড-৩ ও গ্রেড-৪-এর শ্রমিকরা। বিশেষ করে জুনিয়রদের থেকে সিনিয়ররা কম বেতন পাবেন, এমন তথ্যে শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ফলে গত রোববার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে সংশ্লিষ্ট কারখানার শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে আসেন। একপর্যায়ে ইথিক্যাল, ভিনটেক্স, শারমিন গার্মেন্টসে ভাংচুর শুরু হয়। এছাড়া ১২টার দিকে আশুলিয়া থানাধীন চারাবাগে মেট্রো নিটিংয়ের শ্রমিকরাও রাস্তায় নেমে আসেন। এ সময় বিশৃঙ্খলা এড়াতে বাধা দেয় পুলিশ। এতে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে উঠে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেলও নিক্ষেপ করেন।
রোববারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল সকালে আশুলিয়া থানাধীন জেনারেশন নেক্সট, জি ম্যাক্স, এআর জিন্স প্রডিউসার, এফ জিএস ডেনিম, লিলি অ্যাপা., টেক্সটাউন গ্রুপ, এভার ব্রাইট সোয়েটার, পেন্টাফোর্থ অ্যাপা., সাউদার্ন গার্মেন্টস, কন্টিনেন্টাল গার্মেন্টস লি., অ্যালায়েন্স লি., ফ্যাব্রিকস নিট লি., অ্যাক্টিভ নিট লি., গ্রীন লাইফ নিট লি., আজমত গ্রুপ লি., গ্লেয়ার ফ্যাশন লি., মাহমুদ ফ্যাশন লিমিটেডের শ্রমিকরা পর্যায়ক্রমে রাস্তায় নেমে আসেন।
শিল্প অধ্যুষিত গাজীপুর এলাকায়ও গতকাল কিছু কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এমনই এক কারখানা কাশিমপুরের ইসলাম গার্মেন্টস লিমিটেড। বিজিএমইএর সদস্য এ কারখানার শ্রমিক সংখ্যা নয় হাজার। বেলা ১১টার দিকে এ কারখানার শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে দেন।
এদিকে কাশিমপুরের আলিম নিটওয়্যার লিমিটেডের তিন হাজার শ্রমিক কারখানায় এলেও দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ছুটি না হলেও যার যার মতো বাসায় চলে যান। নয়াপাড়ায় অবস্থিত মাল্টি ফ্যাবস লিমিটেডের পাঁচ হাজার শ্রমিকও লাঞ্চের পর কারখানায় এসে কাজ না করে বেলা আড়াইটার দিকে কারখানা থেকে বেরিয়ে যান। ইসলাম গার্মেন্টস লিমিটেডেরও এক হাজার শ্রমিক লাঞ্চের পর কারখানায় এসে কাজ না করে আড়াইটার দিকে কারখানা থেকে বেরিয়ে যান।
গাজীপুরের সাইনবোর্ডে ইস্টওয়েস্ট ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক লিমিটেডের শ্রমিক সংখ্যা সাত হাজার। এ শ্রমিকরা সকালে কারখানায় এলেও কাজ বন্ধ করে বসে থাকেন। এরপর ছুটি ছাড়াই ১১টার দিকে কারখানা ত্যাগ করেন। লাঞ্চের পর সব শ্রমিক কারখানায় এসে ফ্লোরে না গিয়ে কারখানার নিচে অবস্থান করেন এবং অবস্থান ছেড়ে যান বেলা সোয়া ৩টার দিকে।
গাজীপুরের ইন্টারস্টফ ক্লদিং লিমিটেডের শ্রমিক সংখ্যা ১ হাজার ৯০০। সকালে কারখানায় এসে কিছু সেকশনের শ্রমিক কাজ করেন এবং কিছু সেকশনের শ্রমিক কাজ বন্ধ করে বসে থাকেন। পরে কারখানা ছুটির পর যে যার মতো চলে যান।