পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে রপ্তানি মূল্যের ওপর উৎসে কর কর্তনের হার আরো এক দফা কমানো হয়েছে। এবারে বিদ্যমান উৎস কর হার দশমিক ৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে দশমিক ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করে বিশেষ আদেশ জারি করেছে অর্থমন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ।
এর ফলে পাটজাত দ্রব্য ব্যতীত তৈরি পোশাকসহ সকল পণ্য রপ্তানিতে নতুন ওই সুবিধা পাওয়া যাবে। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া সই করা নতুন এ আদেশ ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর ধরা হয়েছে।
গত ২ জানুয়ারি জারি করা নতুন এসআরওতে বলা হয়েছে, ১৯৮৪ সালের আয়কর অধ্যাদেশের ৪৪ ধারার ৪ উপধারা অনুযায়ী ৫ সেপ্টেম্বরের এসআরওটি সংশোধন করা হলো। আগের এসআরওতে উল্লিখিত উৎসে করহার দশমিক ৬ শতাংশের পরিবর্তে নতুন হার দশমিক ২৫ শতাংশ প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ ১০০ টাকার তৈরি পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ৬০ পয়সার পরিবর্তে ২৫ পয়সা করে প্রযোজ্য হবে।
এর আগে ২০১৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর গেজেটের মাধ্যমে প্রথম দফায় উৎসে করহার পরিবর্তন করা হয়েছিল। যেখানে বলা হয়েছে, পাটজাত পণ্য বাদে সকল পণ্যে উৎসে আয়কর কর্তনের হার হ্রাসপূর্বক দশমিক ৬ শতাংশ করা হলো। আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪-এর ধারা ৫৩ বিবি ও ৫৩ বিবিবিবিতে যেসব পণ্যের কথা বলা হয়েছে, সেগুলোয় রপ্তানির ক্ষেত্রে রপ্তানিমূল্যের ওপর ওই আদেশ প্রযোজ্য ছিল।
এ বিষয়ে এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর সিদ্ধান্তের পর মালিক পক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের আবেদনে এই সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এর আগে গত সেপ্টেম্বরে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে দশমিক ৬ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছিল।
সম্প্রতি এ প্রসঙ্গে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া বলেছিলেন, রাজস্ব আহরণ কমার শঙ্কা থাকলেও বাধ্য হয়েই উৎস কর কমিয়েছে এনবিআর। তৈরি পোশাক শিল্পে শ্রমিকদের নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়নের জন্য মালিকরা কর অব্যাহতির প্রস্তাব করেছিলেন। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে উৎস করহার কমানো হয়েছে। এর মাধ্যমে পোশাক খাতে বিদ্যমান অসন্তোষ কেটে যাবে এবং আমাদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়বে বলে বিশ্বাস করি।
গত অর্থবছরে রপ্তানির ক্ষেত্রে রপ্তানিমূল্যের ওপর ১ শতাংশ হারে উৎসে কর কর্তন প্রযোজ্য ছিল। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য পাটজাত দ্রব্য ছাড়া সব পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তনের হার কমিয়ে শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ করা হয়। এ নিয়ে একটি গেজেটও জারি করে এনবিআর। সে গেজেটের মেয়াদ গত জুন মাসে শেষ হয়। পরে ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে এই উৎসে কর হার শূন্য দশমিক ৬০ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।