Home Bangla Recent আগামী বাজেটে পোশাক খাতের সমস্যার সমাধান

আগামী বাজেটে পোশাক খাতের সমস্যার সমাধান

তৈরি পোশাক খাতের বাণিজ্য ও বিনিয়োগে ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদের প্রতিবন্ধকতা, মুদ্রার বিনিময় হারের ক্ষেত্রে প্রতিকূলতা ও সহজ ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে সরকার সচেতন। এসব প্রতিবন্ধকতা দূর করা এবং এ খাতের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে আগামী বাজেটে সুস্পষ্ট প্রতিফলন থাকবে। উদ্যোক্তাদের এভাবেই আশ্বস্ত করেছেন সরকারের একাধিক মন্ত্রী এবং উপদেষ্টা। সরকারের বিভিন্ন মেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়ক শক্তি হিসেবে কর্মসংস্থান এবং রফতানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্পের প্রতি সরকারের যথাযথ মনোযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।

পোশাক তৈরি ও রফতানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএর সদস্যদের মধ্য থেকে দায়িত্ব পাওয়া মন্ত্রী এবং এমপিদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সরকারের পরিকল্পনার কথা জানান তারা। গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সংগঠনের কার্যালয়ে এ সংবর্ধনার আয়োজন করে বিজিএমইএ। গত নির্বাচনে বিজিএমইএর ১৫ জন সদস্য সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে মন্ত্রী আছেন তিনজন। তারা হলেন- বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। এ ছাড়াও রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের শুরুতে পোশাক খাতের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান।

 

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা সত্ত্বেও ব্যাংক ঋণে সুদের হার এক অঙ্কের ঘরে নেমে আসেনি। আবার যে হারই নির্ধারণ হোক না কেন অতিরিক্ত ২ শতাংশ চার্জ দিতে হয় উদ্যোক্তাদের। ঋণের সুদের এই চড়া হার দিয়ে ব্যবসায় এগোনো যাবে না। বিষয়টিকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। এছাড়া দেশকে ব্র্যান্ডিং করা হচ্ছে না বলে একই মানের পণ্য রফতানিতে অন্য প্রতিযোগীদের তুলনায় বাংলাদেশ অন্তত ১০ শতাংশ দর কম পায়। সহজ ব্যবসা পরিচালনায় বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) তৎপরতা সত্ত্বেও সূচকে ১৭৬তম অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়লেও প্রয়োজনীয় মানসম্পন্ন বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। গ্যাসের সংকট সমাধানে উচ্চ পর্যায়ের কমিটিই একটা বড় বাধা, এটা বিলুপ্ত করা প্রয়োজন। শ্রমিকদের মজুরি বাড়ার কারণে পোশাক খাতের চাপ দূর করতে আগামী ২ বছরের জন্য ৫ শতাংশ হারে প্রণোদনা দাবি করেন তিনি।

জবাবে সালমান এফ রহমান বলেন, গত ১০ বছরে দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূলে ছিল বেসরকারি খাত। বেসরকারি খাতের গুরুত্ব বুঝেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে ব্যবসায়ীদের দায়িত্বে এনেছেন। তিনি বলেন, আগামী বাজেটে ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সুস্পষ্ট প্রতিফলন থাকবে। ব্যাংক ঋণে সুদের হার কমানো এবং এক্সিট প্ল্যান নীতি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কথা চলছে। সহজে ব্যবসা পরিচালনা এবং ওয়ানস্টপ সার্ভিসের (ওএসএস) সমস্যা সমাধান হলে পোশাক খাতের ৯০ শতাংশ সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে তাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। এ বিষয়ে কাজ চলছে। খুব দ্রুতই সফলতা দেখা যাবে। তিনি বলেন, পোশাক খাতের বড় সমস্যা মুদ্রার বিনিময় হার। তবে আন্ডার ইনভয়েস এবং ওভার ইনভয়েস বন্ধ করতে হবে উদ্যোক্তাদের।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, পোশাক খাতের সদস্য হিসেবে এ খাতের বেদনা তার জানা আছে। তিনিও বলেন, ১২ থেকে ১৩ শতাংশ সুদের ঋণে ব্যবসা পরিচালনা সম্ভব নয়। ঋণ পরিশোধের সময়সীমাও বাড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন। পোশাক খাতকে কেন্দ্র করে সব ব্যবসা চলছে। তাই এ খাতকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। মন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও পোশাক খাতের পক্ষেই থাকবেন বলে উদ্যোক্তাদের আশ্বস্ত করেন তিনি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আতিকুল ইসলামের পক্ষে ভোট চান তিনি। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী বলেন, দেশের সার্বিক উন্নয়নে বড় অবদান আছে পোশাক খাতের। এ খাতের ব্যবসা পরিচালনায় সরকারের কাছে সব সুবিধা পাওয়ার দাবি রাখেন উদ্যোক্তারা।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন এফবিসিসিআই সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আতিকুল ইসলাম, আনিসুর রহমান সিনহা, সাবেক সভাপতি এবং সংবর্ধিত সাংসদ আব্দুস সালাম মুর্শেদী প্রমুখ। বিজিএমইএর বতর্মান ও সাবেক কমিটির নেতা এবং বিপুল সংখ্যক সাধারণ সদস্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here