Home Bangla Recent পোশাক খাতের জন্য এক্সিট পলিসি চায় বিজিএমইএ

পোশাক খাতের জন্য এক্সিট পলিসি চায় বিজিএমইএ

৫ শতাংশ প্রণোদনা প্রদান ও ভ্যাট মুক্তি দাবি

তৈরি পোশাক খাতে যেসব ব্যবসায়ী দেউলিয়া হয়ে যাবে তারা যেন ব্যবসা গুটিয়ে ফেলার সময় একটা গাইডলাইন পায় তার জন্য ব্যাংকে এক্সিট পলিসি রাখার দাবি জানিয়েছে বিজিএমইএ। এ প্রসঙ্গে সংগঠনের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান অভিযোগ করে আরও বলেন, কোনো কারখানার সমস্যা হয়েছে। আর সে খবর ব্যাংক পেয়েছে। তখন তাকে ব্যাংক সুবিধা দেয়ার পরিবর্তে সুবিধাগুলো কেড়ে নেয়। যে প্রতিষ্ঠান গত ২০ বছর যে ব্যাংককে সাপোর্ট দিয়েছে, বিপদে পড়লে সেই ব্যাংকই ওই প্রতিষ্ঠানকে ভুলে যায়। ব্যাংক বৃষ্টির সময় ছাতা তুলে নেয়। অথচ এ সমস্যায় ছাতা প্রয়োজন। তাই বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের ভাবনায় আনা জরুরি। তিনি রফতানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পে আগামী দুই বছরের জন্য ৫ শতাংশ প্রণোদনা প্রদান এবং ভ্যাটমুক্ত রাখারও দাবি তোলেন। শনিবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসা ও মন্ত্রিসভার বিভিন্ন স্তরে দায়িত্ব পাওয়া পোশাক খাতের উদ্যোক্তাদের সংবর্ধনা দেয় বিজিএমইএ। এ উপলক্ষে বিজিএমইএ ভবনে এক অনুষ্ঠানে সংগঠনের সভাপতি এ দাবি জানান। এবারের সংসদে ১৭ জনের বেশি পোশাক রফতানিকারক সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছেন। বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, আমরা রফতানি আয়ের ৮৩ শতাংশ অবদান রাখছি। কিন্তু এই শিল্প মালিকদের রক্তক্ষরণ হচ্ছে। কিছুদিন হয় পোশাক শিল্প শ্রমিকদের বেতন বাড়ানো হয়েছে। এ খাতটি এখন রক্ষা করতে হবে। বিশ্ব রফতানিতে আমরা দ্বিতীয় হলেও আন্তর্জাতিক মার্কেটের শেয়ারে আমাদের অবদান মাত্র ৬ শতাংশ। এটা ১৫ শতাংশে নিয়ে যেতে হলে খাতটির প্রতীক সরকারকে আরও নজর দিতে হবে। অন্ততপক্ষে আগামী দুই বছর এই খাতটিকে প্রণোদনা দিতে হবে। তবেই অর্র্থনীতির দ্রুত উন্নয়ন হবে।

সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমরা ভ্যাটমুক্ত থাকতে চাই। পৃথিবীর কোনো দেশে রফতানিমুখী শিল্পে ভ্যাট নেই। তিনি বলেন, আমাদের বিভিন্ন সমস্যা আছে, সিঙ্গেল ডিজিটের (১০ শতাংশের নিচে) ঋণ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু এটা এখনও কার্যকর হচ্ছে না। বরং বিভিন্ন চার্জ দিতে গিয়ে ২ শতাংশ বেশি দিতে হয়। দ্রুত ১০ শতাংশের নিচে সুদে যেন ঋণ দেয়া হয় সে পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানাই। তিনি মঞ্চে উপবিষ্টদের ইঙ্গিত করে বলেন, এখানে বাণিজ্যমন্ত্রী আছেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান আছেন আপনারা বিষয়টি দেখবেন। কোয়ালিটি বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না অভিযোগ করে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে কিন্তু সঞ্চালন ও ট্রান্সমিশন উন্নত না হওয়ায় এর সুবিধা আমরা পাচ্ছি না। আমাদের গ্যাস ও বিদ্যুৎ নিরবচ্ছিন্ন দিতে হবে। এটা না হলে উৎপাদন ব্যাহত হবে।

পোশাক ফ্যাক্টরির এলাকার রাস্তার আবকাঠামোগত সমস্যা তুলে ধরে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমি অনুরোধ করব স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম এ বিষয়টি দেখবেন। ইন্ডাস্ট্রি যেন ১২ ফিটের রাস্তায় হয় না, এটা মিনিমাম ২৪ ফিট করা উচিত। কনটেইনার চলাচল করতে মিনিমাম ২৪ ফিট রাস্তা প্রয়োজন।

এফবিসিসিআইর সভাপতি মো. সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন উপস্থিত মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, আগে যেভাবে দেখেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে ট্রেড ও ইনভেস্টকে সেভাবে দেখবেন। এ সেক্টরের সমস্যাকে নিজের মনে করবেন। বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও সংসদ সদস্য আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, এ শিল্প অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। এরপরও গত ১০ বছরে ৩২০ শতাংশ বেতন বাড়িয়েছে। আমার পক্ষ থেকে এ শিল্পের জন্য যেটা বলা প্রয়োজন সেটা আমি সংসদে বলব। সালমান এফ রহমান বলেন, অর্থমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রী, পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী, স্বাস্থ্য, এলজিইডিমন্ত্রী সবাই ব্যবসায়ী। এই সুযোগে আপনাদের (ব্যবসায়ীদের) দাবি না আদায় করতে পারলে এটা আপনাদের ব্যর্থতা। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত উন্নয়নবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, ইজি আব ডুয়িং বিজনেস সূচক (ব্যবসায় উন্নয়ন সূচক) ও ওয়ান স্টপ সার্ভিস নিয়ে আপনি কাজ করেন। আমি এটা নিয়ে কাজ করছি। এ দুটি সমস্যা সমাধান হলে ৮০-৯০ শতাংশ কাজ সমাধান হয়ে যাবে। সংশ্লিষ্ট সরকারি মন্ত্রণালয় আমাদের সহায়তা করছে। দ্রুত এর ফলাফল পাবেন। সালমান এফ রহমান বলেন, ট্যাক্স রেটগুলো কমাতে হবে, যৌক্তিক পর্যায়ে উন্নতি করতে হবে। ট্যাক্স নেট বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী আমাদের বলেছেন, ট্যাক্স রেট মাল্টিপাল হবে ও রেটও কমাবে। এটাই আমরা চাই। ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করতে আমরাও চাই। তবে এটা আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে হওয়া উচিত। মাল্টিপাল রেটে যেন হয়। সালমান এফ রহমান বলেন, গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে সমাজে একটা চিন্তা মাথায় ঢুকে গেছে এ উদ্যোক্তারা অনেক টাকা বানিয়েছে। এই যে কপ্লায়েন্স করতে হয়েছে, বেতন বাড়াতে হচ্ছে, বায়াররা দাম বাড়াচ্ছে না। এটা নিয়ে কেউ কথা বলে না। সালমান এফ রহমান বলেন, ব্যাংকিং সেক্টরে খুব শিগগির এক্সিট পলিসি হচ্ছে। সুদহার কমবে। সব কিছু হবে। তিনি বলেন, আন্ডার ইনভয়েসিং ও ওভার ইনভয়েন্সিং ও বন্ডে লিকেজে সমস্যা রয়েছে। বন্ডের অনলাইন সিস্টেম করা হলে এটা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে এই সমস্যা সমাধান হবে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here