Home Bangla Recent বহুমুখী পাটপণ্যের কারখানা করছে বিজেএমসি

বহুমুখী পাটপণ্যের কারখানা করছে বিজেএমসি

jute goods export to india at high risk: anti-dumping duty

ঢাকার ডেমরায় বহুমুখী পাটপণ্যের কারখানা স্থাপন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি)। বড় পরিসরে পাটের মসৃণ কাপড় তৈরি এবং এ কাপড় দিয়ে গৃহস্থালি ও দাপ্তরিক কাজে ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন পাটপণ্য উৎপাদন করা হবে এ কারখানায়। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা এ কাপড় ব্যবহার করে বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন করে বিদেশে রফতানি করতে পারবেন।

বিজেএমসির এ কারখানা স্থাপনে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি কোষাগার থেকে দেওয়া হবে ১৬৫ কোটি টাকা। বিজেএমসি বিনিয়োগ করবে ১৮ কোটি টাকা। এ বিষয়ে প্রকল্প অনুমোদনের জন্য আজ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হচ্ছে। একনেকে অনুমোদন পেলে চলতি বছর কারখানার বাস্তবায়ন কাজ শুরু করে দুই বছরের মধ্যে উৎপাদনে যেতে চায় বিজেএমসি।

সংশ্নিষ্টরা জানান, পাটপণ্যের রফতানি বৈচিত্র্যকরণ ও বহুমুখীকরণের আলোচনা হচ্ছে দীর্ঘ দিন ধরে। তবে এ ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বড় কোনো উদ্যোগ আসেনি। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগে দেশে পাটপণ্যে বৈচিত্র্যকরণের কিছু কারখানা রয়েছে। বিজেএমসির একটি পাইলট প্রকল্পের আওতায় বহুমুখী পাটপণ্য তৈরি হয়। এ ছাড়া ব্যক্তিমালিকানাধীন কয়েকটি পাটকলে এ ধরনের পণ্য তৈরি হয়ে থাকে।

বিজেএমসির কর্মকর্তারা জানান, পাট থেকে মসৃণ সুতা ও কাপড় তৈরি এবং বিভিন্ন রকম বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন করা সম্ভব। পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বিশ্বব্যাপী  বহুমুখী পাটপণ্যের চাহিদা ও মূল্য বাড়ছে। বহু ধরনের পাটপণ্যের রফতানি সম্ভাবনার পাশাপাশি দেশেও ভালো বাজার রয়েছে।

সংশ্নিষ্টরা জানান, সরকার দীর্ঘদিন ধরে রফতানি পণ্যের বৈচিত্র্যকরণের ওপর জোর দেওয়ার কথা বলে আসছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতের উদ্যোক্তারাও দীর্ঘ দিন ধরে সরকারের এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সুপারিশ করে আসছে। পাট ও পাটপণ্য উৎপাদন ও রফতানির সঙ্গে জড়িতরাও অনেক উৎসাহ নিয়ে পাটপাণ্যের নানা পদক্ষেপ নিচ্ছেন। বহুমুখী পণ্যভিত্তিক রফতানি খাতের সংখ্যা অনেক হতে পারে। যেমন- পাট, চামড়া, তুলা বা প্রাকৃতিক তন্তু, বস্ত্র ও তৈরি পোশাক, কৃষি ও অন্যান্য হস্তশিল্প ইত্যাদি। এসব খাতের অনেক পণ্যই দীর্ঘ দিন ধরে কম-বেশি রফতানি হয়ে আসছে। বৈচিত্র্য এনে এসব পণ্যের রফতানির পরিমাণ বাড়ানো সম্ভব।

প্রস্তাবিত প্রকল্পটির আওতায় বছরে এক হাজার ৮৯০ টন পাটের মসৃণ সুতা, এক হাজার ৮৫০ টন মসৃণ কাপড় এবং বছরে তিন লাখ বিভিন্ন আকারের ও নকশার পাটের ব্যাগ উৎপাদন করা সম্ভব হবে।

প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বিশ্বের বৃহত্তম প্রাকৃতিক তন্তু হলো পাট। বাংলাদেশে প্রচুর পাট উৎপাদনের সুযোগ রয়েছে। পাট মূলত বহুমুখী ও পুনর্ব্যবহার উপযোগী, টেকসই দূষণমুক্ত, পচনশীল, নিরাপদ ও স্বাস্থ্য ঝুঁকিমুক্ত এবং পরিবেশবান্ধব তন্তু। এসব কারণে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাজারে বহুমুখী পাটপণ্যের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। ফলে পাটজাত

পণ্য রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুন্দ্র অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর বন্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় পরিদর্শন কালে বিজেএমসিকে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেন। এরপর এ প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রস্তাব করে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। ঢাকার ডেমরার করিম জুট মিলের অব্যহূত জায়গায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী নীতিগত অনুমোদন দেন ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে।

পরিকল্পনা কমিশন বলছে, প্রকল্পটি দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থানসহ আর্থ সামাজিক উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এছাড়া করিম জুট মিলের খালি জায়গার সদ্ব্যবহার হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে পাটখাতের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তারাও উপকৃত হবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here