তৈরি পোশাকশিল্পের কাজের পরিবেশ উন্নয়নে কর্মরত ক্রেতাদের ইউরোপীয় জোট অ্যাকর্ড ২০১৮ সালে রেকর্ড পরিমাণ অভিযোগ পেয়েছে। এক প্রতিবেদনে অ্যাকর্ড জানায়, গত বছর মোট ৬৬২টি অভিযোগ পায় তারা। এর আগে কোনো এত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। সূত্র-ডিডব্লিউর।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে ১ হাজার ১৫৩ জন শ্রমিক প্রাণ হারায়। আহত হয় অন্তত ২ হাজার ৪৩৮ জন। ভয়াবহ সেই ঘটনা সারা বিশ্বে বাংলাদেশের পোশাক কারখানার সার্বিক পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন তোলে। ২০১৪ সালে তৈরি পোশাকশিল্পের কাজের পরিবেশ উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশে কাজ শুরু করে অ্যাকর্ড। বিশ্বের ২০টির মতো দেশের অন্তত ১ হাজার ৭০০ তৈরি পোশাক কারখানা নিয়ে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে গত বছর বাংলাদেশের এক তৈরি পোশাক কারখানা অ্যাকর্ডের বিরুদ্ধে মামলা করে। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এক রায়ে বাংলাদেশে অ্যাকর্ডের কাজ বন্ধ করার রায় দেয় হাইকোর্ট। আগামী ৭ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টে আপিলের শুনানি হওয়ার কথা।
তবে বাংলাদেশে অ্যাকর্ডের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়লেও পোশাক কারখানায় কাজের সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ এখনো অনেকাংশেই নিশ্চিত নয়। বরং সম্প্রতি অ্যাকর্ড যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তার বিবরণ অনুযায়ী শ্রমিকদের অভিযোগের হার বেড়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সালে কাজ শুরু করার পর থেকে এ পর্যন্ত মোট ১ হাজার ১৫২টি অভিযোগ জমা পড়েছে তাদের কাছে। তার মধ্যে গত বছরই এসেছে ৬৬২টি। প্রতিবেদনে আরো জানানো হয়, আগের কোনো বছরে এত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
প্রতিবেদনে আরো দাবি করা হয়, ২০১৪ সাল থেকে পাওয়া মোট অভিযোগের এক-তৃতীয়াংশের নিষ্পত্তি করা অ্যাকর্ডের পক্ষে সম্ভব হয়েছে। তাদের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করা পোশাক কারখানাগুলোর মধ্যে ১০০টি কারখানাকে অনুপযুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তৈরি পোশাক ক্রেতাদের এই জোট মনে করে, বাংলাদেশের পোশাক কারখানাগুলোতে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে তাদের অন্তত ২০২১ সাল পর্যন্ত কাজ করা দরকার।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সেন্টার ফর ওয়ার্কার্স সলিডারিটির নির্বাহী পরিচালক কল্পনা আক্তার বলেন, এটি (অ্যাকর্ড) খুব শক্ত একটা প্ল্যাটফর্ম। আমি যতদূর দেখেছি অ্যাকর্ডের মাধ্যমে কোনো অভিযোগের নিষ্পত্তি হলে পোশাক কারখানায় তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে।