রানা প্লাজার দুর্ঘটনার পর দেশের ৮০ শতাংশ পোশাক কারখানার চাকরিতে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। উৎপাদন ৪ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। গার্মেন্টসের নারী শ্রমিকরা যে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারেন, সেটির প্রমাণ এর মাধ্যমে তারা রেখেছেন।
সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘৪র্থ শিল্প বিপ্লব : বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক সেমিনারে মূল প্রবন্ধে এসব তথ্য জানান বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ।
তিনি বলেন, ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে কর্মের ধরণ বদলে যাবে। সেই সঙ্গে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে যার জন্য নতুন কর্মদক্ষতার প্রয়োজন হবে।
এ সময় ভবিষ্যতের চাহিদার দিকে খেয়াল রেখে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সাথে আলোচনা করে ৪র্থ শিল্প বিপ্লব সংক্রান্ত পলিসি প্রণয়ন নিয়ে শিল্প মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্প সচিব মো. আবদুল হালিম এ কথা জানান।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিক্যাল ও কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক ড. মো. রোকনুজ্জামান বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের গার্মেন্টস খাতের প্রায় ৬০ শতাংশ চাকরি অটোমেশন হবার সম্ভাবনা রয়েছে। নতুন এই পরিস্থতি মোকাবিলায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের দক্ষতা অর্জন করতে হবে। এজন্য গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য উপযুক্ত সময় ও পরিবেশে প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।
বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বেগম বলেন, ৪র্থ শিল্পযুগে সাইবার নিরাপত্তা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। তাই সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ গড়ে তোলা অতীব জরুরি। ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টি করতে সকল বিজনেস স্কুল, ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে এই শিল্প বিপ্লবের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কোর্স ও পাঠক্রম শুরু করতে হবে। শিল্প প্রতিষ্ঠান ও উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঝে সংযোগ ও সহযোগিতা বাড়াতে হবে।
বক্তারা বলেন, ৪র্থ শিল্প বিপ্লব উৎপাদনশীলতার এক অবিস্মরণীয় দ্বার উন্মোচন করবে। এই শিল্প বিপ্লবের সম্ভাবনার পূর্ণ সঠিক ব্যবহার করা সম্ভব হলে মানবসম্পদ ও যন্ত্রের দক্ষতার মাঝে একটি সাম্যাবস্থা অর্জিত হবে যাতে মানুষের উৎপাদনশীলতা বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে। এজন্য নতুন যুগের চাহিদা অনুযায়ী এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।