তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ-এর নতুন কমিটির প্রধান ও প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের সহধর্মিণী রুবানা হক বলেছেন, দেশের পোশাক খাতের উন্নয়নে ৬টি ইস্যুতে সবচেয়ে বেশি অগ্রধিকার দেবেন তিনি। এগুলো হলো- আন্তর্জাতিক বাজারে ভাবমূর্তি কাটিয়ে উঠা, পণ্যের দাম বাড়াতে দরকষাকষি, কারখানা পূর্ণসংস্কার শতভাগ করা। পোশাক খাতের টেকসই উন্নয়ন, প্রযুক্তি নির্ভর বাড়িয়ে দেয়া ও মালিক-শ্রমিক একসঙ্গে কাজ করা। বিজিএমইএ নির্বাচন শেষে তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়া তিনি এসব কথা বলেন। রুবানা হক বলেন, দেশের পোশাক খাত নিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে যে ইমেজ সংকট রয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে হবে। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করব সেটা কাটিয়ে উঠতে। আশা করি আমরা তা পারব। তিনি বলেন, অনেকেই মনে করেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে সস্তায় পোশাক পাওয়া যায়।
এই সস্তা কোনোভাবেই ভালো না বলে আমি ও আমার পরিষদ মনে করে। আমাদের কারখানা মালিকদের মাঝে প্রতিযোগিতা আছে। সেটা থাকা ভালো। তবে সস্তায় যেন আমরা পোশাক তৈরি না করি। সেই জায়গায় আমাদের পোশাক মালিকদের একমতে পৌঁছাতে হবে। যদিও আমরা সম্মিলিতভাবে দরকষাকষির জায়গায় পৌঁছতে পারিনি। সবাই এ বিষয়ে একমত হতে পারিনি। সময় এসেছে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে একটা উদ্যোগ নেয়ার। কারখানা ভবন সংস্কার নিয়ে রুবানা হক বলেন, অনেকেই জানেন শেয়ার বিল্ডিং মোটেও অ্যালাউড নয়। অথচ বহু চার লাইন, ছয় লাইন কারখানার শেয়ার বিল্ডিং রয়েছে। এখন আমাদের উচিত হবে, অন্তত পক্ষে এসব কারখানা যেন ফায়ার ও ইলেক্ট্রিক সেফটিটা নিশ্চিত করা যায়। গার্মেন্ট সেক্টরে স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করতে পারলে ও গণমাধ্যম আমাদের সঙ্গে কাজ করলে এ খাতে হারানো ইমেজ অবশ্যই ফিরে আসবে।
রুবানা বলেন, আমাদের কাছে বেশ ভালো মানের ফ্যাক্টরি রয়েছে। আমরা মনে করি সেলফ মনিটরিংয়ের এখনই সময়। আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি খাত পোশাক। দেশেও সবচেয়ে বেশি মানুষ এ খাতের সঙ্গে জড়িত। আমরাই মূলত দেশে অর্থনীতির চালিকা হিসেবে কাজ করছি। আমাদের বেশকিছু দায়িত্ব রয়েছে। আমাদের কাছে স্বচ্ছতাও থাকবে। প্রতিশ্রুতি দিতে চাই, আমাদের প্যানেলের কাজের প্রতি নিষ্ঠার একটুও অভাববোধ থাকবে না। তার মতে, দায়বদ্ধতার কথা যদি বলি, আমার পুরো পরিষদ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করব। আমার প্রয়াত স্বামী আনিসুল হক দুই বছরে দেখিয়ে গেছেন সবাইকে, কীভাবে পরিবর্তন আনতে হয়। তার মানে বদলানো সম্ভব। আমরাও সেটা পারব। এজন্য আমাদের দায়বদ্ধতার কোনো প্রকার ত্রুটি দেখবেন না। তারপরও কোন ত্রুটি বিচ্যুতি থাকলে সেটা ধরিয়ে দেয়ার আহ্বান থাকল। অ্যাকর্ড এলায়েন্স নিয়ে তিনি বলেন, তারা অনেক করেছেন আমাদের জন্য। এজন্য আমরা খুবই কৃতজ্ঞ। কিন্তু এমন একটি সময়ে আমরা দাঁড়িয়েছি যেখানে সব গার্মেন্ট পূর্ণসংস্কার হয়েছে। এখন এসব কারখানার সংস্কার কীভাবে টেকসই করা যায়, সেগুলো দেখতে হবে। আমরা মোটামুটিভাবে দরকষাকষি করতে শিখেছি, একটা গৌরবের জায়গায় দাঁড়াতে শিখেছি। আমরা যদি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকি, সবাই একসঙ্গে কাজ করি তাহলে ঘুরে দাঁড়াবেই এ শিল্প। যত চ্যালেঞ্জই আসুক না কেন? কারণ চ্যালেঞ্জও আছে ঠিক একইভাবে সম্ভাবনাও আছে। সবাই যদি একসঙ্গে কাজ করি, আমরা দুই বছরে বহু কিছু পাল্টে দিতে পারব। উল্লেখ্য, শনিবার বিজিএমইএ‘র নির্বাচনে দুই বছর মেয়াদের (২০১৯-২১) রুবানা হকের সম্মিলিত পরিষদ-ফোরাম প্যানেল নিরুঙ্কুশ জয় লাভ করে।