রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোকে গত ১০ বছরে ৭ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, পাটকলে আর কত দিন অর্থায়ন করব। ভর্তুকি দেওয়া হলেও কারখানা বন্ধ থাকে। আমার বিশ্বাস, প্রধানমন্ত্রী এটার কোনো না কোনো সমাধান বের করতে পারবেন। গতকাল সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ সভা কক্ষে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন। বকেয়া বেতনের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে পাটকল শ্রমিকরা আন্দোলন করছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের করণীয় বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী এখন দেশেই রয়েছেন। আমি তাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছি। আমার বিশ্বাস, প্রধানমন্ত্রী এটার কোনো না কোনো সমাধান বের করতে পারবেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি যেহেতু সরাসরি এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নেই। তাই এ বিষয়ে আমার কথা বলা ঠিক হবে না। কারণ ওই মন্ত্রণালয়ে দুজন মন্ত্রী রয়েছেন। তারা হয়তো শ্রমিকদের কোনো না কোনো কমিটমেন্ট দিয়েছেন। কিন্তু আমি এ বিষয়ে কোনো কমিটমেন্ট করতে পারব না। উল্লেখ্য, গত কয়েক দিন ধরে বকেয়া বেতন-ভাতাসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করছেন রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকরা।
ক্রয় কমিটিতে ৬ প্রস্তাব অনুমোদন
গতকাল অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে মোট ৬টি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ২৩০২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। বৈঠক শেষে অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাবের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) এর বাস্তবায়নাধীন ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডে উত্পাদন পদ্ধতি ওয়েট প্রসেস থেকে ড্রাই প্রসেসে রূপান্তরকরণ (সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সিমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৬৬৯ কোটি ৩১ লাখ টাকা। বৈঠকে সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিটের (সিপিটিইউ) মতামতের আলোকে ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য ২০০টি এমজি যাত্রীবাহী কোচ সংগ্রহ’ শীর্ষক ক্রয় প্রস্তাবের দরদাতার নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পটিতে ব্যয় হবে ৮৩২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। অর্থমন্ত্রী জানান, কাঁচপুর, মেঘনা, গোমতি সেকেন্ড ব্রিজেস কন্সট্রাকশন অ্যান্ড এক্সিসটিং ব্রিজেস রিহ্যাবিলাইশন প্রজেক্ট’ শীর্ষক প্রকল্পের ভেরিয়েশন-২ প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ বিদ্যুত্ উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন ভোলা ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুত্ কেন্দ্রে অর্থমন্ত্রী জানান, কনসোর্টিয়াম অব আনলিমা টেক্সটাইল লিমিটেড অ্যান্ড জিই ক্যাপিটাল গ্লোবাল এনার্জি ইনভেস্টমেন্ট বিভির নারায়ণগঞ্জ জেলার মেঘনা ঘাটে ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুত্ কেন্দ্র উত্পাদন কেন্দ্রটি গড়ে উঠবে। উদ্যোক্তা সংস্থা ২২ বছরের জন্য এটি স্থাপন করবে। এই বিদ্যুত্ কেন্দ্র নির্মাণে ২২ বছরের জন্য গ্যাসের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়ে প্রস্তাব করেছিল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। অর্থমন্ত্রী জানান, এটা এভাবে দেওয়া যাবে না। প্রতি পাঁচ বছর অন্তর চুক্তি রিভিউ করা হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুত্ কেন্দ্র স্থাপনে পাঁচবছর পর পর গ্যাসের মূল্য রিভিউ করতে হবে। নতুন সব বিদ্যুত্ কেন্দ্রের জন্যই গ্যাসের মূল্য আন্তর্জাতিক বাজার অনুযায়ী রিভিউ করার জন্য বলা হয়েছে।