পোশাক শ্রমিকদের রেশন ও আবাসনের জন্য বাজেটে বরাদ্দের দাবি জানিয়েছে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র।
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ দাবি জানায় সংগঠনটি। ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট প্রত্যাখ্যান করে আয়োজিত এ বিক্ষোভ সমাবেশে প্রস্তাবিত বাজেটকে শ্রমিকবিরোধী ও গণবিরোধী বলে আখ্যায়িত করা হয়।
সংগঠনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মন্টু ঘোষের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেনের পরিচালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার, কার্যকরী সভাপতি কাজী রুহুল আমীন, কেন্দ্রীয় নেতা দুলাল সাহা, এম এ শাহীন, মঞ্জুর মঈন, জয়নাল আবেদীন, ইমদাদুল ইসলাম, মাসুদ রানা, রুজিনা আক্তার প্রমুখ।
মন্টু ঘোষ বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট চরিত্রগতভাবে ধনিক তোষণের বাজেট। এই বাজেটে ধনিক শ্রেণির জন্য বহু প্রণোদনা ও পুরস্কারের ঘোষণা থাকলেও শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের জন্য ন্যূনতম সান্ত্বনাটুকুও নেই।
তিনি বলেন, শ্রমিকদের রেশন ও বাসস্থানের জন্য বরাদ্দের দাবি অনেক পুরাতন। এই দাবির পক্ষে এবারও সর্বত্র আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু সরকারের কাছে শ্রমিক-কৃষক-ক্ষেতমজুর ও মেহনতি মানুষের জন্য কোনো স্থান নেই।
জলি তালুকদার বলেন, অন্যরা ৩৫ শতাংশ হারে করপোরেট ট্যাক্স দিলেও গার্মেন্ট মালিকরা দেন ১২ শতাংশ। এ বছর এই কর অবকাশ সুবিধার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। বাজেটে সেটা অব্যাহত রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার ইতোমধ্যে গত ৬ মাসে নির্বাচনের আগে একবার, নির্বাচনের পরে দুইবার মালিকদের আর্থিক প্রণোদনা দিয়েছে। চার ধরনের রপ্তানিতে ১ কোটি টাকা রপ্তানি করে মালিকরা ৪ লাখ টাকা নগদ পুরস্কার পান। এবার বাজেটের প্রস্তাবে সকল ধরনের পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রেই মালিকরা ১ কোটি টাকা রপ্তানি করে সরকারের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা করে পুরস্কার পাবেন। এতসব পেয়ে মালিকরা খুশিতে প্রস্তাবিত বাজেটকে জনকল্যাণমুখী বলে ঘোষণা করেছেন।
তিনি আরো বলেন, বাস্তবে মালিকরা জনগণের ১ শতাংশও নন। প্রস্তাবিত বাজেটে শ্রমিকের জন্য কোনো বরাদ্দ নেই। বাজেটে শ্রমিক-কৃষক-ক্ষেতমজুরদের বিষয়ে যথাযথ কোনো উল্লেখ নেই। এই বাজেট জনগণের কল্যাণের বাজেট কী করে হয়?
জলি তালুকদার বলেন, গেল অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট দেখলে বোঝা যায়, সরকার বাজেটকে বিজ্ঞাপনে পরিণত করেছে এবং দেশে বেলুন অর্থনীতি চালু করেছে।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, মিথ্যা করে হলেও শ্রমিকদের জন্য কোনো আশ্বাস বাজেটে নেই। ব্যাংক ডাকাত ও ঋণখেলাপিদের মাফ করে দিতে দেশের শ্রমিক মেহনতি মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ ব্যয় হবে। আর শ্রমিকরা রেশন, চিকিৎসা ও বাসস্থানের জন্য বরাদ্দ চেয়ে হয়রান হবে, এই অবস্থা চলতে দেওয়া যায় না।
তিনি সরকারের গণবিরোধী ও শ্রমিকবিরোধী পদক্ষেপ রুখে দিতে শ্রমিক-কৃষক-মেহনতি জনতার ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বান জানান।