বাজেটে ব্র্যান্ড পোশাকে ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে। এ ছাড়া ট্রেড লাইসেন্স কর ছয় গুণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে ব্র্যান্ডের পোশাকে কী প্রভাব পড়বে তা নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলাদেশ ফ্যাশন উদ্যোক্তা সমিতির (এফইএবি) সভাপতি শাহীন আহম্মেদ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শুভংকর কর্মকার
প্রথম আলো: প্রস্তাবিত বাজেটে ব্র্যান্ডের পোশাকের ওপর ভ্যাটের হার বৃদ্ধি করে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে। এতে কি প্রভাব পড়বে?
শাহীন আহম্মেদ: অনেক কষ্ট করে আমরা ভোক্তাদের ভ্যাট প্রদানে অভ্যস্ত করিয়েছি। তারপরও বর্তমানে পোশাকে ৫ শতাংশ ভ্যাট আদায়ে আমাদের অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। নতুন করে ভ্যাটের হার বাড়ানো হলে কাপড়ের দাম বাড়বে। ভোক্তারা চাপে পড়বেন। তাতে বিক্রি কমে যাবে। সেটি হলে ছোট-মাঝারি উদ্যোক্তারা সমস্যায় পড়ে যাবেন। পর্যাপ্ত বিক্রি না হলে পুরো ব্যয় মিটিয়ে তাঁরা ব্যবসায় টিকে থাকতে পারবেন না। নানামুখী চ্যালেঞ্জের কারণে ইতিমধ্যে অনেকেই ব্যবসা গোটাতে বাধ্য হয়েছেন। সে জন্যই আমরা বাজেটের আগে ভ্যাটের হার বর্তমানের চেয়ে কমানো কিংবা ৫ শতাংশে রাখার দাবি করেছিলাম। কিন্তু উল্টো ভ্যাটের হার বৃদ্ধি করা হয়েছে।
প্রথম আলো: দেশীয় ফ্যাশন হাউসের জন্য গ্রামের নারী ও তাঁতিরা কাজ করেন। ভ্যাটের হার বাড়ানোর ফলে তাঁরা কি কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন?
শাহীন আহম্মেদ: দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো গ্রামের তাঁতি ও ছোট ছোট বস্ত্রকলের তৈরি কাপড় ব্যবহার করে পোশাক তৈরি করে। এসব পোশাকের সুই সুতার কাজ করেন গ্রামের নারীরা। তাঁরা দিনের অর্ধেক সময় সংসার সামলান আর বাকি সময়টা সুই সুতার কাজ করে উপার্জন করেন। তাই ভ্যাটের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় বিক্রয়কেন্দ্রের বিক্রি কমে গেলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সে জন্য দেশীয় ব্র্যান্ডশপ ও ফ্যাশন হাউসের ভ্যাটের হার কমানো দরকার।
প্রথম আলো: বাজেটে ট্রেড লাইসেন্স নবায়নে কর ছয় গুণ পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে কি ব্যবসার খরচ বাড়বে?
শাহীন আহম্মেদ: অবশ্যই খরচ বাড়বে। এমনিতেই দোকান ভাড়া অনিয়ন্ত্রিত। সেই ভাড়ার ওপর আবার ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। তাই ট্রেড লাইসেন্স নবায়নে কর ছয় গুণ পর্যন্ত বাড়ানো হলে ব্যবসার খরচ বাড়বে। ব্যবসায়ীরা সেই বাড়তি খরচ অবশ্যই পণ্যের ওপর যোগ করে দেবেন। তাতে ভোক্তার ওপরই খরচ বাড়বে। সেটি হলে ভোক্তারা কাপড় কেনা কমিয়ে দিতে পারেন। তাই ট্রেড লাইসেন্স নবায়নে বাড়তি কর প্রত্যাহারের পাশাপাশি ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ রাখার সুপারিশ করছি।