দেশের তৈরি পোশাক খাতের সবচেয়ে বড় বাজার ইউরোপ এবং আমেরিকা। তবে গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিশ্বের উদীয়মান নতুন বাজারে পোশাক রপ্তানিতে বড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ সময়ে ইউরোপ ও আমেরিকার চাইতে এসব দেশে তুলনামূলক বেশি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য মতে, গত অর্থবছরে বিশ্বের এসব নতুন বাজারে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৫৬৮ কোটি ৭১ লাখ মার্কিন ডলার। এর আগের অর্থবছরে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৪৬৭ কোটি ডলারের। ফলে রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ২২ শতাংশ বা ১০২ কোটি ডলারের। স্থানীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি। ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশের গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি বেড়েছে সাড়ে ১১ শতাংশ। এসব বিবেচনায় নতুন বাজারে রপ্তানি আশাব্যঞ্জক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশেষত নতুন বাজারে রপ্তানি বাড়াতে সরকারের দেয়া প্রণোদনা এবং কিছু বাজারে শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা রপ্তানি বাড়াতে ভুমিকা রেখেছে বলে মনে করছেন তারা। সংশ্লিষ্টদের মতে, বিশ্বের এসব নতুন বাজারে রপ্তানি বাড়াতে সরকার নগদ সহায়তা দেয়ার উদ্যোগ নেয়ায় এসব বাজারে রপ্তানি বাড়ছে। এর মধ্যে কোনো কোনো বাজারে রপ্তানি ১ বিলিয়ন ডলারও ছাড়িয়েছে। ভবিষ্যতে আরো কিছু বাজারে গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি বিলিয়ন ডলার ছাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশের গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি মূলত ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকানির্ভর। রপ্তানির ৮২ শতাংশই যায় এ দুটি বাজারে। তবে কোনো কারণে এসব বাজারে রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা রপ্তানি তথা দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এমন চিন্তা থেকে সরকার এ দুটি বাজারের বাইরে নতুন ও অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেয়। এর অংশ হিসেবে এসব বাজারে রপ্তানির ওপর নগদ সহায়তা দিতে শুরু করে। বর্তমানে নতুন বাজারে রপ্তানির ক্ষেত্রে ৪ শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়া হয়। বিশ্বের এসব নতুন বাজারের তালিকায় রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, চীন, জাপান, ভারত, চিলি, দক্ষিণ কোরিয়া, মেক্সিকো, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, তুরস্কসহ আরো কয়েকটি দেশ। নতুন বাজারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি হয়েছে জাপানে। গত অর্থবছরে দেশটিতে ২৯ শতাংশ বেড়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ১০৯ কোটি ডলারের। অন্যদিকে প্রতিবেশী দেশ ভারতে রপ্তানি বেড়েছে সবচেয়ে বেশি হারে, ৭৯ শতাংশ। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ায় ৭২ কোটি ডলার, প্রবৃদ্ধি সাড়ে ১৩ শতাংশ; চীনে ৫১ কোটি ডলার, প্রবৃদ্ধি ২৯ শতাংশ, ভারতে ৫০ কোটি ডলার; কোরিয়ায় ২৮ কোটি ডলার, প্রবৃদ্ধি ৪৫ শতাংশ; ব্রাজিলে ১৬ কোটি ডলার, প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। অন্যদিকে তুরস্কে রপ্তানি না বেড়ে উল্টো ২৭ শতাংশ কমে গেছে।