ইউরোপ, আমেরিকা ও কানাডায় তৈরি পোশাক রফতানি করলে এক শতাংশ প্রণোদনা দেয়া হবে। এর জন্য অতিরিক্ত ২৮শ’ কোটি টাকা প্রয়োজন হবে। যা ইতিমধ্যে বাজেটে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। আর ১৫শ’ মার্কিন ডলার পর্যন্ত রেমিটেন্স পাঠালে প্রশ্ন ছাড়াই প্রণোদনা পাবেন প্রবাসীরা।
এর বেশি হলে কাগজপত্র দাখিলসাপেক্ষে তা দেয়া হবে। সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে নগদ প্রণোদনা সংক্রান্ত বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন অর্থ সচিব আবদুর রউফ তালুকদার। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
তৈরি পোশাকে নতুন প্রণোদনা সম্পর্কে সচিব বলেন, গার্মেন্ট সেক্টরে চার ধরনের প্রণোদনা দেয়া হয়ে থাকে। এটি যথাক্রমে- চার, চার এবং দুই দুই শতাংশ। যারা ইউরোপ, আমেরিকা ও কানাডায় রফতানি করে তারা এ সুবিধা পায় না। বাজেট বক্তৃতায় ঘোষণা অনুযায়ী, যারা তৈরি পোশাক রফতানিতে কোনো সুবিধা পায় না, তাদের ১ শতাংশ সুবিধা দেয়া হবে। অর্থাৎ ইউরোপ, আমেরিকায় তৈরি পোশাক রফতানি করলে এখন থেকে ১ শতাংশ নগদ সহায়তা দেয়া হবে।
অর্থ সচিব বলেন, রফতানি প্রণোদনা প্রতিবছরই কিছু না কিছু পরিবর্তন হয়। সে আলোকেই আজ (সোমবার) বৈঠক হয়েছে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রণোদনার তালিকায় আরও ১৩টি পণ্য যোগ হয়েছে।
রেমিটেন্সে প্রণোদনা সম্পর্কে সচিব বলেন, রেমিটেন্স পাঠালে ২ শতাংশ নগদ সুবিধা দেয়া হবে। এটি আজ (সোমবার) অনুমোদন হয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করা হয়েছে। কীভাবে এ সুবিধা দেয়া হবে, তা জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি সপ্তাহেই সার্কুলার জারি করবে। রেমিটেন্স পাঠানোর সুনির্দিষ্ট কোনো সীমা বেঁধে দেয়া হয়নি।
অর্থ সচিব আরও বলেন, যেসব যন্ত্রপাতি ওষুধ খাত সংশ্লিষ্ট কিন্তু ধরা হয়নি এমন পণ্যকে ওষুধ খাতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ মেডিকেল ও অপারেশনের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ওষুধ খাতের মতোই ১০ শতাংশ প্রণোদনা পাবে। গরু-মহিষের নাড়ি-ভুঁড়ি, শিং, হাড় দিয়ে তৈরি পণ্য রফতানিতে নগদ সহায়তা দেয়া হবে। তবে এগুলো বিদেশ যাওয়ার আগে শতভাগ ভেরিফিকেশন করা হবে। সব ঠিক থাকলে ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা দেয়া হবে।
এ ছাড়া ওয়ালটন বিভিন্ন গৃহস্থালি পণ্য (হোম অ্যাপ্লায়েন্স) বিদেশে রফতানি করে। এটিকে উৎসাহিত করতে শতভাগ যাচাইসাপেক্ষে ১০ শতাংশ প্রণোদনা দেয়া হবে। কারণ, অতীত অভিজ্ঞতা বলে, শতভাগ যাচাই ছাড়াই শুধু কাগজ দেখিয়ে অনেকে নগদ প্রণোদনার টাকা নিয়ে যায়। তাই এবার আর সে অবস্থা রাখা হচ্ছে না। যাচাইয়ের কাজটি করবে কাস্টমস।
পাটকাঠি থেকে উৎপাদিত পণ্য রফতানি প্রণোদনা পায়। এবার তার সঙ্গে যোগ হচ্ছে পার্টিক্যাল বোর্ড। এ ছাড়া সুপারি গাছের পাতার খোল দিয়ে তৈরি বিভিন্ন পণ্য, গার্মেন্টের ঝুট কাপড় দিয়ে তৈরি পণ্য সহায়তা পাবে। বাংলাদেশি মালিকানাধীন অ্যাগ্রোপ্রসেসিং পাবে চার শতাংশ নগদ সহায়তা। সফটওয়্যার রফতানি, হাইটেক পার্কে যারা আছেন তারাও ‘সি-ক্যাটাগরিতে’ ৪ শতাংশ নগদ সহায়তা পাবে।
ইপিজেড, সিনথেটিক পণ্য, প্যাটফ্ল্যাক্সও এসেছে নগদ সহায়তার অধীন। কাঁকড়া-কুঁচিয়া আগেই রফতানি হতো। কিন্তু কুঁচিয়ার ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদফতর থেকে ছাড়পত্র নেয়ার নিয়ম ছিল। এটি একটু শিথিল করে মৎস্য অধিদফতর থেকে সার্টিফিকেট নেয়ার কথা বলা হয়েছে।