পোশাক শিল্প প্রতিযোগিতায় সক্ষমতা হারাতে বিশ্ববাজারে ভিয়েতনামের কাছে নিজেদের অবস্থান হারিয়ে বারবার হোঁচট খাচ্ছে বাংলাদেশ। এ প্রেক্ষাপটে শিল্প মালিকরা যেমন নিজেদের অদূরদর্শী বাণিজ্য কৌশলকে দায়ী করছেন তেমনি দায়ী করছেন সরকারি আমলা-কর্তাদের দক্ষতার অভাবকে।
পোশাক শিল্প খাত ৪৪ লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থান আর রপ্তানি আয়ের ৮৪ শতাংশ যোগান দেয়। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পরিবেশবান্ধব ও সবুজ কারখানাও রয়েছে এদেশে। তবে নানা দুঃসময় পার করে আসা এ খাতের উদ্যোক্তাদের। অবস্থার উত্তরণে বিদ্যমান প্রণোদনা ঢেলে সাজানোর পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের। গত বছর বিশ্ব বাজারের ৬ দশমিক ৪ শতাংশ বাংলাদেশের আর ৬ দশমিক ২ শতাংশ দখলে ছিল ভিয়েতনামের।
ইপিবি ও ভিয়েতনামের সরকারি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, প্রথম ১০ মাসে বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানি করেছে সাড়ে ২৭ বিলিয়নের বেশি। একই সময়ে ভিয়েতনামের রপ্তানি আয় ২৭ বিলিয়ন ডলার। এ পরিসংখ্যান স্বস্তি দিলেও ভিয়েতনামের প্রায় ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির বিপরীতে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি মাত্র ১ দশমিক ৭ শতাংশ।
শিল্প মালিকরা বলছেন, কাঁচামাল উৎপাদনসহ নানা পর্যায়ে সরকারি উদ্যোগ না বাড়ালে দ্রুত ভিয়েতনামের চেয়ে পিছিয়ে পড়বে বাংলাদেশ। টিম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল্লাহ হিল রাকিব বলেন, এ ইন্ডাস্ট্রিটাকে এখন সাপোর্ট দিতে হবে। এটার এখন একটা আইসিইউ পিরিয়ড। সরকার সহায়তা দিলে আমরা প্রচুর ব্যবসা করতে পারব। ভিয়েতনামের বাংলাদেশকে ছাড়িয়ে যাওয়ার ব্যাপারে একটা দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছে। ট্রেন্ডের কথা বললে আমরা কিছুটা পিছিয়ে আছি। তবে কোনোভাবেই তৃতীয় স্থানে নয়। পথচলার তিন দশক পরও পোশাক উৎপাদনে তেমন কোনো বৈচিত্র্যময়তা না থাকাকে এ খাতের বড় দুর্বলতা হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিবিদরা। বিশ্লেষকদের মতে, দেশের তৈরি পোশাক খাতকে বাজারমুখী কৌশল নিয়ে এখনই ঘুরে দাঁড়াতে হবে না হলে আরও কঠিন সময়ের মুখে পড়তে হবে। এর মধ্যে উন্নয়নশীল দেশ হলে পোশাকের সবচেয়ে বড় আমদানিকারক ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে বিদ্যমান বাজার সুবিধা জিএসপি হারাবে বাংলাদেশ যা নতুন করে বিশাল চ্যালেঞ্জের মুখে ফলবে এ খাতের উদ্যোক্তাদের। এ ব্যাপারে এখন থেকেই শক্তিশালী পদক্ষেপ নিতে হবে।