Home Apparel ডিজিটাল মানচিত্রের আওতায় আসছে চট্টগ্রামের পোশাক কারখানা

ডিজিটাল মানচিত্রের আওতায় আসছে চট্টগ্রামের পোশাক কারখানা

ঢাকা ও গাজীপুরের পর চট্টগ্রামের পোশাক কারখানার তথ্য যুক্ত হচ্ছে ‘ম্যাপড ইন বাংলাদেশ’ নামের ডিজিটাল মানচিত্রে। এ মানচিত্রের সাহায্যে দেশের শতভাগ রফতানিমুখী পোশাক কারখানার যাবতীয় খুঁটিনাটি তথ্য পাওয়া যাবে। সিঅ্যান্ডএ ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে ‘সেন্টার ফর এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ ডেভেলপমেন্ট’ ও ‘ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। এ প্রকল্পের অধীনে চট্টগ্রামের তৈরি পোশাক শিল্পের কারখানাগুলো থেকে প্রাথমিকভাবে তথ্য সংগ্রহ শুরু করা হয়েছে। তবে এ মানচিত্রে কোম্পানির কিছু তথ্য প্রকাশ শিথিলের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন কারখানার মালিকেরা। বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) ও বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) তথ্যমতে, ২০১৭ সালে কাজ শুরু করার পর ঢাকা জেলার তৈরি পোশাক শিল্পের কারখানাগুলোর প্রকাশিত তথ্য নিয়ে এ ডিজিটাল মানচিত্র ২০১৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এতে এখন পর্যন্ত ঢাকা ও গাজীপুরের ১ হাজার ৮৬৭টি কারখানাকে যুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা ১ হাজার ৮৩০। বাকি ৩০টি সাব-কন্ট্রাক্ট নিয়ে কাজ করছে। তালিকাভুক্ত এসব কারখানায় ১৮ লাখ ৪৬ হাজার ৩১৪ জন শ্রমিক কর্মরত আছেন। চট্টগ্রামের কোনো কারখানা এ প্রকল্পের তালিকায় সংযুক্ত না থাকায় গত ২৬ অক্টোবর এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। তথ্যমতে, এ প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রামে বর্তমানে চালু থাকা বিজিএমইএর প্রায় ৩২৮টি ও বিকেএমইএর প্রায় ১২০টি পোশাক কারখানা ডিজিটাল মানচিত্রের আওতায় আসছে। তবে বন্ধ থাকা কারখানা এ তালিকাভুক্ত হবে কিনা এমন তথ্য কেউ জানাতে পারেননি। প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানান, এ প্লাটফর্মে দেশে বা বিদেশে যেকোনো জায়গায় বসে কারখানার নাম, ভৌগোলিক অবস্থান, কারখানার শ্রমিকের সংখ্যা, কী ধরনের পণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে, কোন কোন দেশের অর্ডার আসছে, কোন দেশে বাংলাদেশের ওই কারখানার পণ্য রফতানি হচ্ছে, কারখানার পরিবেশগত ছাড়পত্রের সনদ, বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদিত কিনা, বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক ছাড়পত্র আছে কিনা কিংবা কারখানার দেশী-বিদেশী ক্রেতা ও আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের কোন কারখানার পণ্য ইত্যাদি সব ধরনের তথ্য লিপিবদ্ধ থাকবে। প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ‘ম্যাপড ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্পটি ২০১৭ সালের এপ্রিলে শুরু হয়ে এবং ২০২১ সালের জুনে শেষ হবে। বিকেএমইএর পরিচালক ও স্টিটেক টোন অ্যাপারেলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজিব দাশ সুজয় বণিক বার্তাকে বলেন, ঢাকা ও গাজীপুরে কাজ শেষ হওয়ার পর চট্টগ্রামের সব কারখানাকে ডিজিটাল মানচিত্রের আওতায় আনা হচ্ছে। এতে থাকা পোশাক কারখানাগুলোর বিভিন্ন তথ্য দেশে-বিদেশে বসে যে কেউ সংগ্রহ করতে পারবেন। দেশের পোশাক শিল্পের জন্য এ অ্যাপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি। এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকটি কারখানার মালিক জানান, কারখানাগুলো কোন কোম্পানির সঙ্গে ব্যবসায়িক চুক্তিতে কাজ করছে এমন তথ্য প্রকাশ করা ঠিক হবে না। কেননা দেশের বাজারে পোশাক শিল্প এখন বেশ সংকটে আছে। প্রতিযোগিতার বাজারে কোন কোম্পানি কাদের সঙ্গে ব্যবসা করছে এমন তথ্য যদি সবাই জেনে যায়, তাহলে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব ও প্রতিযোগিতা বেড়ে যাবে। ফলে কিছু বড় কোম্পানি বাজারে টিকে গেলেও ছোট ছোট কোম্পানি আর ব্যবসা করতে পারবে না। বিজিএমইএর বর্তমান কমিটির প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ আব্দুস সালাম জানান, কোনো শিল্প খাত যখন বড় হয়, তখন সবাই নিজের মতো করে চলতে চায়। কারো কথা কেউ শুনতে চায় না। আবার নিজেদের সমস্যা নিজেরাও বের করতে পারে না। তখন সমস্যা সমাধানে আমরা বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের দ্বারস্থ হই। ম্যাপড ইন বাংলাদেশ হচ্ছে সেই ধরনের একটি প্লাটফর্ম, যার মাধ্যমে জানা যাবে পোশাক রফতানিকারকদের সক্ষমতা ও লোকেশনও। তিনি আরো বলেন, বর্তমান পোশাক কারখানা মালিকরা একটি সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। এ সংকট নিরসনের জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। কারণ এ খাত দেশের রফতানির প্রায় ৮৫ ভাগ দখল করে আছে। এ খাত যাতে আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারে, সে চেষ্টাই করে যাচ্ছি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলে কারখানারগুলোর ব্যবসা সম্প্র্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের কারখানার কাজের মান, বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের পোশাকের চাহিদা কেমন কিংবা কারখানার উৎপাদনের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে। কাজে গতিশীলতা বাড়বে। এতে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিকভাবে কাজ করা যাবে বলে মনে করছেন তারা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here