Home Apparel লক্ষ্য থেকে বহু দূরে রপ্তানি আয়

লক্ষ্য থেকে বহু দূরে রপ্তানি আয়

রপ্তানি আয়ে পড়েছে শকুনের দৃষ্টি। অব্যাহতভাবে কমছে আয়। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে রপ্তানি আয়ের ধস আরও বড় হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) ১ হাজার ৯৩০ কোটি ২১ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ কম। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কমেছে ১২ দশমিক ৭৭ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। গতকাল রবিবার পণ্য রপ্তানি আয়ের এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

হালনাগাদ তথ্য থেকে দেখা যায়, ডিসেম্বর মাসে প্রবৃদ্ধি ও লক্ষ্যমাত্রা স্পর্শ করতে পারেনি দেশের তৈরি পোশাক খাত। চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে ১ হাজার ৬০২ কোটি ৪০ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এই আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ কম। একই সঙ্গে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় কমেছে ১৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ। এদিকে একক মাস হিসেবে ডিসেম্বরে রপ্তানি আয় অর্জিত হয়েছে ৩৫২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪০৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার।

ইপিবির প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে সব ধরনের পণ্য রপ্তানিতে বৈদেশিক মুদ্রার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৫৫০ কোটি মার্কিন ডলার। ২০১৮-১৯ অর্থবছর শেষ রপ্তানি আয় অর্জিত হয়েছে ৪ হাজার ৫৩ কোটি ৫০ লাখ ৪ হাজার ডলার। চলতি অর্থবছর প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) রপ্তানির আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ২১২ কোটি ডলার। এই ছয় মাসে রপ্তানি আয় এসেছে ১ হাজার ৯৩০ কোটি ২১ লাখ মার্কিন ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ কম। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে রপ্তানি আয় অর্জিত হয়েছিল ২ হাজার ৪৯ কোটি ৯৮ লাখ ডলার। সে হিসাবে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি কমেছে ৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ। এদিকে একক মাস হিসেবে ডিসেম্বরে রপ্তানি আয় বাড়লেও পূরণ হয়নি লক্ষ্যমাত্রা। নভেম্বরে যেখানে মোট রপ্তানি আয় হয়েছিল ৩০৫ কোটি ৫৮ লাখ ডলার, সেখানে ডিসেম্বরে আয় বেড়ে হয়েছে ৩৫২ কোটি ৫০ লাখ ডলার। অবশ্য গত বছরের ডিসেম্বরে আয় হয়েছিল ৩৪২ কোটি ৬১ লাখ ডলার। সে হিসেবে এই ডিসেম্বরে আগের বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ৮৯ শতাংশ।

জানা যায়, দেশের রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৫ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। এই খাত থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রপ্তানি আয় এসেছিল ৩ হাজার ৪১৩ কোটি ৩২ লাখ ডলার। ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে তৈরি পোশাক খাতে পণ্য রপ্তানি থেকে আয় অর্জিত হয়েছে ১ হাজার ৬০২ কোটি ৪০ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে আয় এসেছিল ১ হাজার ৭০৮ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। সে হিসেবে এ খাতে প্রবৃদ্ধি কমেছে ৬ দশমিক ২১ শতাংশ। প্রবৃদ্ধি কমার পাশাপাশি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি তৈরি পোশাক খাত। লক্ষ্যমাত্রা কমেছে ১৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত ছয় মাসে নিট পোশাক রপ্তানি থেকে আয় এসেছে ৮২০ কোটি ৫ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ দশমিক ১৬ শতাংশ কম। একই সঙ্গে লক্ষ্যমাত্রা কমেছে ১০ দশমিক ৪৮ শতাংশ। অন্যদিকে ওভেন পোশাক রপ্তানি করে আয় হয়েছে ৭৮১ কোটি ৮২ লাখ ডলার, যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ কম। পাশাপাশি ১৬ দশমিক ৯২ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা কমেছে ওভেনে।

ইপিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধি ২১ দশমিক ৫৫ শতাংশ ও লক্ষ্যমাত্রা ২৭ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। এ সময়ে এ খাত থেকে আয় এসেছে ৫১ কোটি ১৭ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে ১০ দশমিক ৬১ শতাংশ কম প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে। এ খাত থেকে আয় এসেছে ৪৭ কোটি ৫৮ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রপ্তানি আয় কমেছে ১০ দশমিক ৪৮ শতাংশ। গত অর্থবছর জুড়েও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে আয় ও লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি।

এদিকে গত ছয় মাসে প্লাস্টিক পণ্যে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে শূন্য দশমিক ৫৭ শতাংশ। এ সময় আয় হয়েছে ৫ কোটি ৬৮ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ২২ দশমিক ৬ শতাংশ কম। গত ছয় মাসে হোম টেক্সটাইল খাতে প্রবৃদ্ধি ও লক্ষ্যমাত্রা দুটিই কমেছে। এ সময় আয় এসেছে ৩৭ কোটি ১ লাখ ডলার। ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর মাস শেষে কৃষিপণ্য রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়লেও প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়নি। এ খাত থেকে আয় এসেছে ৫২ কোটি ৩৯ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রপ্তানি আয় বেড়েছে ১ দশমিক ২১ শতাংশ। অন্যদিকে আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি কমেছে ৩ দশমিক ৮১ শতাংশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here