Home Apparel পোশাক খাতে শ্রমসংক্রান্ত অভিযোগ ৪০ থেকে বেড়ে ৭০%

পোশাক খাতে শ্রমসংক্রান্ত অভিযোগ ৪০ থেকে বেড়ে ৭০%

দেশের পোশাক কারখানাগুলোতে কাজ করতে গিয়ে ন্যায্য পাওনা আদায়, হয়রানিমূলক আচরণসহ কর্মক্ষেত্রে নানা রকম অভিযোগের ক্ষেত্র তৈরি হয় শ্রমিকদের মধ্যে। অভিযোগগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে উত্থাপন করে তা সমাধানের চর্চার সুযোগ শ্রমিকদের জন্য সীমিত। তার পরও সরকারি সংস্থার কাছে অভিযোগ করেন শ্রমিকরা। বড় খাত হিসেবে পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের অভিযোগের হারই বেশি। গত দুই বছরের হিসাব বলছে, সরকারের কাছে শ্রমসংক্রান্ত অভিযোগের হার ৪০ থেকে বেড়ে ৭০ শতাংশ ছাড়িয়েছে।

জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২০ জুন অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রম সম্মেলনের ১০৮তম অধিবেশনে জাপান, ইতালি, পাকিস্তান, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকার শ্রমিক প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করা হয়। সংগঠিত হওয়ার অধিকার, সংঘ গঠনের স্বাধীনতা, দরকষাকষি এবং শ্রম পরিদর্শনসংক্রান্ত উত্থাপিত অভিযোগগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অবস্থান জানানোর সময়সীমা শেষ হচ্ছে চলতি মাসেই।

সূত্রমতে, উত্থাপিত অভিযোগের জবাব এরই মধ্যে তৈরি করে ফেলেছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। চলতি মাসেই যা আইএলওর কাছে পাঠিয়ে দেয়া হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বণিক বার্তাকে বলেন, আইএলও সম্মেলনে উত্থাপন করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জবাব সংবলিত প্রতিবেদন চূড়ান্ত হয়েছে। অভিযোগে উঠে আসা বিষয়বস্তুর সবগুলোকে বিবেচনায় রেখেই জবাব দেয়া হয়েছে। আশা করছি আইএলও বাংলাদেশের জবাবে সন্তুষ্ট থাকবে।

উত্থাপিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দেয়া জবাবে বাংলাদেশ বলেছে, ২০১৩ ও ২০১৮ সালে আইন সংশোধনের মাধ্যমে ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন পদ্ধতি সহজ করা হয়েছে। ন্যূনতম সদস্যসীমা ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে। ২০১০, ২০১৩ ও ২০১৮ সালে পোশাক খাতের ন্যূনতম মজুরি কাঠামো পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। পরিদর্শন বিভাগের ২৩টি কার্যালয়ে ৯২৩ জন অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

আইএলওর কারিগরি সহায়তায় অগ্নি-স্থাপত্য ও বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে আইএলওকে দেয়া জবাবে আরো যেসব পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলা হয়েছে, সেগুলো হলো শ্রম অধিদপ্তরের জনবল ৭১২ থেকে ৯২১-এ উন্নীত করা, পেশাগত নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যনীতি ২০১৩ এবং গৃহশ্রমিক সুরক্ষা ও কল্যাণ ২০১৫ প্রণয়ন, কল-কারখানা অধিদপ্তরে শ্রমিক অভিযোগ গ্রহণে পদক্ষেপ হিসেবে হেল্প লাইন স্থাপন এবং জাতীয়, বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শিশুশ্রম নজরদারি কমিটি সক্রিয় করা।

হেল্পলাইনের কার্যক্রম প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে আইএলওকে পাঠানো বিস্তারিত জবাবে বলা হয়েছে, টেলি পরামর্শক দলের কাছে শ্রমিকরা হেল্পলাইনের মাধ্যমে অভিযোগ করেন। এ অভিযোগ জেলা পর্যায়ে কল-কারখানা অধিদপ্তরের কার্যালয়ে হস্তান্তর করা হয়। শ্রম পরিদর্শকের মাধ্যমে তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগ সমাধানের ব্যবস্থা নেয়া হয় বলে আইএলওকে জানিয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে মামলা কল-কারখানা অধিদপ্তরের মাধ্যমে করা হয় শ্রম আদালতে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০১৫ সালের মার্চ মাস থেকে ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত শ্রমসংক্রান্ত মোট অভিযোগে পোশাক খাতসংক্রান্ত অভিযোগ ছিল ৬১ দশমিক ৫৬ শতাংশ। ২০১৬-১৭ অর্থবছর শেষে পোশাক খাতসংক্রান্ত অভিযোগের হার কমে হয় ৫১ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে অভিযোগের হার কমে হয় ৪০ শতাংশ। গত অর্থবছরে অভিযোগের হার বেড়ে হয়েছে ৭০ দশমিক ৬৮ শতাংশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here