রপ্তানি আয়ের ধাক্কা সামলাতে নগদ সহায়তার উৎসে কর কমিয়ে অর্ধেক করেছে সরকার।
দীর্ঘদিন ধরে দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক রপ্তানিতে নগদ সহায়তা (ক্যাশ ইনসেনটিভ) দিয়ে আসছে সরকার। তবে এই সহায়তা থেকে বিভিন্ন সময়ে বিভন্ন হারে উৎসে কের কেটে রাখত সরকার। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দিচ্ছে সরকার। অর্থাৎ কোনো রপ্তানিকারক ১০০ টাকার পোশাক রপ্তানি করলে সরকার সেই রপ্তানিকারককে ১ টাকা নগদ সহায়তা দিচ্ছে। এই ১ টাকা থেকে আবার ১০ শতাংশ উৎসে কর কেটে রাখছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর। সে হিসাবে ১০০ টাকা রপ্তানির বিপরীতে রপ্তানিকারক প্রকৃতপক্ষে ৯০ পয়সা নগদ সহায়তা পাচ্ছিলেন।
রপ্তানি বাণিজ্যে সংকট উত্তরণে নগদ সহায়তার উৎসে কর পুরোটা প্রত্যাহারসহ সরকারের কাছে আরও কিছু নীতি-সহায়তা চেয়েছিল পোশাক রপ্তানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ। কিন্তু এনবিআর পুরোটা না কমিয়ে অর্ধেক করেছে। অর্থ্যাৎ পোশাক রপ্তানিকারকদের এখন নগদ সহায়তার উপর ৫ শতাংশ উৎসে কর দিতে হবে। গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে নগদ সহায়তা থেকে ৩ শতাংশ হারে উৎসে কর কেটে রাখা হত। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে তা বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়। গত বৃহস্পতিবার তা কমিয়ে ৫ শতাংশ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ইনকাম ট্যাক্স অর্ডিন্যান্স, ১৯৮৪ এর সেকশন ৪৪ এর সাব-সেকশন (৪) এর ক্লজ (বি) এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার রপ্তানির নগদ ভর্তুকির (নগদ সহায়তা) উপর উৎসে কর কর্তনের হার দশ শতাংশ থেকে হ্রাস করে পাঁচ শতাংশ নির্ধারণ করল। ‘এতে খুব বেশি লাভ হবে না’ জানিয়ে বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত অর্থবছরে ৩ শতাংশ কেটে রাখা হত। এবারের বাজেটে তা বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছিল। সংকট কাটাতে আমরা এই পুরোটাই প্রত্যাহার চেয়েছিলাম। কিন্তু অর্ধেক করা হয়েছে।” “তার মানে গত অর্থবছরে যেটা কেটে রাখা হত, এই বিপদের মধ্যেও তার চেয়ে বেশি কেটে রাখা হচ্ছে।” রুবানা হক বলেন, “সত্যিই খারাপ সময় পার করছি আমরা। সরকারের নীতি-সহায়তা ছাড়া এ সংকট কাটানো কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এবং সে সহায়তা খুব দ্রুত প্রয়োজন। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ তথ্যে দেখা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথমার্থে (জুলাই-ডিসেম্বর) এক হাজার ৯৩০ কোটি ২২ লাখ (১৯.৩০ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ কম আয় হয়েছে। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম ১২ দশমিক ৭৭ শতাংশ।