তৈরি পোশাক শিল্প বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য অনুঘটক হিসাবে কাজ করে। আরএমজি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক দৃশ্যাবলী পরিবর্তন করতে কার্যকরভাবে সহায়তা করে। “মেড ইন বাংলাদেশ” ট্যাগটি দেশের জন্যও গৌরব এনেছে, এটি বিশ্বজুড়ে একটি নামী ব্র্যান্ড করেছে। বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম আরএমজি রফতানিকারক দেশ। এ খাতে বাংলাদেশ প্রতি বছর প্রায় ৩০ বিলিয়নেরও বেশি ডলার রফতানি করে থাকে। এখন বাংলাদেশ বিশ্ব বাজারে তার অবস্থান ধরে রাখবে এবং ২০২১ সালে বাংলাদেশের প্রজাতন্ত্রের ৫০ তম বার্ষিকীতে ৫০ বিলিয়ন ডলার রফতানি অর্জনে অগ্রসর হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারী ও রফতানিকারক সংগঠন (বিজিএমইএ) সূত্রে জানা গেছে, তৈরি পোশাক শিল্পে বাংলাদেশে বর্তমানে ৪ হাজারের বেশি কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলো আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হলেও নিবন্ধন ছাড়াই প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে এরকম কারখানার সংখ্যাও কম নয়। তবে বৈশ্বিক মান ও রফতানিতে এগিয়ে থাকা ১০ টি কারখানাকে নিজেদের অলংকার ও অহংকার বলেও জানাচ্ছে বিজিএমইএ। এই ১০ কারখানা শুধু বাংলাদেশের নয় নজর কেড়েছে বহি:বিশ্বেরও। আন্তর্জাতিক ক্রেতা জোট অ্যাকর্ড বলছে, এই ১০ কারখানা বাংলাদেশ নিজেদের জন্য উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।
হামীম গ্রুপ:
৩০ বছর ধরে ঐতিহ্যবাহী এই কোম্পানিটি বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। এই ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানটির ২৬ টি ফ্যাক্টরি রয়েছে এবং প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক এই গ্রুপের অধীনে কাজ করছে। হামিমের প্রায় প্রতিটি কারখানা আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন।
বেক্সিমকো ফ্যাশন লিমিটেড:
প্রতিষ্ঠানটি ১৯৯৭ সাল থেকে তৈরি পোশাক শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইউরোপসহ কয়েকটি বিভিন্ন দেশের বেশ কয়েকটি বড় ব্রান্ডের জন্য প্রায় ৬ মিলিয়ন পিসেরও বেশী ড্রেস প্রতিষ্ঠানটি রফতানি করেছে।
ডিবিএল গ্রুপ:
যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ডিবিএল গ্রুপের বড় বাজার রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এই প্রতিষ্ঠানটি পুমা, জি-স্টার সহ বেশ কয়েকটি নামকরা ব্রান্ডের জন্য প্রতিষ্ঠানটি পোশাক তৈরি করছে।২০১৬ সালে আইসিএমএবি বেস্ট কর্পোরেট অ্যাওয়ার্ড, ২০১৭ সালে এইচএসবিসির ক্লাইমেট অ্যাওয়ার্ড ও আইসিকিউসিসি গোল্ড অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে প্রতিষ্ঠানটি।
স্কয়ার ফ্যাশন লিমিটেড:
১৯৯৭ সালে শুরু করা এই গার্মেন্টস কোম্পানিটি গার্মেন্টস শ্রমিকদের নানা সুযোগ সুবিধা দেয়ার জন্য বিশেষভাবে সুপরিচিত। প্রতিষ্ঠানটির বর্তমানে দুটি গার্মেন্টস ইউনিট এবং আরও দুটি ফেব্রিক ইউনিট রয়েছে।
ওপেক্স সিনহা গ্রুপ:
বার্ষিক ৩০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি পোশাক খাতে রফতানি করে থাকে ওপেক্স সিনহা গ্রুপ। সিনহা গ্রুপের মিদলার গ্রুপ এবং ওপেক্স গ্রুপ নামে দুটি অধীনস্থ কোম্পানিও রয়েছে।
ইপিলিয়ন গ্রুপ:
১৯৯৪ থেকে যাত্রা শুরু করা এই কোম্পানিটি বেশ কয়েকটি দেশে তাদের তৈরি পোশাক রপ্তানি করছে। ইউরোপ, আমেরিকা সহ এশিয়া এবং আফ্রিকার বিভিন্ন দেশেও ইপিলিয়ন গ্রুপ তৈরি পোশাক রপ্তানি করছে।
এশিয়ান এপারেলস লিমিটেড:
পোশাক খাতে ১৯৯২ তে যাত্রা শুরু করা এই প্রতিষ্ঠানটি তৈরি পণ্য রপ্তানির জন্য বিশেষ ভাবে সমাদৃত। প্রতিষ্ঠানটি অর্থনৈতিক উন্নতির পাশাপাশি সমাজ, পরিবেশ, নৈতিক জায়গা থেকেও দায়িত্বশীল ভূমিকা রেখে চলেছে। ফ্যাক্টরিতে স্বাস্থ্য এবং সুন্দর কাজের পরিবেশের দিকটি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বিশেষ স্থান দখল করে নিয়েছে।
ফকির গ্রুপ:
প্রতিষ্ঠানটি ৩.৬ মিলিয়ন পিস প্রতি বছর রপ্তানি করছে। সম্পূর্ণ রপ্তানি নির্ভর এই প্রতিষ্ঠানটি বেশ সুনামের সাথে তাদের ব্যবসায় কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
গিভেন্সি গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেড:
প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে ১৯৮২ সালে। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানটিতে ১৭,০০০ শ্রমিক কর্মরত রয়েছে যারা প্রতি বছর ৭০,০০০ পিস তৈরি পণ্য উৎপাদন করছে।
স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপ:
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে ১৯৮৪ সালে শুরু করা এই ঐতিহ্যবাহী কোম্পানিটির অবদান অনস্বীকার্য। ঐতিহ্যের সাথে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সংমিশ্রণ এই প্রতিষ্ঠানটির এক অনন্য বৈশিষ্ট।