নভেল করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে একের পর এক ক্রয়াদেশ হারাচ্ছে তৈরি পোশাক খাত। শিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) তথ্য বলছে, আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ১ হাজার ১২৩ কারখানায় ৩১১ কোটি ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হয়েছে।
সংগঠনটির দেয়া তথ্যমতে, বিজিএমইএর সদস্য ১ হাজার ১২৩ কারখানার ৩১১ কোটি ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল-স্থগিত হয়েছে। এসব ক্রয়াদেশের আওতায় ছিল ৯৭ কোটি ৭০ লাখ ১০ হাজার পিস পোশাক। ১ হাজার ১২৩ কারখানার আওতায় আছে ২২ লাখ ৪০ হাজার শ্রমিক।
সূত্রমতে, ক্রয়াদেশ বাতিল-স্থগিত করা ক্রেতাদের মধ্যে প্রাইমার্কের মতো বড় ক্রেতা প্রতিষ্ঠানও আছে। আয়ারল্যান্ডভিত্তিক প্রাইমার্কের পাশাপাশি ক্রয়াদেশ বাতিল-স্থগিত করেছে ইউরোপের ছোট-মাঝারি-বড় সব ধরনের ক্রেতাও। আবার এইচএন্ডএম, ইন্ডিটেক্স, মার্কস অ্যান্ড স্পেনসার, কিয়াবি, টার্গেট, পিভিএইচসহ আরো কিছু ক্রেতা ক্রয়াদেশ বহাল রাখার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। ফলে ক্রয়াদেশ বাতিল-স্থগিতের পরিমাণ কমে আসতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলো একের পর এক লকডাউন ঘোষণা করছে। বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করছে পোশাকের ব্র্যান্ডগুলো। এ পরিস্থিতিতে ভোক্তা চাহিদায় ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। বাজার চাহিদার এ পরিস্থিতিতে নতুন ক্রয়াদেশ দিচ্ছে না ক্রেতারা। শুধু তাই নয়, বাতিল ও স্থগিত করছে আগের দেয়া ক্রয়াদেশও, যার ফলে ব্যাপক মাত্রায় ক্রয়াদেশ হারাচ্ছে দেশের তৈরি পোশাক খাত।
করোনার প্রভাবে প্রথমে কাঁচামাল সরবরাহ সংকটে পড়তে হয়েছিল পোশাক খাতকে। কারণ দেশের তৈরি পোশাক খাতের ওভেন পণ্য তৈরির আনুমানিক শতকরা ৬০ শতাংশ কাপড় চীন থেকে আমদানি হয়। আর নিট পণ্য তৈরির আনুমানিক শতকরা ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কাঁচামাল চীন থেকে আমদানি হয়।
চীনে করোনাভাইরাস হানা দেয়ায় দেশটি থেকে কাঁচামাল আসতে পারছিল না। কারণ করোনার প্রভাবে দেশটির বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ধীরগতিতে হলেও কাঁচামাল সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। কিন্তু এখন চাহিদা সংকটে পড়েছে পোশাক খাত। এ পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিকের বেতন পরিশোধে প্রণোদনা প্যাকেজও ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সরকার।