করোনাভাইরাসের ক্ষতি পোষাতে বাংলাদেশ থেকে আমদানি হওয়া তৈরি পোশাকের ওপর শুল্ক আরোপের দাবি করেছে ভারতের দ্য ক্লদিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া (সিএমএআই)। আগামী ১২ মাসের জন্য শুল্ক আরোপ চায় ভারতের পোশাক উৎপাদনকারী ব্যবসায়ীদের এ সংগঠনটি। সিএমএআই সভাপতি রাকেশ বিয়ানি ২২ মে ভারতের বস্ত্রমন্ত্রী স্মৃতি ইরানিকে পাঠানো এক চিঠিতে এই দাবি করেন। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে শুল্কমুক্ত পোশাক আমদানির বিপদ নিয়ে আমরা অনেক দিন ধরেই সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আসছি। এর মাধ্যমে পেছন দরজা দিয়ে চীনের কাপড় ভারতে চলে আসছে। তাতে অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানানির্ভর দেশীয় পোশাক খাতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। স্মৃতি ইরানিকে দেওয়া চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের কারণে ভারতের রপ্তানির পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ বাজারে পোশাক বিক্রি কমে গেছে। সিএমএআইয়ের জরিপ অনুযায়ী, মহামারি করোনাভাইরাস প্রতিরোধে লকডাউন থাকায় অভ্যন্তরীণ বাজারে পোশাকের চাহিদা ৪০ শতাংশের বেশি কমেছে। পোশাকের চাহিদা কমে যাওয়ায় অনেক কারখানা বন্ধ ও শ্রমিকদের চাকরি হারানোর ঘটনা ঘটবে। এই সংকটকালীন দেশের শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সরকারকে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। করোনার কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভারত সরকার কিছু পণ্যের ওপর অতিরিক্ত আমদানি শুল্ক আরোপের কথা ভাবছে। এমন তথ্য উল্লেখ করে সিএমএআই সভাপতি স্মৃতি ইরানীকে লিখেছেন, ‘আমরা চাই, যেসব দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য বা শুল্কমুক্ত আমদানি চুক্তি আছে সেসব দেশ থেকে সব ধরনের তৈরি পোশাক ও কাপড় আমদানির ওপর শুল্কারোপ করবে বস্ত্র মন্ত্রণালয়। এতে ১০ থেকে ১৫ কোটি ডলার রাজস্ব আদায় হবে। আগামী ১২ মাসের জন্য এই শুল্ক আরোপ চেয়েছে সিএমএআই। সাম্প্রতিক সময়ে ভারত বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের ভালো বাজার হয়ে উঠেছে। শুল্কমুক্ত–সুবিধা থাকায় প্রতিবছরই দেশটিতে পোশাক রপ্তানি বাড়ছে। মূলত বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ভারতে পোশাক রপ্তানি বাড়ছে। সিএমএআইয়ের সভাপতির চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ২০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। পরের বছর সেটি বেড়ে ৩৬ কোটি ডলার হয়। আর চলতি অর্থবছর এখন পর্যন্ত রপ্তানি হয়েছে ৪০ কোটি ডলারের পোশাক। তা ছাড়া ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ভারত যে পরিমাণ তৈরি পোশাক আমদানি করেছে, তার ৩৩ শতাংশই বাংলাদেশ থেকে গেছে।জানতে চাইলে বাংলাদেশের নিট পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম প্রথম আলোকে বলেন, ভারত বর্তমানের আমাদের তৈরি পোশাকের ভালো একটি বাজার। এটি যাতে কোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে জন্য সরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ নিতে হবে।