কালো তালিকাভুক্ত করার হুমকি পেয়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন-বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ’র আচরণকে ‘নিরর্থক’ বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাজ্যের এডিনবার্গ উলেন মিলস (ইডব্লিউএম) গ্রুপ। রপ্তানি হওয়া তৈরি পোশাকের বকেয়া অর্থ পরিশোধ না করলে ওই হুমকি দেয় বাংলাদেশের দুটি সংগঠন।
আক্রমণাত্মক বক্তব্যের পাশাপাশি ব্রিটিশ গণমাধ্যমে ইডব্লিউএম’র একজন মুখপাত্র দাবি করেন, তারা ‘সর্বোচ্চ ভালো উদ্দেশ্য’ নিয়ে যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশ থেকে পাওয়া হুমকির জবাবে কোম্পানিটি এভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, ‘চিঠির সম্বোধনে আমরা অপ্রীতিকর অবস্থায় পড়লাম। আমরা মনে করি তাদের এই উপস্থাপনা নিরর্থক এবং অসহযোগিতার নামান্তর।’
৭৩ বছরের পুরোনো ইডব্লিউএম গ্রুপের পিকক, কান্ট্রি ক্যাজুয়াল, অস্টিন রেডসহ পোশাকের বেশ কিছু ব্র্যান্ড রয়েছে। তাদের বিক্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা প্রায় ৪০০। পাঁচ বছর আগে গ্রুপটির বার্ষিক বিক্রির পরিমাণ ছিল ৫৬ কোটি পাউন্ড।
করোনাভাইরাসের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে ইডব্লিউএম বাংলাদেশের রিভার সাইড সোয়েটার, স্কাইলাইন অ্যাপারলেস, সাউর্দান ডিজাইনারস লিমিটেডসহ কয়েকটি কারখানার ১১ লাখ ৯৫ হাজার পিস পোশাকের ক্রয়াদেশ বাতিল করেছে। ক্রয়াদেশ বাতিল হওয়া পোশাকের রপ্তানি মূল্য ৮২ লাখ ডলারের বেশি।
বাংলাদেশী পোশাক মালিকদের দুই সংগঠনের পক্ষে বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক ইডব্লিউএমের প্রধান নির্বাহী ফিলিপ অ্যাডওয়ার্ড ডে’কে গত বৃহস্পতিবার ই-মেইল করেন। এতে তিনি লিখেছেন, ‘২৫ মার্চ পর্যন্ত ইডব্লিউএম ও তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ক্রয়াদেশের বিপরীতে যেসব পণ্য তাদের মনোনীত ফ্রেইড ফরোয়ার্ডের মাধ্যমে জাহাজীকরণ সম্পন্ন করা হয়েছে তার অর্থ ২৯ মের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। তা ছাড়া ইতিমধ্যে যেসব ক্রয়াদেশ দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর বিষয়ে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ৫ জুনের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে হবে। বিষয়গুলো সুরাহা না হলে ইডব্লিউএমের কোনো নতুন ক্রয়াদেশের জন্য শুল্কমুক্ত কাঁচামাল আমদানির সনদ ইউটিলাইজেন ডিক্লারেশন বা ইউপি ইস্যু করবে না বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ।’
এর জবাবে ব্রিটেনের আই-নিউজকে ইডব্লিউএ ‘র মুখপাত্র বলেন, বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে এই প্রথম তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হল। কোম্পানিটির দাবি, অধিকাংশ সরবরাহকারীর সঙ্গে তাদের ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।
তারা বলছে, ‘করোনা ছড়ানোর শুরুতে আমরা অধিকাংশ সরবরাহকারীকে অর্থ পরিশোধ করেছি। বিজিএমইএ মূলত বাংলাদেশে আমাদের সরবরাহকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য সংবাদমাধ্যমে হট্টগোল সৃষ্টি করতে চাইছে।’