শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমই–এর সভাপতিকে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর (ডিআইএফই)। ডিআইএফইর মহাপরিদর্শক শিবনাথ রায় রোববার এই চিঠি দেন। এতে বলা হয়, ঈদের পর পোশাকশিল্প মালিকেরা শ্রমিক ছাঁটাই করছেন। অধিদপ্তরের ২৩টি উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয় থেকে ঈদের পর জানায়, ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামের ৬৭টি কারখানার ১৭ হাজার ৫৭৯ শ্রমিক ছাঁটাই করা হয়েছে। তার মধ্যে টঙ্গীর তানাজ ফ্যাশনস ও ভিয়ালাটেক্স গার্মেন্টসের ২ হাজার ৪৫০ শ্রমিক ছাঁটাইয়ের শিকার হয়েছেন। বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা অধিদপ্তরের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধের দাবি করছেন। গত ২৫ এপ্রিল ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদের (টিসিসি) সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল বর্তমান পরিস্থিতিতে সার্বিক দিক বিবেচনায় শ্রমিক ছাঁটাই ও কারখানা লে-অফ না করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করা হয়েছিল। বিষয়টি উল্লেখ করে শ্রম অসন্তোষ নিরসনে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেন ডিআইএফইর মহাপরিদর্শক শিবনাথ রায়। ডিআইএফইর চিঠির অনুলিপি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ ও বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বিটিএমএ এর সভাপতির পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
পোশাকশ্রমিক ছাঁটাই নিয়ে বিজিএমইএ–এর সভাপতি রুবানা হকের এক মন্তব্যের পর ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন তাঁর এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। ১১ শ্রমিক সংগঠনের জোট গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলন বিজিএমইএ এর সভাপতির বক্তব্য সাত দিনের মধ্যে প্রত্যাহার চেয়ে গত শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে। তারপরই বিজিএমইএ আনুষ্ঠানিকভাবে দাবি করে, ‘সংগঠনের সভাপতি শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দেননি। সংগঠন হিসেবে এ ধরনের ঘোষনা দেওয়ার কোনো সুযোগও নেই। বিজিএমইএ সভাপতি কর্মসংস্থান হ্রাস পাওয়া ও সম্ভাব্য শ্রমিক ছাঁটাই বিষয়ে তাঁর গভীর উদ্বেগ ও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।’ গত বৃহস্পতিবার অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রুবানা হক বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে ক্রয়াদেশ কমে যাওয়ায় মাত্র ৫৫ শতাংশ সক্ষমতায় কারখানা চালাতে হবে। সেটি হলে শ্রমিক ছাঁটাই ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। এটি অনাকাঙ্খিত বাস্তবতা, কিন্তু করার কিছু নেই।