পাঁচ বছরের জন্য রপ্তানিকর ০.২৫ শতাংশ চান তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা। করোনাভাইরাসের প্রভাবে সংকটাপন্ন অবস্থা বিবেচনায় এই সহযোগিতা চেয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছে গার্মেন্টশিল্প মালিকদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ। পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা জানান, সদ্যঃসমাপ্ত অর্থবছরে রপ্তানির বিপরীতে করহার এক-চতুর্থাংশ কমিয়ে ০.২৫ শতাংশে আনা হয়েছিল। ওই মেয়াদ গতকাল মঙ্গলবার শেষ হয়েছে। সেই হিসাবে আজ থেকে ফের ১ শতাংশ হওয়ার কথা। তবে বাজেটে তা ০.৫ শতাংশ করা হয়েছে। এরই মধ্যে তা পাস হওয়ায় আজ থেকে রপ্তানির বিপরীতে নতুন হারে কর পরিশোধ করতে হবে। ফলে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকরা আগের ০.২৫ শতাংশ হারেই কর দিতে চান। একই সঙ্গে ওই সুযোগ আগামী পাঁচ বছরের জন্য স্থায়ী করার দাবিও তাঁদের। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, রপ্তানি তথা গার্মেন্টপণ্য রপ্তানির কর কমানোর বিষয়ে তাদের কাছে এখনো শীর্ষ পর্যায় থেকে কোনো নির্দেশনা নেই। যোগাযোগ করা হলে বিকেএমইএর সিনিয়র সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গত অর্থবছর পোশাকশিল্পের অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে রপ্তানির উৎস কর ০.২৫ শতাংশ করা হয়েছিল। এবার কি পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে? করোনার কারণে এবার তো অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে গার্মেন্ট খাতের অবস্থা বেশি খারাপ। তাহলে কোন বিবেচনায় এবার রপ্তানির কর দ্বিগুণ করা হলো?’ তিনি আরো বলেন, ‘বছর বছর এখানে পরিবর্তন আনা হয় আমাদের হয়রানি বাড়ানোর জন্য।’ এ ছাড়া প্রণোদনার ওপর কর দ্বিগুণ করা ছাড়াও ভ্যাট ও ট্যাক্সের আরো কিছু বিষয়ে ব্যবসাবান্ধব সিদ্ধান্ত হয়নি বলে তিনি নিজের অসন্তোষের কথা জানান। অবশ্য এনবিআরের আয়কর বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘পোশাকশিল্পসহ রপ্তানির উৎস করহারের বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়েছিল ৩০ জুন পর্যন্ত। এর পর তো তা ১ শতাংশ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু সরকার তা অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে। তাহলে বাড়ল কই?’ এ সময় তিনি পোশাকশিল্প মালিকদের দেওয়া সরকারের বিভিন্ন সুবিধা তুলে ধরে বলেন, ‘তাদের করপোরেট ট্যাক্স মাত্র ১২ শতাংশ, বিভিন্ন খাতের আমদানিতে শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছে, প্রণোদনাসহ আরো কিছু সুবিধা পাচ্ছে। এরপর তারা আরো সুবিধা চায়। চার দশকেও একটা খাত এতটুকু নিজের পায়ে দাঁড়াতে না পারলে আর কবে পারবে?’ তবে তিনি বলেন, তবু নির্দেশনা এলে আয়কর বিভাগ তার আলোকেই কাজ করবে।