ব্যাংক থেকে টাকা পেলে পোশাক শ্রমিকদের জুন মাসের শতভাগ বেতন পরিশোধ নিয়ে আশাবাদী এ খাতের বড় দুই সংগঠন বিকেএমইএ এবং বিজেএমইএ। কারখানা মালিকরা বলছেন, টাকা পেলে ঈদের বোনাসও দেওয়া হবে। কিন্তু ঈদের আগে জুন মাসের বেতন শতভাগ পরিশোধ করা হবে কি না বা জুলাই মাসের বেতন দেওয়া হবে কি না তা নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। মালিক নেতারা বলছেন, অনেক ব্যাংক এখন টাকা দিতে চাচ্ছে না। আর টাকা না পেলে শ্রমিকদের জুলাই মাসের বেতন-বোনাস দেওয়া কঠিন। খাত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ঈদের আগে বেতন বোনাস দিতে না পারলে কিছু কারখানায় পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। শ্রমিক নেতারা বলছেন, ব্যাংক কখন টাকা দেয় আর কখন দেয় না তার সবই জানা আছে মালিকদের। ব্যাংকের ওপর দোষ চাপানো একটা ছুতো। আলোচনার ভিত্তিতে বেতন-বোনাস পরিশোধ করতে হবে। পোশাক শ্রমিকদের বেতন ও আসন্ন ঈদুল আজহার বোনাস নিয়ে বিকেএমইএ ও বিজেএমইএর একাধিক সদস্য বাংলানিউজকে জানান, সদস্যভুক্ত উৎপাদনে থাকা শতভাগ কারখানায় মে মাসের বেতন পরিশোধ হয়েছে। ব্যাংকের পূর্ণ সহযোগিতা পেলে জুন মাসের বেতনও শতভাগ পরিশোধ করা হবে। তবে মাসের পাঁচ/ছয় তারিখে এসে অনেক ব্যাংক টাকা দিতে চাচ্ছে না, নানা অজুহাত দেখাচ্ছে। এই মুহূর্তে টাকা না পেলে একটা ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। অনেক কারখানা জুন মাসের বেতনও দিতে পারবে না। তবে ঈদ বোনাস নিয়ে তারা শতভাগ আশাবাদী। তারা বলছেন, ঈদ বোনাস শতভাগ কারখানা পরিশোধ করতে পারবে। তবে ছোট কারখানাগুলোর বেতন নিয়ে তারা মন্তব্য করেননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিজিএমইএর এক সদস্য জুলাই মাসের বেতনের বিষয়ে বাংলানিউজকে বলেন, আমরা মাসের ২৯/৩০ তারিখখে বেতনের কাগজ তৈরি করি। কিন্তু জুলাইয়ের ২৯ তারিখে কারখানা ছুটি হবে। ফলে এ মাসের বেতন দেওয়া সম্ভব হবে না। এ বিষয়ে বিকেএমইএর পরিচালক ফজলে শামিম এহসান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা মাসের প্রথম সপ্তাহে বেতন দিয়ে দেই। এবার ঈদ মাসের প্রথম দিন হওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। তবে আমরা মালিক-শ্রমিক মিলে আলোচনার ভিত্তিতে একটা সমাধান বের করবো। তিনি বলেন, ব্যাংকের সহযোগিতা পেলে জুন মাসের পুরো বেতন হবে কয়েকদিনের মধ্যে। তবে কিছু ব্যাংক টাকা দিতে পারবে না বলছে। এটা হয়তো ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি করবে কিছু কারখানার জন্য। তবে আশা করি বোনাস হবে। কিন্তু জুলাইয়ের বেতন নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রবীণ শ্রমিক নেতা আবুল হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন, ব্যাংকের সবকিছু জেনেই মালিকরা টাকা লেনদেন করেন। ব্যাংকের টাকা না পেলে বেতন হবে না, এটা একটা অজুহাত। বেতন শতভাগ হতে হবে। বোনাস শ্রমিকের অধিকার। এটা তাদের দিতে হবে। আর কোনো কারখানায় বেতন না হলে এর দায়িত্ব বিকেএমইএ-বিজেএমইএকে নিতে হবে। তবে জুলাই মাসের বেতন নিয়ে সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই মালিক-শ্রমিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার কথা বলেন তিনি।