যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাকের ডেনিম ক্যাটাগরির পণ্য রপ্তানিতে সব দেশকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। দুনিয়াজুড়ে কভিডের ক্রান্তিকালের মধ্যেই দেশটিতে ডেনিম রপ্তানিতে চীন ও মেক্সিকোকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রে ডেনিম রপ্তানিতে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল তৃতীয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) আগে থেকেই ডেনিম রপ্তানিতে শীর্ষস্থানে আছে বাংলাদেশ। অবস্থানের এই উন্নতি বাংলাদেশের ব্র্যান্ড ইমেজকে নতুন উচ্চতা দেবে বলে মনে করেন রপ্তানিকারক উদ্যোক্তারা। যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য বাজারে পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধিতে এই ভাবমর্যাদাকে কাজে দেবে বলে মনে করেন তারা। এই খাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আরও আকৃষ্ট হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল (অটেক্সা)-এর সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে, গত জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত সময়ে বিভিন্ন দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্র ৮৯ কোটি ডলারের ডেনিম আমদানি করেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ রপ্তানি করেছে সবচেয়ে বেশি ১৬ কোটি ডলারের ডেনিম। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মেক্সিকোর রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৫ কোটি ডলার। ভিয়েতনাম ডেনিম রপ্তানি করেছে ১১ কোটি ডলারের। চীনের রপ্তানির পরিমাণ ছিল আট কোটি ডলারের কিছু বেশি। প্রায় একই অবস্থানে আছে পাকিস্তান। বিজিএমইএর সভাপতি ড. রুবানা হক সমকালকে বলেন, বৈশ্বিক করোনায় ব্যবসা-বাণিজ্য যখন নাকাল তখন এই সংবাদটি অবশ্যই দেশের জন্য একটা বড় অর্জন। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের এই মর্যাদার সঙ্গে সামর্থ্যের বিষয়টি জানবে বিশ্ববাসী। এতে দেশের ইমেজ বাড়বে। রপ্তানি বাণিজ্যে সেই সুবিধা পাওয়া যাবে। রপ্তানিকারক উদ্যোক্তারা সেই সুবিধা কাজে লাগাবেন বলে আশা তার। কভিড-১৯-এর কারণে অন্যান্য দেশের মতো যুক্তরাষ্ট্রেও আলোচ্য সময়ে ডেনিম বাণিজ্যের ওপর প্রভাব পড়েছে। গত একই সময়ের তুলনায় আমদানি কম হয়েছে ৩৫ শতাংশ। প্রতিযোগীদের তুলনায় বাড়লেও আগের একই সময়ের তুলনায় বাংলাদেশের রপ্তানিও কমেছে ১২ শতাংশ। এতদিন পর্যন্ত ডেনিম রপ্তানিতে শীর্ষে থাকা মেক্সিকোর রপ্তানি কমেছে ৫৪ শতাংশ। চীনের কমেছে সবচেয়ে বেশি ৭১ শতাংশ। তবে এই প্রবণতার মধ্যেও ব্যতিক্রম শুধু ভিয়েতনাম। যুক্তরাষ্ট্রে দেশটির ডেনিম রপ্তানি বেড়েছে সাড়ে ৬ শতাংশ। ডেনিম ছাড়া অন্যান্য পোশাক রপ্তানিতেও বাংলাদেশের অবস্থান তুলনামূলক ভালো। যুক্তরাষ্ট্রে সার্বিক পোশাক রপ্তানিতে পঞ্চম থেকে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। পেছনে ফেলেছে মেক্সিকো ও ইন্দোনেশিয়াকে। জানুয়ারি থেমে মে পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে ২২৪ কোটি ডলারের পোশাক। যদিও আগের একই সময়ের তুলনায় রপ্তানি কম হয়েছে ১২ শতাংশ। তবে কভিডের কারণে ভিয়েতনাম ছাড়া অন্যান্য দেশের রপ্তানি কমেছে আরও বেশি হারে। শীর্ষে থাকা চীনের রপ্তানি কম হয়েছে ৪৯ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ভিয়েতনামের কমেছে সাড়ে ৯ শতাংশ। মেক্সিকোর কম হয়েছে সাড়ে ৩৭ শতাংশ। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রে পোশাকের আমদানি কম হয়েছে ২৮ শতাংশ। দুই হাজার ৩৯২ কোটি ডলারের পোশাক ব্যবহার করেছেন মার্কিনিরা। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল তিন হাজার ৩১২ কোটি ডলার।