দেশের তৈরি পোশাক খাত সম্পর্কিত খাতে নতুন এক অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘মার্চেন্ট বে’ যাত্রা শুরু করল। শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এক ওয়েবিনারের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ’র সভাপতি ড. রুবানা হক ও এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, সায়েম গ্রুপের সভাপতি মো. মনির হোসেন, সায়েম গ্রুপের পরিচালক ও মার্চেন্ট বে’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবরার হোসেন সায়েম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি ও যুগের চাহিদা অনুযায়ী ডিজিটাল সেবা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মার্চেন্ট বে‘র এমন উদ্যোগ গ্রহণ করায় আমি আনন্দিত। আমি আশা করি, এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা বাইরের দেশের ক্রেতাদের সাথে খুব সহজে যোগাযোগের মাধ্যমে দেশের রপ্তানিখাতে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে পারবেন। এছাড়াও আমি মার্চেন্ট বে কে সাধুবাদ জানাই যে ওনারা কেবল সোর্সিং নয় বরং ব্যবস্থাপনা দক্ষতা বাড়ানোর ব্যপারটাও খেয়াল রেখেছেন। এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, আমি মনে করি মার্চেন্ট বে ই-বিটুবি প্ল্যাটফর্মটি ফ্যাক্টরি ও বায়ার উভয়ের ক্ষেত্রেই সোর্সিং সহজ করবে এবং এটি উভয়ের জন্যই সাশ্রয়ী হবে। এছাড়া এর যে মনিটরিং সিস্টেম আছে তা ব্যবহার করে যে কোনো ব্যবস্থাপক তার কারখানাকে আরও দক্ষতার সাথে পরিচালনা করতে পারবে বলে আমি আশাবাদী। বিজিএমইএ’র সভাপতি ড.রুবানা হক তার বক্তব্যে বলেন, এটি খুবই সময়োপযোগী একটি উদ্যোগ। আমি মনে করি এটি ব্যবহার করে ব্যবসায়ীরা দেশের বাইরের ক্রেতাদের সাথে খুব সহজে যোগাযোগ করতে পারবে। যেহেতু করোনার ফলে বায়ার বিহেভিয়ার পরিবর্তন হচ্ছে, সেহেতু এই বিটুবি প্ল্যাটফর্ম রেডিমেট গার্মেন্টস সেক্টরের সবারই কাজে দেবে বলে আমার বিশ্বাস। উল্লেখ্য মার্চেন্ট বে একটি অনলাইন ভিত্তিক ই-বিটুবি প্ল্যাটফর্ম। ট্রেড ডিজিটাইজেশান,সোর্সিং ডিজিটাইজেশান, উৎপাদন মনিটরিং নিয়েই মার্চেন্ট বের কাজ। ফ্যাক্টরি ও বায়ার উভয়ের পক্ষেই সোর্সিং সহজ করে সাপ্লাই চেইনের ডিজিটাইজেশন নিশ্চিত করতে মার্চেন্ট বে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। মার্চেন্ট বে প্রাথমিকভাবে দেশের তৈরি পোশাক উৎপাদনকারীদের ডিজিটাল প্রোফাইল নির্মাণ, ভেরিফিকেশন ও প্রোফাইলকে বিশ্বব্যাপী ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দিতে কাজ করবে। এছাড়াও ক্রেতাদের সঙ্গে সাপ্লায়ারদের দ্রুত সংযোগ স্থাপন করা, স্বচ্ছতার সঙ্গে আপডেট সরবরাহ, অর্ডার প্রসেসিং এবং উৎপাদন মনিটরিংও করবে মার্চেন্ট বে। প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করে তথ্যনির্ভর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সম্ভব হবে যা সোর্সিংকে আরও সাশ্রয়ী করবে এবং উৎপাদনের সক্ষমতা বাড়াবে। এছাড়াও পোশাক শিল্পের এসএমই ও নতুন উদ্যোক্তাদের সাপ্লাই চেইনকে সচল ও নিরবচ্ছিন্ন রাখতে সহায়তা করবে মার্চেন্ট বে। সেই সঙ্গে তারা যেন নতুন মার্কেটে নিজেদের উপস্থাপনকরতে পারে এবং বিশ্বব্যাপী ক্রেতাদের কাছে নিজেদের তুলে ধরতে পারে সে বিষয়েও সহায়তাকরবে। কারখানা ও ক্রেতার মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করা ছাড়াও মার্চেন্ট বে সাপ্লায়ার ভেরিফিকেশনও উৎপাদন মনিটরিং সিস্টেম নির্মাণ করেছে। মার্চেন্ট বে‘র উৎপাদন মনিটরিং সিস্টেম ব্যবহার করে একজন ব্যবস্থাপক তার কারখানাকে আরও দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করতে পারবে। তৈরি পোশাক খাত বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে আসছে। ডিজিটাল বিপ্লবের এই সময়ে এই খাতটিতে প্রযুক্তিনির্ভর উদ্ভাবনের প্রয়োজনীতা অপরিসীম। ডিজিটাল ট্রেড সলিউশনের মাধ্যমে এই খাতের দক্ষতা ও সক্ষমতা উন্নয়নে মার্চেন্ট বে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। ইতোমধ্যে মার্চেন্ট বে’র কাছে এক হাজারেরও বেশি সাপ্লাইয়ার্সের ডাটাবেস রয়েছে যার মধ্যে ২২ টি শ্রেণিতে সর্বমোট ৫০০ প্লাস ধরনের পণ্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। মার্চেন্ট বে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের ডিজিটাইজেশান, বাজার বৃদ্ধি, বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি ও সক্ষমতা উন্নয়নে কাজ করছে যা বৈশ্বিকভাবে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের সুনাম রক্ষায়বড় ভূমিকা রাখবে।