Home বাংলা নিউজ শ্রমিকদের নগদ সহায়তা বিতরণ অনিশ্চিত

শ্রমিকদের নগদ সহায়তা বিতরণ অনিশ্চিত

মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে এখন পর্যন্ত কত জন শ্রমিক কাজ হারিয়েছেন সেই তথ্য নেই সরকারি-বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে। কাজ হারানো শ্রমিকদের তালিকা করা নিয়েও রয়েছে নীতিমালা সংক্রান্ত জটিলতা। এসব কারণে শ্রমিকদের জন্য দাতাদের দেওয়া সহায়তার অর্থ বিতরণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের শিল্পে কাজ হারানো শ্রমিকদের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জার্মানি সরকার ১ হাজার ১৩৫ কোটি টাকার সহায়তা দিয়েছে। মার্চে করোনাভাইরাসের প্রভাবে হঠাৎ উৎপাদন থেমে যায় পোশাক কারখানায়। সেই ধাক্কায় বন্ধ হয়ে গেছে দুই হাজারের বেশি পোশাক কারখানা। জুনের পর থেকে বাকিগুলো উৎপাদন শুরু করলেও শ্রমিক ছাঁটাই হয়েছে সেখানেও। অন্য সব খাতের মতো কাজ হারিয়েছেন চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য এবং পাদুকা শিল্পের শ্রমিকরাও। যাদের সহায়তায় এগিয়ে আসে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জার্মানি। ১ হাজার ১৩৫ কোটি টাকার সহায়তা দিয়েছে দুই উন্নয়ন সহযোগী। এসব অর্থ বিতরণে একটি নীতিমালাও করেছে শ্রম অধিদপ্তর। এ বিষয়ে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ কে এম মিজানুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ পোশাক উৎপাদক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ), বাংলাদেশ নিট পোশাক উৎপাদক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিকেএমইএ), লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এলএফএমইএবি) ও বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএলএলএফইএ) সদস্য প্রতিষ্ঠানের যেসব শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন সেসব শ্রমিকরা এই সুবিধাটি পাবেন। নীতিমালায় বলা হয়েছে, মার্চের ৮ তারিখের পর থেকে চাকরি হারানো তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য এবং পাদুকা শিল্পের শ্রমিকরা পরবর্তী তিন মাসের জন্য প্রতিমাসে তিন হাজার টাকা করে মোট ৯ হাজার টাকা পাবেন। এই সময়ে শারীরিকভাবে অক্ষম, প্রসূতি, করোনাভাইরাস অথবা অন্য কোনো রোগে আক্রান্ত হলেও দেওয়া হবে সহায়তার অর্থ। তবে ওই তিনমাসে যারা চাকরিতে যোগ দিয়েছেন তারা এই নগদ সহায়তা পাবেন না। এ কে এম মিজানুর রহমান আরও বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসের পে-রোলে যাদের নাম ছিল সেটা হবে শ্রমিকদের ভিত্তি। যারা ওই সব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নাই তাদের তালিকা পাঠাবে সংশ্লিষ্ট শিল্প সংগঠন। সেই তালিকা সংশ্লিষ্টদের কাছে উপস্থাপন করে যদি কোনো ত্রুটি না থাকে তাহলে প্রধান হিসাবরক্ষণ অফিসারের কাছে পাঠানো হবে। জানা গেছে, বরাদ্দকৃত অর্থে ১২ লাখের বেশি শ্রমিককে সহায়তা দেওয়া যাবে। এর জন্য তালিকা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তৈরি পোশাক ও চামড়াখাতের চার শীর্ষ সংগঠনকে। তবে সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের পক্ষে নীতিমালা অনুযায়ী তালিকা তৈরি করা সম্ভব নয়। বিকেএমইএর সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের সবাই কি কর্মহীন আছে? এই নিশ্চয়তা কে দেবে? ধরেন বিকেএমইএ’র একটি কারখানার ছাঁটাই হওয়া শ্রমিক বিজিএমইএ’র একটি কারখানায় যোগ দেয়নি, সেই নিশ্চয়তা কে দেবে? তিনি আরও বলেন, যারা বিজিএমইএ, বিকেএমইএ’র সদস্য না অথবা যেসব কারখানা আমাদের সাব কন্ট্রাক্টে কাজ করছে তাদের শ্রমিকদের সহায়তা দেওয়ার সুযোগ এই নীতিমালায় নেই। আমি মনে করি সেখানে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত আরও অনেক বেশি শ্রমিক। চামড়াজাত ও জুতা রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন বলেন, দেবে মাত্র তিন হাজার টাকা। তার জন্য এই আনুষ্ঠানিকতা, নানা রকমের কেচ্ছা-কাহিনীর কারণে শ্রমিকরাও আগ্রহী না সহায়তা নিতে। আমরা অনেক শ্রমিক ও ট্যানারি মালিকদের বলছি, কারও কোনো আগ্রহ দেখছি না। এসব কারণে নগদ সহায়তা বিতরণ কার্যক্রম বাস্তবায়নে নাম পাঠায়নি দায়িত্বপ্রাপ্ত চার মালিক সংগঠনের তিনটিই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here