Home বাংলা নিউজ মন্দা কাটছে না পোশাকের নতুন বাজারে

মন্দা কাটছে না পোশাকের নতুন বাজারে

কভিড-১৯-এর প্রভাব কাটিয়ে পোশাক খাতের প্রচলিত বাজারে রপ্তানি কিছুটা ইতিবাচক ধারায় ফিরলেও অপ্রচলিত বাজারে মন্দা কাটছে না। ফলে নতুন বাজারে রপ্তানিতে বিশেষ প্রণোদনা দেওয়ার পরও চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে তৈরি পোশাকে আয় কমেছে ৮.৮২ শতাংশ। খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের রপ্তানি আয়ের বেশির ভাগ ইউরোপ এবং আমেরিকা থেকে আসে। করোনায় এসব বাজার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে বড় বাজারগুলোতে ইতিবাচক ধারায় ফিরলেও বিশেষ প্রণোদনার পরও অপ্রচলিত বাজারে আয় বাড়ছে না। এর মূল কারণ অঘোষিত লকডাউন, বড় ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের অনলাইনে বিক্রি এবং খেলাধুলা ও প্রচারণার কাজ বন্ধ থাকা। জানতে চাইলে নিট পোশাক খাতের শীর্ষ সংগঠন বিকেএমইএ সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কভিডের প্রভাবে অপ্রচলিত বাজারগুলোতেও অঘোষিত লকডাউন চলছে। ক্রেতারা ৭৫ শতাংশ অর্ডার কমিয়েছেন। তাঁরা আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চান। তবে করোনার দ্বিতীয় ধাপের শঙ্কার পর প্রকৃত অর্থে বোঝা যাবে পোশাক খাতের বাজারের প্রকৃত হালচাল।’ তিনি আরো বলেন, ‘নিট পোশাক সবচেয়ে বেশি চলে খেলাধুলা, প্রমোশন এবং পর্যটকদের মধ্যে। কিন্তু করোনায় সারা বিশ্বে এসব প্রমোশন একেবারে বন্ধ।

ফলে গত তিন মাসে নতুন বাজারগুলোতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।’ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুসারে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বরে) অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাকের আয় কমেছে ৮.৮২ শতাংশ। এ সময় নিট ও ওভেন পোশাকে আয় হয় ১২৪ কোটি ডলার। এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে আয় হয় ১৩৬ কোটি ডলার। জুলাই-সেপ্টেম্বরে অপ্রচলিত বাজারগুলোতে রপ্তানি আয় কমেছে যথাক্রমে ব্রাজিল ২৬.৮৮ শতাংশ, চিলিতে ১৮.৩৭ শতাংশ, চীনে ৩৪.৩৫ শতাংশ, ভারতে ৪৩.৫০ শতাংশ, জাপানে ১০.৯৩ শতাংশ এবং মেক্সিকোতে কমেছে ২৫.৭২ শতাংশ। তবে এ সময় আয় বেড়েছে অস্ট্রেলিয়ায় ৮.২৮ শতাংশ, কোরিয়ায় ৯.২২ শতাংশ, রাশিয়ায় ৪১.৬৯ শতাংশ, দক্ষিণ আফ্রিকায় ৪.১৯ শতাংশ এবং তুরস্কে বেড়েছে ৪৭.৭৪ শতাংশ। এ ছাড়া পোশাক খাতের অন্যতম প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্রে আয় বেড়েছে ৫.৯৮ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে প্রথম প্রান্তিকে আয় হয়েছে ১৫৮ কোটি ডলার। এদিকে রপ্তানি আয়ের প্রধান বাজার ইউরোপে ১.৫৮ শতাংশ আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০০ কোটি ডলারের বেশি। এ সময় কানাডায় রপ্তানি হয়েছে ২৭ কোটি ডলারের কিছুটা বেশি। গত অর্থবছরে (২০১৯-২০) তৈরি পোশাক খাত থেকে মোট রপ্তানি আয় হয় দুই হাজার ৭৯৪ কোটি ডলারের পণ্য। এর মধ্যে অপ্রচলিত বাজার থেকে আয় হয় ৪৭৮ কোটি ডলার, যা মোট আয়ের ১৭.১০ শতাংশ। জানতে চাইলে বিজিএমইএ সাবেক সহসভাপতি মোহাম্মদ নাসির কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে বিশ্ববাজারে তৈরি পোশাকের চাহিদা এমনিতেই কিছুট কমে আসছিল। এর ওপর কভিড-১৯-এর প্রভাবের ফলে অবস্থা আরো খারাপ হয়েছে। এ ছাড়া ব্রাজিলসহ বেশ কিছু অপ্রচলিত বাজারে বেশি শুল্কের কারণে রপ্তানিতে আরো বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।’ বিকেএমইএ সহসভাপতি ফজলে এহসান শামীম বলেন, ‘করোনার শুরুতে প্রচলিত বাজারে যে হারে পোশাকের ক্রয়াদেশ বাতিল বা স্থগিত হয়। সেসব অর্ডার ফের ক্রেতারা ফিরিয়ে নেওয়ায় প্রচলিত বাজারে রপ্তানি আয় বেড়েছে। অন্যদিকে অপ্রচলিত বাজারে তেমন ক্রয়াদেশও ছিল না। এ ছাড়া বিশ্বের বড় বড় ক্রেতা প্রতিষ্ঠান তাদের স্টল বন্ধ করলেও অনলাইনে বিক্রি বাড়িয়েছে। ফলে এসব কারণে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে পোশাক খাতের অপ্রচলিত বাজারে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here