দেশের তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের বেশিরভাগেই নারী। কিন্তু কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্য এখনো প্রকটভাবে বিরাজ করছে এবং এর প্রধান শিকার হলো নারী। কর্মক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত নারীদের অসংখ্য প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। এ প্রতিবন্ধকতা উওরণের অংশ হিসেবে ১৩ নভেম্বর ঢাকার মিরপুর কৃষি ব্যাংক ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে তৈরি পোশাক শিল্পে নারী নেতৃত্বের ভূমিকা ও জেন্ডার বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে ঢাকায় অবস্থিত বিভিন্ন পোশাক কারখানার মালিক, শ্রমিক ও কর্মকর্তারা অংশ নেন। সেমিনারটি আয়োজন করে ওশ ইনিশিয়েটিভ ফর ওয়ার্কার্স অ্যান্ড কমিউনিটি প্রকল্প। প্রকল্পটি গত চার বছর ধরে কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা ও শোভন কর্মপরিবেশ নিয়ে কাজ করছে। সেমিনারে পোশাক শিল্পে জেন্ডার সহিংসতা নিরসন ও সেইফটি কমিটির ভূমিকা নিয়ে প্রবন্ধ পাঠ করেন করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক এ কে এম সালাউদ্দিন। এছাড়া এ শিল্পে নারী নেতৃত্বের ভূমিকা, কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য ও শোভন কর্ম পরিবেশ নিয়ে প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন প্রকল্প কর্মকর্তা মো. মাসুদ পারভেজ, রিয়াদ আরিফ ও হাফিজুর রহমান। সেমিনারে অংশ নেয়া একজন নারী শ্রমিক জানান, একজন কর্মজীবী নারীকে দ্বৈত ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হয়। একদিকে সংসারের যাবতীয় কর্ম, অন্যদিকে অফিস সামলানো। তবু নারীদের কাজ সমাজ না দেখার ভান করে এবং তাদের কাজগুলোকে ‘কম গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়’। তিশা নামের আরেক কর্মী জানান, নারী কর্মীদের কর্মক্ষেত্রে প্রচণ্ড মানসিক চাপের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। ফলে মনোযোগ কমে যায় এবং উৎপাদনশীলতা হ্রাসের এটি একটি বড় কারণ। সেমিনারে মিড লেভেল বা মধ্যম সারি পর্যায়ে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়। এছাড়া সামাজিক এবং দৈনন্দিন জীবনযাপনকে সামনে রেখে প্রত্যেক ফ্যাক্টরিতেই ওয়ার্ক লাইফ ব্যালেন্স পলিসি গ্রহণ ও ঢাকা এবং তার পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে গার্মেন্টস কর্মীদের জন্য আলাদা আবাসন ব্যবস্থা চালুর আহ্বান জানানো হয়।