দেশের রপ্তানি খাতে আবারও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ফলে সদ্যোবিদায়ি মাস নভেম্বরে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় দেশের রপ্তানি আয় কমেছে ৮.২০ শতাংশ। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী কয়েক মাস খারাপ যেতে পারে। চলতি অর্থবছরের নভেম্বর মাসে লক্ষ্যমাত্রা ৩৩৫ কোটি ৪০ লাখ ডলারের বিপরীতে আয় হয়েছে ৩০৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার। গতকাল বৃহস্পতিবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, গত বছরের নভেম্বরের চেয়ে রপ্তানি আয় সামান্য (০.৭৬ শতাংশ) বেড়েছে। গত বছরের নভেম্বরে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩০৫ কোটি ৫৯ লাখ ডলারের। অর্থাৎ আলোচ্য সময়ে বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ২০০ কোটি টাকার। এ ছাড়া ইপিবির হিসাব অনুযায়ী চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাস জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে সার্বিকভাবে বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ১ শতাংশ (০.৯৩%)। গত পাঁচ মাসে বাংলাদেশ বিশ্ববাজারে মোট রপ্তানি করেছে এক হাজার ৫৯২ কোটি ৩৬ লাখ ডলারের পণ্য। আগের অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানির পরিমাণ ছিল এক হাজার ৫৭৭ কোটি ৭১ লাখ ডলারের পণ্য। জানতে চাইলে এই খাতের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে আগামী তিন মাস ভয়াবহ অবস্থা যাবে। তবে পরে সামনের দিনগুলোতে ধীরে ধীরে আবারও ঘুরে দাঁড়াবে। এই বছর টিকে থাকার ব্যবসা করার বছর নয়। ইপিবির পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত পাঁচ মাসে সার্বিকভাবে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেছে ১.৪৮ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে এক হাজার ২৮৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলারের। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এই খাতের রপ্তানির পরিমাণ ছিল এক হাজার ৩০৮ কোটি ৮৭ লাখ ডলারের। তৈরি পোশাক ছাড়াও গত পাঁচ মাসে রপ্তানি কমার তালিকায় রয়েছে হিমায়িত খাদ্য ১.১২ শতাংশ, প্লাস্টিক পণ্য ১০ শতাংশ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য ৮.৩২ শতাংশ, বিশেষায়িত টেক্সটাইল ২.১৬ শতাংশ, সমুদ্রগামী জাহাজ ৭১ শতাংশ। অন্যদিকে আলোচ্য সময়ে রপ্তানি বাড়ার তালিকায় রয়েছে কৃষিজাত পণ্য ০.২৫ শতাংশ, কেমিক্যাল পণ্য ১৮.৩৫ শতাংশ, হস্তশিল্প পণ্য ৪৭ শতাংশ, পাট ও পাটজাত পণ্য ৩৭ শতাংশ, হোম টেক্সটাইল ৫১ শতাংশ এবং অন্যান্য খাতের পণ্য ১.৯৭ শতাংশ।