বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে পাকিস্তান। বুধবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সঙ্গে সাক্ষাতকালে ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী এ আগ্রহ প্রকাশ করেন। এসময় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য চলমান। বাংলাদেশ থেকে চা, ফার্মাসিউটিক্যালস পণ্য, তৈরি পোশাক, সিরামিক পণ্য, জুতা, চামড়াজাত ও পাটজাত পণ্য পাকিস্তানে রফতানি হয়। এ রফতানি আরও বৃদ্ধি করার সুযোগ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক, সামাজিকসহ সকল ক্ষেত্রে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। সেগুলো দূর করা গেলে বাণিজ্য আরও বাড়বে। উভয় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি করার বিপুল সম্ভাবনা ও সুযোগ রয়েছে। এ সুযোগকে কাজে লাগানো যায়।’তিনি বলেন, ‘অতি সম্প্রতি হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড রফতানির ক্ষেত্রে পাকিস্তান অ্যান্টিডাম্পিং আরোপ করেছে। এ ধরনের পদক্ষেপ বাণিজ্য বিকাশে বাধা। আলোচনার মাধ্যমে বিরাজমান যেকোনো সমস্যা সমাধান করা যেতে পারে। উভয় দেশের মধ্যে গঠিত জয়েন্ট ইকোনমিক কমিশনের (জেইসি) সভায় সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধান করা সম্ভব। বাণিজ্য বৃদ্ধিতে ব্যবসায়ীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ব্যবসায়ীগণ দুই দেশ সফর করে বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে পারেন। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করা যেতে পারে।’হাইকমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, ‘পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়ন করে সামনে এগিয়ে যেতে চায়। উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির প্রচুর সুযোগ রয়েছে। উভয় দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রেখে ব্যবসায়ীক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে আগ্রহী পাকিস্তান। বাংলাদেশের তৈরি সিরামিক পণ্য পাকিস্তানের বিভিন্ন সরকারি দফতরে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তৈরি পোশাক, ফার্মাসিউটিক্যালস পণ্য, পাটজাত ও চামড়াজাত পণ্যের বিপুল চাহিদা রয়েছে পাকিস্তানে।’তিনি পাকিস্তানিদের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক কাজে বাংলাদেশ সফরের ভিসা সহজ এবং পণ্য পরিবহনে ঢাকা-করাচি সরাসরি যোগাযোগ চালুর অনুরোধ করেন। তিনি পাকিস্তানে বাংলাদেশি পণ্যের সিঙ্গেল কান্ট্রি ফেয়ার করার আহ্বান জানান এবং জয়েন্ট ইকোনমিক কমিশনের (জেইসি) ৯ম সভা অনুষ্ঠানের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।উল্লেখ্য, গত ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে বাংলাদেশ পাকিস্তানে ৫০ দশমিক ৫৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রফতানি করেছে। একই সময়ে আমদানি করেছে ৫৪৩ দশমিক ৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাণিজ্য জটিলতা দূর হলে পাকিস্তানের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য রফতানি আরও বাড়বে।