বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো নামকরা ব্র্যান্ডের বাংলাদেশের অফিসগুলোও কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটছে। বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বড় তৈরি পোশাক পণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এইচঅ্যান্ডএম তাদের ঢাকা অফিসে শতাধিক কর্মী ছাঁটাই করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এর বাইরে ঢাকায় কর্মরত অন্যান্য বড় ব্র্যান্ডও একই চিন্তা করছে। ফলে সাধারণ পোশাককর্মীর মতো নামকরা ব্র্যান্ড অফিসে চাকরি করা কর্মীদের মধ্যে অস্বস্তি ও দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে। করোনা অতিমারিতে ব্র্যান্ডগুলোর আয় কমে যাওয়া ছাড়াও বড় ধরনের রূপান্তর কার্যক্রমও এর পেছনে কাজ করছে।সুইডেনভিত্তিক নামকরা ব্র্যান্ড এইচঅ্যান্ডএম বাংলাদেশ থেকে বছরে ৩০০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি পণ্য আমদানি করে। প্রতিষ্ঠানটির ঢাকার অফিসে প্রায় সাড়ে ৬০০ কর্মী কাজ করেন। সম্প্রতি ১০১ জন কর্মীকে ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয় তারা। কেবল বাংলাদেশ নয়, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়ায়ও তারা কর্মী ছাঁটাই করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে বিভিন্ন ধাপে সহকারী মার্চেন্ডাইজার, মার্চেন্ডাইজার, সিনিয়র মার্চেন্ডাইজার ও ম্যানেজার দায়িত্ব পালন করেন। কর্মী ছাঁটাইয়ের পর এখন ধাপ কমিয়ে আনা হচ্ছে। অন্যদিকে কোয়ালিটি কন্ট্রোলসহ কিছু দায়িত্ব পোশাক সরবরাহকারী কারখানার ওপর দেওয়া হচ্ছে। ফলে কারখানাগুলোর দায়িত্ব বাড়বে। এসব কাজে এখন তাদের বাড়তি লোকবল নিয়োগ দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অর্থাৎ ব্র্যান্ডদের এ খাতের ব্যয়ের একটি অংশ চলে যাচ্ছে রপ্তানিকারকের ঘাড়ে।যোগাযোগ করা হলে এইচঅ্যান্ডএমের ঢাকা অফিসের প্রধান জিয়াউর রহমান বলেন, আমাদের পুরো কার্যক্রমে কিছু কাঠামোগত রূপান্তর হচ্ছে। এ কারণে লোকবলের প্রয়োজন কমছে। তবে পুরো প্রক্রিয়া শ্রম আইন মেনে করা হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে কর্মীদের বিদ্যমান শ্রম আইনের বাইরেও সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ব্যবসা খারাপের জন্য নয়; বরং কাঠামোগত পরিবর্তনের কারণে লোকবলের প্রয়োজন কমছে।বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের ছোট-বড় চার শতাধিক প্রতিষ্ঠান পোশাক পণ্য ক্রয় করে। এর মধ্যে এইচঅ্যান্ডএম ছাড়াও মার্কস অ্যান্ড স্পেন্সারসহ বেশ কয়েকটি ব্র্যান্ডের অফিস রয়েছে ঢাকায়। তারা সরাসরি ক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করে পণ্য ক্রয় করে। ঢাকা অফিসের কর্মীরা এটি দেখভাল করেন। এইচঅ্যান্ডএমের কর্মী ছাঁটাইয়ে অন্যান্য ব্র্যান্ডের ঢাকা অফিসের কর্মীরাও শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন।