Home বাংলা নিউজ দক্ষিণ কোরিয়ায় শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা চাইলেন বাণিজ্যমন্ত্রী

দক্ষিণ কোরিয়ায় শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা চাইলেন বাণিজ্যমন্ত্রী

বাণিজ্য ব্যবধান কমাতে দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা চেয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রীর কার্যালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জাং কিউনের সঙ্গে সাক্ষাতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণের বিষয়ে কথা বলেন তিনি। মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জাং কিউন এবং ঢাকায় ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিনচেন কুয়েন্টশিলের সঙ্গে দুটি আলাদা বৈঠকে বাণিজ্য সম্প্রসারণের বিভিন্ন দিক নিয়ে আালোচনা করেন। বাণিজ্যমন্ত্রী কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতকে বলেন, উভয় দেশ উদ্যোগ নিলে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর অনেক সুযোগ রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া উন্নয়নশীল দেশগুলোকে শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা দিচ্ছে। বাংলাদেশও উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশকে শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা দিলে রপ্তানি বাড়বে এবং দুই দেশের বাণিজ্য ব্যবধান কমবে। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ দক্ষিণ কোরিয়ায় ৩৭০.৬৪ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে, একই সময়ে আমদানি করেছে ১৩১৫.২৫ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য। “দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশের বন্ধুরাষ্ট্র এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের। দক্ষিণ কোরিয়ার অনেক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে কাজ করছে। দক্ষিণ কোরিয়ার অনেক পণ্যের বিপুল চাহিদা রয়েছে বাংলাদেশে। এখানে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার, এ বিনিয়োগ আরও বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। তৈরি পোশাক, ইলেক্ট্রনিক পণ্য উৎপাদনের পাশাপাশি নির্মাণ কাজেও দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে,” বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী। দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ কোরিয়ার বন্ধুরাষ্ট্র, বড় ব্যবসায়িক অংশীদার। এদেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রচুর সুযোগ রয়েছে, এ সুযোগকে কাজে লাগাতে চায় দক্ষিণ কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়া চট্রগ্রামে কেইপিজেড বাস্তবায়ন করছে, এখানে বড় ধরনের বিনিয়োগ রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য কাজ করছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সঙ্গে সাক্ষাতে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জাং কিউন।

সরাসরি বাণিজ্য চায় ভুটান

বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পৃথক বৈঠকে গত ৬ ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত প্রিফারেন্সিয়াল ট্রেড এগ্রিমেন্টের (পিটিএ) অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করেন ঢাকায় ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিনচেন কুয়েন্টশিল। তিনি বলেন, স্বাক্ষরিত পিটিএ’র সুবিধা গ্রহণের জন্য ভুটান সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করছে। আসন্ন জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভায় প্রয়োজনীয় সব কাজ সম্পন্ন করা হবে। পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে তৃতীয় কোনো পক্ষের সহযোগিতা ছাড়াই সরাসরি বাণিজ্য করা যেতে পারে। বাণিজ্য সহজ ও দ্রুত করতে বাংলাদেশের বুড়িমারি, বাংলাবান্ধা, সোনাহাট ও আখাউড়া স্থলবন্দরের সক্ষমতা ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করার আহ্বান জানান ভুটানের প্রতিনিধি। বাংলাদেশ থেকে কৃষি কাজে ব্যবহারের জন্য রাসায়নিক সার আমদানির আগ্রহ দেখান তিনি। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ভুটান স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম স্বীকৃতি দানকারী দেশ। ভুটানের সাথেই বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো পিটিএ স্বাক্ষর করে। উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধির অনেক সুযোগ রয়েছে। “এ সুযোগকে কাজে লাগানোর জন্য আমরা পিটিএ স্বাক্ষর করেছি। যত দ্রুত সম্ভব উভয় দেশের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে পিটিএ’র সুবিধা কাজে লাগাতে চাই।” আগামী মার্চে পিটিএ চুক্তির অধীনে তৈরি হওয়া সম্ভাবনাগুলো পর্যালোচনা করতে ‘জয়েন্ট ওয়াকিং গ্রুপের’ বৈঠক হতে যাচ্ছে বলে জানায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ভুটান থেকে নির্মাণ সামগ্রী আমদানি করে থাকে। ভুটানের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, প্লাইউড, মিনারেল ওয়াটার, জুস, ওষুধ, শুকনা খাবারসহ অনেক পণ্যের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ ভুটানে ৭.৫৬ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে। একই সময়ে আমদানি করেছে ৪৯.৯০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here