তৈরি পোশাক খাতের সংগঠন বিজিএমইএর আসন্ন নির্বাচনে কোনো কারচুপি বা অনিয়মের শঙ্কা নেই মন্তব্য করে সংগঠনটির প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, এবার একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। কোনো অনিয়ম হবে না। বিজিএমইএ নির্বাচন ২০২১-২৩ উপলক্ষে প্রেস ব্রিফিং ও সম্মিলিত পরিষদের নির্বাচনী অফিস উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এই কথা বলেন। বিজিএমইএর অন্য আরেকটি প্যানেল ‘স্বাধীনতা পরিষদ’ অভিযোগ করে বলেছে, গত নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। এমন অভিযোগের বিষয়ে সালাম মুর্শেদী বলেন, গত নির্বাচনে সমস্যা হয়েছে কি না আমি জানি না। অভিযোগকারীরা এটা হয়ত বাড়িয়ে বলেছে। আমি তাদের উদ্দেশে বলি, এবার কোনো ধরনের অনিয়ম হবে না। আশা করি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। গত নির্বাচনে সালাম মুর্শেদী দেশের বাইরে থাকায় তার ভোটও কাস্ট হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে একটি প্যানেলের। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, না। এটা তাদের মুখরোচক কথা। বিজিএমইএতে কেউ কারো ভোট দিতে পারে না। অতীতে যেভাবে সুষ্ঠু ভোট হয়েছে। এবারও সেভাবেই হবে। বিজিএমইএর অন্য প্যানেল ‘ফোরাম’ সম্প্রতি অভিযোগ করে বলেছে, অতীতে বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদ বিজিএমইএর ক্ষমতাকে উপরে উঠার সিঁড়ি হিসাবে ব্যবহার করেছে। রাজনীতিতে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করেছে। এ বিষয়ে বিজিএমইএর সাবেক এই সভাপতি বলেন, পোশাক খাতে কমপক্ষে ১৫ জন এমপি, ৪ জন মন্ত্রী ও একজন মেয়র রয়েছেন। তারা বিজিএমইএকে ব্যবহার করে নয়, নিজেদের সক্ষমতায় যোগ্য স্থানে পৌঁছেছে। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, আঙ্গুর ফল টক। নিজে না পেলে এমন অভিযোগই করে সবাই। আমি মনেকরি, এ কথা বলে তারা পোশাক খাতকে ছোট করেছেন। আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, নির্বাচন নিয়ে অনেকেই কটু মন্তব্য করছেন। অনেকেই বলছেন, আপডেট ছবিসহ ভোটার তালিকা করার কথা বলা হচ্ছে এবং ডিজিটাল ভোটার আইডি কার্ড বা বায়োমেট্রিকের কথা বলা হচ্ছে। তবে যেকোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হলে অবশ্যই সেটা এজিএম করে পাস করে আনতে হয়, যেটা বর্তমান বোর্ড করেনি। তাই বায়োমেট্রিকের কোনো সু্যোগ নেই। তবে গত নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা বলতে চাননি সম্মিলিত পরিষদের প্যানেল লিডার ফারুক হাসান। তিনি বলেন, আমি অতীত নিয়ে বলবো না। সামনে কী করতে পারবো তা নিয়েই শুধু ভাববো। তিনি বলেন, আমরা নির্বাচিত হলে পোশাক খাত উন্নয়নে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বাজার সমৃদ্ধ করা ও ব্র্যান্ডিংয়ের আওতা বাড়ানো হবে।
টেকসই ব্যবসা গড়ে তুলতে হবে তাই বায়ার মালিক সম্পর্ক বাড়ানোর দিকে নজর দিতে চাই এমন আশ্বাস দিয়ে ফারুক হাসান বলেন, আমাদের মার্কেট শেয়ার ছিল ৬ দশমিক ৮ শতাংশ, সরকারের আর্থিক সহয়তায় সেটা বেড়ে ১৬ শতাংশে এসেছিল। সেটা সম্প্রতি আবারও কমেছে, আমরা বিজয়ী হলে আবারও মার্কেট শেয়ার বাড়াতে কাজ করবো। বাংলাদেশের পণ্যে বৈচিত্র্য এনে নতুন বাজার খোঁজার চেষ্টা করা হবে এবং জিএসপি প্লাস পাওয়ার জন্য ইইউর সাথে যোগাযোগ বাড়াবো। পোশাক শ্রমিকদের বিষয়ে ফারুক হাসান বলেন, শ্রমিকদের দক্ষতা উন্নয়নে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হবে। তাদের অন্যান্য সুবিধাগুলোও প্রয়োজন অনুযায়ী বাড়ানোর উদ্যোগ থাকবে। সরকারের সাথে নীতি সহায়তা নিয়ে আলোচনা করে এ খাতকে এগিয়ে নেয়া প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন তিনি বলেন, করোনা সংকটে দেয়া প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণের অর্থ পরিশোধের সময় আরো ৬ মাস বাড়ানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, সেক্রেটারি জেনারেল ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম প্রমুখ।