দেশের প্রধান রফতানি খাত তৈরি পোশাক। করোনাকালে খাতটির রফতানিতে ব্যাপক ধস দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। বিশেষ করে তৈরি পোশাকের একক ও বৃহত্তম রফতানি গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে এ ক্ষতি ব্যাপক মাত্রায় অনুভূত হয়েছে। মার্কিন সরকারের পরিসংখ্যান বলছে, করোনার কারণে গত বছর দেশটিতে বাংলাদেশের রফতানি কমেছে ১০ শতাংশেরও বেশি। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রফতানিতে ভিয়েতনামের অর্ধেকেও পৌঁছতে পারেনি বাংলাদেশ। জার্মানিভিত্তিক ভোক্তাপণ্য ও বাজার পরিসংখ্যান প্রতিষ্ঠান স্ট্যাটিস্টার তথ্য বলছে, ২০২০ সালে পোশাকের বৈশ্বিক বাজারের আকার ছিল দেড় লাখ কোটি ডলারের। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি প্রতি বছর বহির্বিশ্ব থেকে ৮ হাজার ৩০০ কোটি ডলারেরও বেশি পোশাক পণ্য আমদানি করে। যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রফতানিতে বৃহত্তম উৎস দেশ চীন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশ। কভিডকালের আগে থেকেই মার্কিন পোশাকের বাজার ছিল টালমাটাল। বিশ্বখ্যাত অনেক ক্রেতাই নাজুক আর্থিক অবস্থার দরুন বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়াসহ আদালতে দেউলিয়াত্বের আবেদন করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এমন পরিস্থিতির মধ্যে করোনার আঘাত দেশটির তৈরি পোশাক আমদানিতে বড় ধরনের ধস নামায়। এর ধারাবাহিকতায় অবধারিতভাবেই দেশটিতে বাংলাদেশ থেকে পোশাক রফতানি হ্রাস পেয়েছে। একইভাবে কমেছে মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনামের পোশাক রফতানিও। তবে এ হার বাংলাদেশের চেয়ে কম। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানির দিক থেকে ভিয়েতনামের চেয়েও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলাদেশ। মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন অফিস অব টেক্সটাইলস অ্যান্ড অ্যাপারেলসের (ওটিইএক্সএ) পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৯ সালে বিশ্ববাজার থেকে ৮ হাজার ৩৭০ কোটি ৫০ লাখ ডলারের পোশাক আমদানি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। সেখান থেকে ২৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ কমে গত বছর এ আমদানির পরিমাণ দাঁড়ায় ৬ হাজার ৪০৭ কোটি ডলারে। এ সময় শীর্ষ ১০ উৎস দেশের মধ্যে নয়টি থেকেই আমদানি কমিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বাড়িয়েছে শুধু কম্বোডিয়া থেকে। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রে ভিয়েতনাম থেকে তৈরি পোশাক রফতানি ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৫৭ কোটি ডলারে। অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে এ রফতানির পরিমাণ নেমে এসেছে ভিয়েতনামের অর্ধেকেরও নিচে। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের ১১ দশমিক ৭৩ শতাংশ কমে নেমে এসেছে প্রায় ৫২৩ কোটি ডলারে। এ সময় শীর্ষ ১০ উৎস দেশের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র পোশাক আমদানি সবচেয়ে বেশি কমিয়েছে চীন থেকে। গত বছর চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি কমেছে ৩৯ শতাংশের বেশি। রফতানিকারকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রফতানির দিক থেকে বাংলাদেশের চেয়ে ভিয়েতনাম সব সময়ই এগিয়ে ছিল। কিন্তু কভিড-১৯ মহামারীর প্রভাবে প্রতিযোগিতায় দুই দেশের মধ্যে ব্যবধান আরো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তৈরি পোশাক খাতের উত্তরণ এবং ভবিষ্যতের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির মতো বড় বাজারগুলোই ভরসা কিনা-এ প্রশ্নের বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, যেহেতু গুটিকয়েক পণ্য ও বাজারে অতিরিক্ত কেন্দ্রীভূত একটি শিল্প বা অর্থনীতির জন্য স্বাস্থ্যকর নয়, তাই আমি মনে করি বাজারে বৈচিত্র্য আনা এখন খাতের টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে একটি মৌলিক প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কভিড-১৯ ও বৈশ্বিক মন্দা আমাদের এ বাস্তবতা বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছে। অপ্রচলিত বাজারে আমাদের রফতানি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে এ মহামারীর ক্ষতি থেকে ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারই প্রবৃদ্ধি ও পুনরুদ্ধারের উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশ্লেষকরা বলছেন, রফতানি খাতের প্রধান পণ্য পোশাক। মূলত এ পণ্যটিই দেশের রফতানির গতিপ্রকৃতির মূল চালক হিসেবে ভূমিকা রাখছে। মহামারীজনিত মন্দা কাটানোর বিষয়টিও অনেকটা এর ওপরেই নির্ভর করছে। সেক্ষেত্রে এখানকার পোশাকের প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্রে যদি রফতানির ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকে, তাহলেই দেশের রফতানি খাতের পুনরুদ্ধার হবে, নইলে হবে না। কারণ তাদের মতে, যে দেশ বা অঞ্চলেরই হোক না কেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ভোক্তা বা গ্রাহকের ক্রয়ের অভ্যাস ও ক্ষমতা একটি বড় নিয়ামক। তাই ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা থাকলে সেটার ব্যবহার করতে হবে। এক্ষেত্রে বড় বাজারগুলোর তুলনামূলক বিশ্লেষণ তুলে ধরে তারা বলছেন, জাপান মোটেও কম ধনী নয়। কিন্তু দেশটির ভোক্তারা এত বেশি পরিমাণে পোশাক কেনেন না। পোশাক সবচেয়ে বেশি ক্রয় করেন যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তারা। এক্ষেত্রে প্রধান নিয়ামক ক্রয়াভ্যাস। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাপান বাদ দিলে বড় বাজারগুলোর মধ্যে থাকে ভারত। কিন্তু ভারত নিজেই পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক। আবার বাংলাদেশের প্রতিযোগীও বটে। তুরস্কও বাংলাদেশের প্রতিযোগী। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ায় জনসংখ্যা কম হওয়ায় দেশটির ক্রয়াদেশগুলোও ছোট আকারের।দেশের প্রধান রফতানি খাত তৈরি পোশাক। করোনাকালে খাতটির রফতানিতে ব্যাপক ধস দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। বিশেষ করে তৈরি পোশাকের একক ও বৃহত্তম রফতানি গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে এ ক্ষতি ব্যাপক মাত্রায় অনুভূত হয়েছে। মার্কিন সরকারের পরিসংখ্যান বলছে, করোনার কারণে গত বছর দেশটিতে বাংলাদেশের রফতানি কমেছে ১০ শতাংশেরও বেশি। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রফতানিতে ভিয়েতনামের অর্ধেকেও পৌঁছতে পারেনি বাংলাদেশ। জার্মানিভিত্তিক ভোক্তাপণ্য ও বাজার পরিসংখ্যান প্রতিষ্ঠান স্ট্যাটিস্টারের তথ্য বলছে, ২০২০ সালে পোশাকের বৈশ্বিক বাজারের আকার ছিল দেড় লাখ কোটি ডলারের। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি প্রতি বছর বহির্বিশ্ব থেকে ৮ হাজার ৩০০ কোটি ডলারেরও বেশি পোশাক পণ্য আমদানি করে। যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রফতানিতে বৃহত্তম উৎস দেশ চীন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশ। কভিডকালের আগে থেকেই মার্কিন পোশাকের বাজার ছিল টালমাটাল। বিশ্বখ্যাত অনেক ক্রেতাই নাজুক আর্থিক অবস্থার দরুন বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়াসহ আদালতে দেউলিয়াত্বের আবেদন করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এমন পরিস্থিতির মধ্যে করোনার আঘাত দেশটির তৈরি পোশাক আমদানিতে বড় ধরনের ধস নামায়। এর ধারাবাহিকতায় অবধারিতভাবেই দেশটিতে বাংলাদেশ থেকে পোশাক রফতানি হ্রাস পেয়েছে। একইভাবে কমেছে মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনামের পোশাক রফতানিও। তবে এ হার বাংলাদেশের চেয়ে কম। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানির দিক থেকে ভিয়েতনামের চেয়েও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলাদেশ। মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন অফিস অব টেক্সটাইলস অ্যান্ড অ্যাপারেলসের (ওটিইএক্সএ) পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৯ সালে বিশ্ববাজার থেকে ৮ হাজার ৩৭০ কোটি ৫০ লাখ ডলারের পোশাক আমদানি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। সেখান থেকে ২৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ কমে গত বছর এ আমদানির পরিমাণ দাঁড়ায় ৬ হাজার ৪০৭ কোটি ডলারে। এ সময় শীর্ষ ১০ উৎস দেশের মধ্যে নয়টি থেকেই আমদানি কমিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বাড়িয়েছে শুধু কম্বোডিয়া থেকে। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রে ভিয়েতনাম থেকে তৈরি পোশাক রফতানি ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৫৭ কোটি ডলারে। অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে এ রফতানির পরিমাণ নেমে এসেছে ভিয়েতনামের অর্ধেকেরও নিচে। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের ১১ দশমিক ৭৩ শতাংশ কমে নেমে এসেছে প্রায় ৫২৩ কোটি ডলারে। এ সময় শীর্ষ ১০ উৎস দেশের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র পোশাক আমদানি সবচেয়ে বেশি কমিয়েছে চীন থেকে। গত বছর চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি কমেছে ৩৯ শতাংশের বেশি। রফতানিকারকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রফতানির দিক থেকে বাংলাদেশের চেয়ে ভিয়েতনাম সব সময়ই এগিয়ে ছিল। কিন্তু কভিড-১৯ মহামারীর প্রভাবে প্রতিযোগিতায় দুই দেশের মধ্যে ব্যবধান আরো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তৈরি পোশাক খাতের উত্তরণ এবং ভবিষ্যতের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির মতো বড় বাজারগুলোই ভরসা কিনা- এ প্রশ্নের বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, যেহেতু গুটিকয়েক পণ্য ও বাজারে অতিরিক্ত কেন্দ্রীভূত একটি শিল্প বা অর্থনীতির জন্য স্বাস্থ্যকর নয়, তাই আমি মনে করি বাজারে বৈচিত্র্য আনা এখন খাতের টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে একটি মৌলিক প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কভিড-১৯ ও বৈশ্বিক মন্দা আমাদের এ বাস্তবতা বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছে। অপ্রচলিত বাজারে আমাদের রফতানি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে এ মহামারীর ক্ষতি থেকে ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারই প্রবৃদ্ধি ও পুনরুদ্ধারের উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশ্লেষকরা বলছেন, রফতানি খাতের প্রধান পণ্য পোশাক। মূলত এ পণ্যটিই দেশের রফতানির গতিপ্রকৃতির মূল চালক হিসেবে ভূমিকা রাখছে। মহামারীজনিত মন্দা কাটানোর বিষয়টিও অনেকটা এর ওপরেই নির্ভর করছে। সেক্ষেত্রে এখানকার পোশাকের প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্রে যদি রফতানির ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকে, তাহলেই দেশের রফতানি খাতের পুনরুদ্ধার হবে, নইলে হবে না। কারণ তাদের মতে, যে দেশ বা অঞ্চলেরই হোক না কেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ভোক্তা বা গ্রাহকের ক্রয়ের অভ্যাস ও ক্ষমতা একটি বড় নিয়ামক। তাই ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা থাকলে সেটার ব্যবহার করতে হবে। এক্ষেত্রে বড় বাজারগুলোর তুলনামূলক বিশ্লেষণ তুলে ধরে তারা বলছেন, জাপান মোটেও কম ধনী নয়। কিন্তু দেশটির ভোক্তারা এত বেশি পরিমাণে পোশাক কেনেন না। পোশাক সবচেয়ে বেশি ক্রয় করেন যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তারা। এক্ষেত্রে প্রধান নিয়ামক ক্রয়াভ্যাস। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাপান বাদ দিলে বড় বাজারগুলোর মধ্যে থাকে ভারত। কিন্তু ভারত নিজেই পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক। আবার বাংলাদেশের প্রতিযোগীও বটে। তুরস্কও বাংলাদেশের প্রতিযোগী। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ায় জনসংখ্যা কম হওয়ায় দেশটির ক্রয়াদেশগুলোও ছোট আকারের। সূত্র: বণিক বার্তা।