রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) কার্যরত দেশি-বিদেশি যৌথ মালিকানার পোশাক কারখানাগুলোও রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) থেকে ঋণ নিতে পারবে। এতদিন কেবল ইপিজেডভুক্ত দেশি কোম্পানিগুলো ইডিএফ থেকে ঋণ পেত। গতকাল সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ এই সুযোগ দিয়ে একটি সার্কুলার জারি করে। সার্কুলারে বলা হয়, ইপিজেডে কার্যরত ‘বি’ শ্রেণির প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কাঁচামাল আমদানির জন্য ব্যাক টু ব্যাক এলসি বা ঋণপত্র খুলতে ইডিএফ থেকে বিদেশি মুদ্রায় ঋণ পাবে। প্রসঙ্গত, ইপিজেডে কার্যরত বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো ‘এ’ শ্রেণির প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচিত হয়। এ ছাড়া দেশি-বিদেশি যৌথ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো ‘বি’ শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত এবং স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ‘সি’ শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত। জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতির কারণে ইডিএফ ঋণের সুদহার সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে এনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বর্তমানে ইডিএফ ঋণের সুদ ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ, যা চলতি মার্চ মাস পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। গত বছরের ২৮ অক্টোবর ইডিএফ ঋণের সুদহার কমায় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে এই তহবিলের ঋণের সুদহার ছিল ২ শতাংশ। রপ্তানি খাতে করোনাভাইরাসের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে সহযোগিতার লক্ষ্যে গত বছরের এপ্রিলে ইডিএফের আকার ৩৫০ কোটি ডলার থেকে বাড়িয়ে ৫০০ কোটি ডলারে উন্নীত করে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত ইডিএফ থেকে বিজিএমইএ ও বিটিএমএ’র সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো প্রত্যেকটি সর্বোচ্চ ৩ কোটি টাকা ঋণ নিতে পারবে। স্বাধীনতার পর বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় মাত্র ১ কোটি ৫০ লাখ ডলার নিয়ে ইডিএফ গঠন করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। পরবর্তীকালে এই ঋণের চাহিদা বাড়ায় তহবিলের আকারও বাড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, করোনার মধ্যে ইডিএফের ঋণ রপ্তানি খাতকে ঘুরে দাঁড়াতে বড় ধরনের সহায়ক ভূমিকা রেখেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ইডিএফের বিতরণ করা ঋণের স্থিতি বর্তমানে ৪৯০ কোটি ডলার। তবে ঘূর্ণায়মান এই তহবিল থেকে করোনাকালে সব মিলিয়ে প্রায় এক হাজার কোটি ডলারের মতো ঋণ বিতরণ করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।