দেশের শিল্প অধ্যুষিত এই ছয় এলাকা- আশুলিয়া, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ ও খুলনায় মোট ৭ হাজার ৯৮২টি কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে কেবল পোশাক খাতের কারখানা আছে ২ হাজার ৩৮৬টি; আর এ খাতেরই ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ বস্ত্র শিল্পের কারখানা আছে ৩১৫টি। এছাড়া বেপজার আওতায়ও আছে বস্ত্র ও পোশাক খাতের কারখানা। এসব কারখানায় উৎপাদিত পণ্য দেশের চাহিদা মিটিয়ে রফতানি হয় বিদেশে। তবে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবা লাগে অর্থনীতির সব সেক্টরে। বাদ যায়নি শিল্প কারখানাও। গত বছরের মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৭ হাজার ৯৮২টি কারখানার মধ্যে করোনা পরিস্থিতিতে মোট ৬৩০টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যদিও এসব কারখানার মধ্যে বড় কারখানার সংখ্যা হাতে গোনা। তবে শিল্প উদ্যোক্তারা বলছেন, বন্ধ কারখানা গুলোকে চালু করতে সব ধরনের সহায়তা দেয়া হবে। শিল্প পুলিশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ছয় শিল্প এলাকায় মোট ৭ হাজার ৯৮২টির মধ্যে পোশাক খাত-কেন্দ্রিক মোট কারখানার সংখ্যা ২ হাজার ৭০১। বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বেপজার আওতাভুক্ত বস্ত্র ও পোশাক কারখানার বাইরে চামড়াজাত পণ্য, আসবাব, সেলফোন সংযোজন, ওষুধসহ সব খাত মিলিয়ে অন্যান্য কারখানা আছে ৪ হাজার ৮১৬টি। মোট ৭ হাজার ৯৮২টির মধ্যে করোনাকালে বন্ধ কারখানার সংখ্যা ৬৩০। সংশ্লিষ্টদের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর মার্চে করোনা শনাক্তের পর করোনাকালেই কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে যায়। শিল্প পুলিশের হালনাগাদ তথ্যমতে, ছয় শিল্প এলাকায় ৭ হাজার ৩৫২টি কারখানা খোলা আছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কারখানাগুলো সচল আছে। বন্ধ কারখানার সংখ্যা ৬৩০, সে হিসেবে মোট ৯২ শতাংশ কারখানা চালু রয়েছে। এ বিষয়ে শিল্প পুলিশের ডিআইজি মো. মাহবুবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘বন্ধ কারখানার মধ্যে ছোট কারখানাই বেশি। যারা ঠিকায় (সাবকন্ট্রাক্ট) কাজ করে এমন অনেক কারখানা আছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কারখানা পরিচালনা করছেন কারখানা মালিকরা। কারখানায় প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় জড়ো হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে না। এখন পর্যন্ত ঝামেলা ছাড়াই কারখানা নিরবচ্ছিন্নভাবে পরিচালিত হচ্ছে।’ তৈরি পোশাক মালিক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) একটি তথ্য বলছে, কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে সব শিল্পের সঙ্গে এর প্রভাব পোশাক শিল্পেও পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে সাড়ে তিনশ’র বেশি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। তবে বন্ধ কারখানাগুলো চালুর উদ্যোগ নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। বিজিএমইএর সদ্য নির্বাচিত সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘কাজ বন্ধ হয়ে যাক বা কারখানা বন্ধ হোক, এটা কেউ চায় না। কাজ বন্ধ হলে কর্মীরা বেকার হবেন এতে কোভিড সংক্রমণ আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছর থেকে অনেকগুলো কারখানা বন্ধ হয়েছে, এখনও বন্ধ হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কারখানার অর্ডার বন্ধ হয়েছে, এলসি বন্ধ করে দিয়েছে, ব্যাংক ঋণের টাকা পরিশোধ করতে দেরি হয়েছে। তবে ঠিক কত কারখানা বন্ধ হয়েছে, তা বলা যাচ্ছে না, ছোট অনেক কারখানা রয়েছে।’