Home Apparel ‘তৈরি পোশাক খাতের সংকট নিরসনে ত্রিপক্ষীয় সংলাপ করা উচিত’

‘তৈরি পোশাক খাতের সংকট নিরসনে ত্রিপক্ষীয় সংলাপ করা উচিত’

সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেছেন, তৈরি পোশাক খাতের সংকট নিরসনে সরকার, নিয়োগকারী এবং শ্রমিকসহ ত্রিপক্ষীয় সংলাপ করা উচিত। যাতে কোভিড সংকটের তাৎক্ষণিক প্রভাবই নয়, দীর্ঘমেয়াদি সংকট সমাধানের জন্য ‘বেকার বিমা ব্যবস্থার’ পারস্পরিক সমন্বিত ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে। বুধবার (২১ এপ্রিল) সিপিডি আয়োজিত ‘বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার পোশাক খাতের পুনরুদ্ধার: ভ্যালু-চেইনভিত্তিক সমাধান কি সম্ভব?’ শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক সংলাপে তিনি এ কথা বলেন। রেহমান সোবহান বলেন, ‘সরবরাহকারী দেশগুলোকে আন্তর্জাতিক চাহিদা ব্যবস্থাপনার পুনর্গঠনের জন্য আন্তর্জাতিক ক্রেতা দেশগুলোকে একত্রিত করার ক্ষেত্রে আইএলও  উদ্যোক্তার  ভূমিকা গ্রহণের বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে।’ সিপিডি, আইপিএস এবং ৫২টি চিন্তক প্রতিষ্ঠানের আন্তির্জাতিক পর্যায়ের নেটওয়ার্ক সাউদার্ন ভয়েজের সহযোগিতায় এই সংলাপের আয়োজন করা হয়। সিপিডি’র ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান সংলাপে সভাপতিত্ব করেন। সংলাপে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) এবং ইনস্টিটিউট ফর পলিসি স্টাডিজ অব শ্রীলঙ্কার (আইপিএস) একটি যৌথ গবেষণাপত্র প্রকাশ করা হয়। গবেষণায় উঠে এসেছে  কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সৃষ্ট চাহিদা মন্দার কারণে ২০২০ সালের জানুয়ারি-আগস্ট সময়ে বিশ্বব্যাপী পোশাকের আমদানি ২৩ শতাংশ কমে গেছে। অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘পোশাক খাতের ভ্যালু-চেইনের সকল অংশীজনরা অতিমারিতে প্রভাবিত হয়েছিল, তাই এই গবেষণার ফলাফল গুরুত্বপূর্ণ। এই খাতকে টেকসই করে সমধানের দিকে এগিয়ে যেতে সকল অংশীজনের কিছু নির্দিষ্ট ভূমিকা পালন করতে হবে।’ সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন সংলাপে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, ‘সিপিডি এবং আইপিএস সম্প্রতি স্থানীয় পোশাকের পুনরুদ্ধার বিষয়ে একটি ভ্যালু-চেইন ভিত্তিক সমাধানের সম্ভাবনা বিশ্লেষণ করার জন্য যৌথভাবে সাউদার্ন ভয়েজের সহযোগিতায় এই গবেষণা পরিচালনা করেছে।’ মহামারির কারণে বিশ্বব্যাপী পোশাক খাতে ভ্যালু-চেইনের যে ক্ষতি হয়েছে, তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই গবেষণা সরবরাহকারী দেশগুলো বিশেষত বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কায় যে চ্যালেঞ্জগুলো তৈরি হয়েছে, তা মোকাবিলায় সহায়তা করবে।’ মূল বক্তব্য উপস্থাপনায় সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এবং আইপিএসের অর্থনীতিবিদ কিথমিনা হিউজ জানান— গবেষণায় দেখা গেছে যে, বড় দেশগুলো এই মহামারির সময়ে সীমাবদ্ধ সংখ্যক সোর্সিং দেশগুলোতে বেশি গেছে। চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় ক্রেতাদের কাছ থেকে তেমন কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি। মাহামারিকালে (জানুয়ারি থেকে জুন ২০২০) ক্রেতারা রফতানি আদেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কাসহ বেশ কয়েকটি বড় সরবরাহকারী দেশকে বঞ্চিত করেছে। সংলাপে বক্তারা বলেন, পোশাক খাতের ভ্যালু চেইনের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক পর্যায়ে যে মধ্যমেয়াদি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চলছিল, তা দীর্ঘমেয়াদে চলা করোনাকালে সৃষ্ট চাহিদা মন্দার কারণে ব্যাহত হচ্ছে। ২০২০ সালের জানুয়ারি-আগস্ট সময়ে বিশ্বব্যাপী পোশাকের আমদানি ২৩ শতাংশ কমেছে। তারা বলেন, শুধুমাত্র জাতীয় স্তরের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে এই মধ্যমেয়াদি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা ক্রমাগত কঠিন হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কাসহ অনেক সরবরাহকারী দেশের পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া অত্যন্ত ধীর গতিতে চলেছে। এমন প্রেক্ষাপটে ‘ভ্যালু-চেইন ভিত্তিক সমাধান’ এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here