আগামী তিন বছরে দেশে আরও ১০ লক্ষ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে রিলায়েন্স রিটেল৷ এ দিন রিলায়েন্স-এর বার্ষিক সাধারণ সভায় এমনই দাবি করলেন সংস্থার চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুকেশ আম্বানি৷ তাঁর দাবি, আগামী পাঁচ বছরে তিন থেকে পাঁচ গুণ বাড়বে রিলায়েন্স রিটেলের ব্যবসা৷
মুকেশ আম্বানি এ দিন বলেন, ‘করোনা অতিমারির এই কঠিন সময়েও রিলায়েন্স রিটেল নিজেদের কর্মীদের চাকরি সুরক্ষিতই রাখেনি বরং ৬৫ হাজার নতুন চাকরির সুযোগ করে দিয়েছে৷ এই মুহূর্তে রিলায়েন্স রিটেল-এর ২ লক্ষ কর্মচারী রয়েছে৷ ফলে আমরা এখন দেশে অন্যতম বৃহত্তম নিয়োগকারী সংস্থা৷ আগামী তিন বছরে রিলায়েন্স রিটেল দশ লক্ষেরও বেশি কর্মী নিয়োগ করবে৷ এর পাশাপাশি আরও বহু মানুষের উপার্জনের পথও তৈরি করে দেবে৷ ‘
চলতি অর্থবর্ষে রিলায়েন্স রিটেল আরও ১৫০০ হাজার নতুন স্টোর খুলেছে৷ রিটেল ক্ষেত্রে গোটা দেশের মধ্যে যা সর্বোচ্চ৷ বর্তমানে রিলায়েন্স রিটেল-এর স্টোর সংখ্যা ১২,৭১১৷
মুকেশ আম্বানি বলেন, ‘গত বছর রিলায়েন্স রিটেল প্রতিদিন পাঁচ লক্ষ ইউনিট পোশাক বিক্রি করেছে৷ বছরে ১৮ কোটির বেশি পোশাক বিক্রি করা হয়েছে৷ যা সম্মিলিত ভাবে যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং স্পেনের জনসংখ্যার জন্য প্রয়োজনীয় পোশাকের সমান৷ ‘
মুকেশ আম্বানি জানিয়েছেন, আজিও ডিজিটাল মাধ্যমে পোশাক বিক্রির ক্ষেত্রে অন্যতম সেরা ব্র্যান্ড হিসেবে উঠে এসেছে৷ প্রায় ২ হাজার ব্র্যান্ড-এর পোশাক আজিও-তে পাওয়া যায়৷ ৫ লক্ষ জামাকাপড়ের সম্ভার রয়েছে৷ রিলায়েন্স-এর পোশাক ব্যবসার ২৫ শতাংশই এখন আজিও থেকে আসছে৷এর পাশাপাশি ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী বিক্রির ক্ষেত্রেও চোখে পড়ার মতো বৃদ্ধি হয়েছে রিলায়েন্স রিটেল-এর ব্যবসায়৷ দৈনিক প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার এবং বছরে সাড়ে চার কোটি ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য বিক্রি করেছে সংস্থার এই শাখা৷রিলায়েন্স রিটেল প্রতিদিন ৩০ লক্ষ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রি করেছে৷ বাৎসরিক হিসেবে যা ১০০ কোটির বেশি৷ জিও মার্ট-এ একদিনে সর্বাধিক সাড়ে ৬ লক্ষ অর্ডার নথিভুক্ত হয়েছে৷
রিলায়েন্স রিটেল-এর কর্মীদের উদ্দেশে মুকেশ আম্বানি বলেন, ‘আমাদের ভাবনা খুবই সহজ৷ আমরা আপনাদের সবরকম সহযোগিতা করব যাতে আপনারা ক্রেতাদের আরও ভাল পরিষেবা দিতে পারেন৷ সেই কারণেই গার্হস্থ্য প্রয়োজনের সামগ্রীর অর্ডার তিন গুন বেড়েছে৷ নতুন অর্ডারের মধ্যে সময়ের ফারাকও দু’ গুণ কমেছে৷’
ব্যবসা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মূলত পাঁচটি কৌশল নিয়েছে রিলায়েন্স রিটেল৷ ব্যবসা বৃদ্ধির জন্য গবেষণা, নকশা তৈরি এবং পণ্যের মান উন্নয়নের দিকে নজর দেওয়া হবে৷ স্থানীয় পণ্য উৎপাদক, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরের ব্র্যান্ডগুলির সঙ্গে আরও নিবিড় ভাবে কাজ করা হবে৷ সংস্থার পণ্য পরিষেবা বিশ্বমানের করার জন্য গুদাম থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে৷ আরও বেশি করে নতুন স্টোর খোলার পাশাপাশি তৈরি করা হবে ডেলিভারি হাব৷ সর্বোপরি সাম্প্রতিক কালে নেটমেডস, আর্বান ল্যাডার-এর মতো জনপ্রিয় ব্র্যান্ডগুলিকে অধিগ্রহণের যে কৌশল সংস্থা নিয়েছিল, তা বজায় রাখা হবে৷ মুকেশ আম্বানি বলেন, ‘রিটেল ব্যবসা যে অপ্রিতরোধ্য গতিতে এগোচ্ছে, তাতে আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরে তা অন্তত তিন গুন বৃদ্ধি হবে৷’