রপ্তানি পণ্য পরিবহনে কনটেইনার সংকট এবং যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রগামী বড় জাহাজে চাহিদা অনুযায়ী বুকিং না মেলায় তৈরি পোশাক পণ্য সময়মতো জাহাজীকরণ করা যাচ্ছে না। ফলে প্রাইভেট আইসিডিগুলোতে কনটেইনারের জট সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে যথাসময়ে রপ্তানি পণ্য পাঠাতে না পেরে অনেকের রপ্তানি আদেশ বাতিল হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। ফলে শিল্পোদ্যোক্তাগণ বড় ধরণের আর্থিক চাপের মধ্যে রয়েছেন বলে দাবি করছে, খাত সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য সংগঠনের নেতারা।
তবে সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপোট অ্যাসোসিয়েশনের (বিকডা), বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ শিপিং লাইন, বাংলাদেশ কনটেইনার শিপিং এসোসিয়েশন ও বিএফএফএ সঙ্গে আলোচনা করছেন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ, বিটিটিএলএমইএ, বিজিএপিএমইএ এবং এলএফএমইএবি নেতৃবৃন্দ।
নেতারা দাবি করেন, চলমান পরিস্থিতিতে যেসব প্রতিষ্ঠান আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বা লসে আসেন তাদের ক্ষেত্রে ব্যাংকে বিশেষ ছাড় দিতে হতে পারে। যাতে উদ্যোক্তারা আর্থিক ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে পারেন। এলক্ষ্যে বাংলাদেশে ব্যাংকে চিঠিও পাঠিয়েছেন তারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে থেকে প্রয়োজনিয়ে সহায়তার মৌখিক আশ্বাস পাওয়া গেলেও তা’ কবে হতে পারে তার কোন নিশ্চয়াতা পাওয়া যায়নি।
সার্বিক বিষয়ে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান রাইজিং বিডিকে বলেন, কনটেইনার সংকটের কারনে বিজিএমইএ এর অনেক সদস্য প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি পণ্যের চালান আইসিডি’তে ১ মাস থেকে ১ সপ্তাহ পর্যন্ত পড়ে থাকায় তারা রপ্তানি আয় পাননি। বিদেশী ক্রেতার কাছে পণ্য পাঠাতে এখন ২ থেকে ৪ সপ্তাহ অতিরিক্ত লাগছে।
তিনি বলেন, এমনিতেই কোভিড পরিস্থিতির কারনে পোশাক শিল্প কঠিন সংকটের মুখে রয়েছে। এ অবস্থায় ক্রেতাদের কাছে সময়মতো পণ্য পৌঁছানোতে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হওয়ায় উদ্যোক্তারা নতুন করে বিপাকে পড়েছেন।
ফারুক হাসান বলেন, শুধু ভালো পণ্য তৈরি করলেতো হবেনা, ভালোভাবে পৌছাতে হবে। এখন যদি, প্রয়োজনিয় কাঁচামাল আমদানিতে এবং তৈরির পরে রপ্তানির ক্ষেত্রে জটিলতা বা জট তৈরি হয়, তাহলে আমরা ক্ষতির সম্মুখিন হব। এটা সাভাবিক।
তিনি বলেন, এখন বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত ভালো ওয়ার্ডার পাচ্ছে, ভবিষ্যতে আরও বেশি পাবে, যদি- সময়মত সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো আমাদের সহায়তা করে।
এদিকে নৌ পথের পাশাপাশি আকাশ পথেও পণ্য রপ্তানিতে সমস্যা তৈরি হচ্ছে বলে তিনি জানান। এনিয়ে বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্স ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছে বিজিএমইএ সভাপি ফারুক হাসান।
তিনি বলেন, বিমান বন্দরে কারগো বিমানে পণ্য আসা যাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। বন্দরের স্ক্যানাগুলো ভালোভাবে কাজ করছে না। এজন্য সারাদিন বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা করেছি। আমাদের কথা হচ্ছে- করোনার সময়েও পোশাক খাত ভালো করার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এখন রপ্তানি জটিলতা তৈরি হলে খাত ক্ষতির সম্মুখিন হবে।