ঈদের পর ২৩ জুলাই ভোর থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত দুই সপ্তাহের লকডাউনে সব সরকারি-বেসরকারি অফিস ও তৈরি পোশাক কারখানা বন্ধ থাকবে।
গতকাল সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে শেষ মুহূর্তে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ কথা বলা হয়েছে।
এতে বিপদে পড়েছেন তৈরি পোশাক খাতে কর্মরত লাখো শ্রমিক ও মালিকরা। কারণ লকডাউনে কারখানা খোলা রাখতে মালিক পক্ষের প্রতিনিধিরা আগে থেকেই তদবির করে আসছিলেন।
প্রকাশিত প্রজ্ঞাপন অনুসারে, লকডাউন চলাকালীন খাদ্য উৎপাদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত কারখানা, চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা, ওষুধ কারখানা এবং অক্সিজেন সরবরাহ ও ভাইরাস মোকাবিলা সংক্রান্ত বিভিন্ন উপকরণ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বিধি-নিষেধের আওতামুক্ত থাকবে।
ঈদু আযহা উদযাপিত হবে আগামীকাল বুধবার ২১ জুলাই।
২৩ জুলাই ভোর ৬টা থেকে কার্যকর হতে যাওয়া এ লকডাউনে ব্যক্তিগত যানসহ সব ধরণের গণপরিবহন, অর্থাৎ- রেল, আভ্যন্তরীণ ফ্লাইট ও নৌযান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। কেবল জরুরি পণ্যবাহী যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, যেসব তৈরি পোশাক কারখানায় ফেসমাস্ক ও পিপিই (পারসোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট) উৎপাদন হয়, লকডাউনের মধ্যে কেবল সেগুলো খোলা রাখা যাবে।
তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান কারখানা বন্ধ রাখার বিষয়ে সরকারের শেষ মুহূর্তের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
তিনি বলেন, ‘গণপরিবহন বন্ধ থাকায় গত বছর পোশাক কারখানার শ্রমিকরা যে ধরণের সমস্যায় পড়েছিল, এবারও তারা একই ধরণের সমস্যার মুখোমুখি হবে।’
বিজিএমইএ সভাপতির ভাষ্য, লকডাউনে পোশাক কারখানা খোলা রাখার ব্যাপারে সরকার মালিকদের অনুরোধ মেনে নেবে- এমন আশায় হাজারো শ্রমিক এবার আগে-ভাগে বাড়ি যাননি। কিন্তু, কারখানা বন্ধের ঘোষণায় তারা ১৭ দিনের ছুটি পেয়ে গেছে। এ অবস্থায় আজ মঙ্গলবার তারা পাগলের মতো বাড়ির দিকে ছুটবে।
ফারুক আরও জানান, লকডাউনে স্থল, নৌ ও বিমানবন্দর চালু থাকলেও মালিকরা সময় মতো পণ্যের চালান পাঠানোর ব্যাপারে নিশ্চিত নন।
মহামারির মধ্যে এর আগে গত বছরের মার্চে একবারই তৈরি পোশাক কারখানা বন্ধ রাখা হয়েছিল।
এমনকি গত ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ‘কঠোর’ লকডাউনের মধ্যে যখন রাস্তায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল আর মানুষকে বাসা থেকে বের হওয়ার অপরাধে গ্রেপ্তার করা হচ্ছিল তখনো তৈরি পোশাক কারখানা খোলা ছিল।
গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনটি ১৩ জুলাইয়ে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনের বর্ধিত অংশ বলা চলে।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, লকডাউনের মধ্যে সব শপিং মল ও বাজার বন্ধ থাকবে। কেবল কাঁচাবাজার ও নিত্যপণ্যের দোকানগুলো সকাল ৯টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।
এ ছাড়া লকডাউনে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সমাবেশসহ সব ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান আয়োজন বন্ধ রাখতে হবে। কোনো রেস্তোরাঁর ভেতরে খাবার পরিবেশন করা যাবে না।