নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের প্রতিষ্ঠান হাসেম ফুডসের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রচারণা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বস্ত্র ও পোশাক খাতের দুটি সংগঠন।
উদ্যোক্তারা বলছেন, হাসেম ফুডসের অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে বস্ত্র ও পোশাক খাতকে জড়িয়ে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় নেতিবাচক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এ বিষয়ে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক টাইমসে গত ৯ জুলাই ‘ডজনস ডাই অ্যাজ অ্যানাদার ফ্যাক্টরি ফায়ারস স্ট্রাইকস বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। হাসেম ফুডসের অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে তৈরি পোশাক খাতকেও জড়ানো হয়েছে। এতে তৈরি পোশাক কারখানায় আগের দুর্ঘটনার উল্লেখ করে বলা হয়, এখনও অনেক কারখানায় ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ রয়েই গেছে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এ বিষয়ে নিউইয়র্ক টাইমসে পাঠানো প্রতিবাদপত্রে বিজিএমইএ বলেছে, বিষয়টি সম্পূর্ণ অসত্য। এতে বাংলাদেশের পোশাক খাতের প্রতি আন্তর্জাতিক মহলে ভুল ধারণার জন্ম দেবে। কারণ হাসেম ফুডসের অগ্নিকাণ্ড তৈরি পোশাক খাতের সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পর্কিত নয়।
তবে শনিবার পর্যন্ত প্রতিবাদ প্রকাশ করেনি পত্রিকাটি। বিজিএমইএ বলেছে, গত আট বছরে নিরবচ্ছিন্ন সংস্কারের ফলে বাংলাদেশের পোশাক খাত এখন সারা বিশ্বে নিরাপদ পোশাক কারখানার রোল মডেল। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিবেদনে সেই স্বীকৃতিও আছে।
এদিকে শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বিটিএমএর পক্ষ থেকেও পোশাক খাতবিরোধী আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলা হয়েছে। রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিটিএমএর পরিচালক মনির হোসেন বলেন, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকায় হাসেম ফুডসের কারখানার অগ্নিকাণ্ড এবং হতাহতের প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় কেউ কেউ বাংলাদেশের পোশাক খাতের বিরোধী প্রচারণার সুযোগ নিয়েছেন। প্রতিবেদনের ওপর মন্তব্যে কেউ কেউ বাংলাদেশের শুল্ক্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা বা জিএসপি প্রত্যাহারের দাবি করেছেন। বিটিএমএর পরিচালক বলেন, এসব অপপ্রচার বাংলাদেশের পোশাক খাতবিরোধী ষড়যন্ত্রেরই অংশ। কারণ, হাসেম ফুডসের অগ্নিদুর্ঘটনার সঙ্গে পোশাক খাতের কোনো সম্পর্ক নেই।
বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, হাসেম ফুডসের দুঃখজনক অগ্নি দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি মহল অসত্য তথ্য দেশি-বিদেশি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারের মাধ্যমে রপ্তানিমুখী পোশাকশিল্পের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করতে লিপ্ত রয়েছে। অথচ কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ এবং দুই ক্রেতাজোট অ্যাকর্ড এবং অ্যালায়েন্সের তত্ত্বাবধানে সংস্কার কার্যক্রমের ফলে বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের নিরাপত্তা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। এ ধরনের প্রচারণার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং দুঃখজনক। এদের চিহ্নিত করে তাদের অপতৎপরতা বন্ধে সরকারের কাছে বিশেষ অনুরোধ জানান তিনি।