সম্মুখসারির অর্থনৈতিক যোদ্ধা হিসেবে তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত দেশী-বিদেশী কর্মীদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে কভিড-১৯ টিকা বরাদ্দ চেয়েছে শিল্পসংশ্লিষ্ট মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)। গতকাল স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব বরাবর এক চিঠিতে এ অনুরোধ জানিয়েছে সংগঠনটি।
তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত অর্থনীতির সম্মুখসারির যোদ্ধাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কভিড-১৯ টিকা প্রদান শীর্ষক বিষয় উল্লেখ করে চিঠিতে বিজিএমইএ বলেছে, কভিড-১৯ মহামারীর প্রাদুর্ভাবের ফলে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী তৈরি পোশাক শিল্প এখন কঠিন সময় অতিক্রম করছে। এ শিল্প খাতে লাখ লাখ শ্রমিক কাজ করছেন। এ শ্রমিকরাই দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। করোনা মহামারী শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত শ্রমিক-কর্মচারীরাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কারখানায় কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে আমাদের দেশে বিভিন্ন কারখানায় ও আন্তর্জাতিক মানের অনেক ক্রেতার বিদেশী প্রতিনিধি বৈধভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা রয়েছে। করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের পাশাপাশি বিদেশীরাও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কারখানা চালু রেখেছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই কভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। দেশের অর্থনীতির স্বার্থে এ শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের এবং বিদেশীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
বিজিএমইএ মহাসচিব মো. ফয়জুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে আরো বলা হয়, গত ১৬ জুন বিজিএমইএ বোর্ডের নবনির্বাচিত সভাপতি ও পর্ষদ সদস্যরা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। ওই সময় টিকা সরবরাহ করা হবে মর্মে মন্ত্রী আশ্বাস দেন। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে জানা যায়, সরকার অনেক দেশ থেকে টিকা আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে এবং এরই মধ্যে বেশকিছু টিকা আনা হয়েছে।
তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিক ও বাংলাদেশে পোশাক শিল্পে কর্মরত বিদেশীদের টিকার আওতায় আনার জন্য তাদের তালিকাসহ মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে উল্লেখ করে চিঠির শেষাংশে বলা হয়, সম্মুখসারির অর্থনৈতিক যোদ্ধা হিসেবে তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের পাশাপাশি বাংলাদেশে পোশাক শিল্পে কর্মরত বিদেশীদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে কভিড-১৯ টিকা বরাদ্দের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।
জানতে চাইলে বিজিএমইএর সহসভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম বণিক বার্তাকে বলেন, পোশাক কারখানায় কর্মরত ৪২ লাখ শ্রমিকের পাশাপাশি বায়িং হাউজ ও কারখানার বিদেশী প্রায় সাড়ে ৮০০ কর্মকর্তার তালিকা মন্ত্রণালয়ে দেয়া হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেয়া হয়েছিল, টিকার প্রাপ্যতা নিশ্চিতসাপেক্ষে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা নিশ্চিত করা হবে। যেহেতু এখন টিকা আসছে, অর্থনীতির স্বার্থেই আমাদের শিল্পের সম্মুখসারির অর্থনৈতিক যোদ্ধাদের জন্য টিকা নিশ্চিতের অনুরোধ জানানো হয়েছে।