এলডিসি-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় স্থানীয় বাজারের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। পাশাপাশি শুল্ক ও কর কাঠামোর যুগোপযোগী করে অটোমেশন, পণ্য উত্পাদন ও সাপ্লাইচেইন ইকোসিস্টেমের উন্নয়ন করতে হবে। নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণ, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করতে হবে। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তোরণ পরবর্তী সময়ের প্রস্তুতি; স্থানীয় বাজারের উন্নয়ন’ শীর্ষক ভাচুর্য়াল সংলাপে বক্তারা এ কথা বলেন। সংলাপে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি দাস।
স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের ফলে ২০২৬ সালের পর বাংলাদেশের রপ্তানির বাজার কমপ্লায়েন্স, ব্রান্ডিং ও মেধাস্বত্বের বিষয়ে চ্যালেঞ্জে পড়বে। সেই সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি বেশকিছু শুল্ক-অশুল্ক প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হবে, যা আমাদের স্থানীয় বাজারকেও প্রভাবিত করবে। তিনি জানান, আমাদের জিডিপিতে কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য ও সেবা খাতের অবদান প্রায় ৬০ শতাংশ। এছাড়াও ফ্যাশনওয়্যার, ফুটওয়্যার ও ফার্মাসিউটিক্যাল প্রভৃতি পণ্যের চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এমতাবস্থায় শুল্ক ব্যবস্থাপনা, কর কাঠামো ও ভোক্তাদের আচরণ পরিবর্তনের বিষয়সমূহ বিবেচনায় নিয়ে স্থানীয় বাজারের উন্নয়ন, পণ্য উত্পাদন ও সাপ্লাইচেইন ইকোসিস্টেম ও সর্বোপরি সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর জোরারোপ করেন ডিসিসিআই সভাপতি। তিনি স্থানীয় উদ্যোক্তাদের আরো শক্তিশালী করার জন্য ঋণ পরিশোধের সময়সীমা আরো বাড়ানোর আহ্বান জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি দাস বলেন, এলডিসি পরর্বতী সময়ে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের প্রদত্ত সরাসরি ভর্তুকি নানাবিধ সুবিধাদি হ্রাস পাবে, এমতাবস্থায় রপ্তানির বাজার সম্প্রসারণে আঞ্চলিক দেশগুলোর সঙ্গে আরো অধিক হারে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির স্বাক্ষরের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। সেই সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলায় অভ্যন্তরীণ শিল্পায়ন বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। এলডিসি-পরবর্তী সময়ে ব্যবসায়ীদের নগদ প্রণোদনা সহায়তা প্রদান করতে না পারলেও, অন্যান্য পন্থায় উদ্যোক্তাদের সহায়তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস প্রদান করেন।
এলডিসি হতে বাংলাদেশের স্থানীয় বাজার উন্নয়নে ব্যবসায়ীদের দক্ষতা ও পণ্য উত্পাদন বাড়ানোর সুপারিশ করেন এনবিআরর সদস্য (ভ্যাট নীতি) মো. মাসুদ সাদিক। দেশের পণ্য রপ্তানির বৃদ্ধির জন্য বন্দরসমূহের সক্ষমতা বাড়ানো, স্বল্পসুদে দীর্ঘমেয়াদে ঋণ সহায়তা প্রদান, ভ্যাট প্রদানের প্রক্রিয়া আরো সহজীকরণ, অবকাঠামোখাতের উন্নয়ন, নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর তিনি জোরারোপ করেন।
জাতীয় ক্ষুদ্র কুটির শিল্প সমিতির (নাসিব) সভাপতি মির্জা নূরুল গনি শোভন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের পণ্য উত্পাদন ব্যয়ের ওপর ভ্যাট আরোপ না করে, শুধু মুনাফার ওপর ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করেন।
সংলাপে আরো অংশ নেন, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সদস্য শাহ মো. আবু রায়হান আলবেরুনী, রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (রেপিড) নির্বাহী পরিচালক ড. এম আবু ইউসুফ, বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতির মহাসচিব এস এম শফিউজ্জামান প্রমুখ।