পোশাক খাতের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ৩০ সিঙ্গেল কার্ডের প্রতি কেজি সুতার সর্বোচ্চ দাম চার ডলার ২০ সেন্ট নির্ধারণের মাধ্যমে সুতার দাম নিয়ে বস্ত্রকল ও পোশাকমালিকদের মধ্যে বিবাদের মীমাংসা হয়েছে।
গত শনিবার বিবাদ মিটিয়ে টেরি টাওয়েল ও তৈরি পোশাক রপ্তানির প্রধান উপকরণের নির্বিঘ্ন সরবরাহের সিদ্ধান্তে পৌঁছায় স্পিনাররা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘শনিবার রাতে আমরা স্পিনারদের সঙ্গে আলোচনা করে সুতার দামের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছি।’
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকনও বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘তৈরি পোশাকমালিক ও টেরি টাওয়েল প্রস্তুতকারীরা সুতার দাম কমানো ও সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণের বিষয়ে একমত হয়েছি।’
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক বাজারে যদি প্রতি পাউন্ট তুলার দাম ৮৫ ইউএস সেন্ট থেকে এক ডলারের মধ্যে থাকে স্পিনাররা চার দশমিক ২০ ডলারে প্রতি কেজি ৩০ সিঙ্গেল কার্ডের সুতা বিক্রি করবে।
মূল্য নির্ধারণের সময় প্রতি পাউন্ড তুলা ৯৩ সেন্টে বেচা-কেনা হয়েছিল।
ফারুক হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘যদি প্রতি পাউন্ড তুলার দাম এক ডলার ছড়িয়ে যায়, তাহলে আমাদের নতুন করে দাম নির্ধারণ করতে হবে। একইভাবে, যদি প্রতি পাউন্ড তুলার দাম ৮৫ সেন্টের নিচে নেমে যায়, তাহলে স্পিনাররা সেই অনুযায়ী সুতার দাম কমাবে।’
আন্তর্জাতিক রিটেইলার ও ব্র্যান্ডগুলোর কাছ থেকে বাংলাদেশে বেশি করে কাজ পাওয়ার কারণে স্পিনাররা তৈরি পোশাকমালিক ও টেরি টাওয়েল রপ্তানিকারকদের নির্বিঘ্নে সরবরাহের নিশ্চিয়তা দিয়েছে।
মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, ‘আমরা নির্ধারিত মূল্যে সুতা সরবরাহ করতে পারব।’
স্থানীয় বাজারে সুতার দাম বাড়ার কারণে বিটিএমএর সঙ্গে বিজিএমইএ, বাংলাদেশ টেরি টাওয়েল ও লিনেন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিটিএলএমইএ) বিবাদ সৃষ্টি হয়। এর ফলে আগস্টের প্রথম সপ্তাহে বিজিএমইএ এবং বিটিটিএলএমইএর নেতারা সরকারকে চিঠি লিখে জানান, যেন সুতার দাম বৃদ্ধির লাগাম টানতে স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির শর্ত শিথিল করা হয়।
এই পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য সংস্থাগুলো পৃথক সংবাদ সম্মেললের আয়োজন করলেও তারা ব্রিফিং বাতিল করে বিবদমান পরিস্থিতির সমাধানে আলোচনায় বসে।
তৈরি পোশাক মালিকরা কাঁচামাল কেনায় উচ্চ মূল্যের শিকার হবেন বলে বিটিএমমের দাম না বাড়ানো অনুরোধ করেন। এর ফলে ১০ আগস্টের পর স্পিনাররা আর সুতার দাম বাড়ায়নি।
হাসান বলেন, ‘পশ্চিমা অর্থনীতিগুলি আবারও চালু হওয়ায় আমরা আরও বেশি অর্ডার পাচ্ছি। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতামূলক হওয়ার জন্য আমাদের সাশ্রয়ী দামে আরও বেশি সুতা এবং কাপড় দরকার।’
তিনি বলেন, স্থানীয়ভাবে সুতা কেনায় কিছু সুবিধা পাওয়ার কারণে নির্মাতারা দেশীয় বাজার থেকে সুতা কিনতে চেয়েছিলেন। ‘তবে, অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি আমাদের বিকল্প বাজার থেকে সুতা কিনতে বাধ্য করতে পারে।’
স্থানীয় স্পিনাররা বিশেষ ধরনের এই কাঁচামাল তৈরি না করায় বাংলাদেশ ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া ও তুরস্ক থেকে ৩০ সিঙ্গেল কার্ডের সুতা আমদানি করে।