বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ‘ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন (ইইউ) দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশকে বাণিজ্য সুবিধা দিয়ে আসছে, এজন্য বাংলাদেশ কৃতজ্ঞ। আগামী ২০২৬ সালে এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পরও ইইউ বাংলাদেশকে দেওয়া বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত রাখবে বলে আশা করছি।’
রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় বানিজ্য মন্ত্রী তার সরকারি বাসভবনের অফিস কক্ষে ইউরোপিয়ন ইউনিয়নের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত মিজ রিনসজে টেরিংক-এর সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এসব কথা বলেন। এসময় বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) মো. হাফিজুর রহমানসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কমকর্তরা উপস্থিত ছিলেন।
বানিজ্য মন্ত্রী বলেন, ‘ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বড় রপ্তানির বাজার। বিশ্ববাণিজ্য সংস্থায় বাংলাদেশ এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পর আগামী ১২ বছর এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর বাণিজ্য সুবিধা পাওয়ার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। এ লক্ষ্যে ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন বাংলাদেশের পক্ষে কাজ করবে বলে আশা করছি। এছাড়া, এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পর রপ্তানি বাণিজ্যে সুবিধা আদায় ও নেগোসিয়েশনের ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধিতে ইউরোপিয়ন ইউনিয়নের সহযোগিতা প্রয়োজন। ইউরোপিয়ন ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য বাড়ানোর চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন বাংলাদেশের বড় ব্যবসায়িক অংশিদার। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের উন্নয়নের জন্য ইউরোপিয়ন ইউনিয়নের সহযোগিতা রয়েছে। বাংলাদেশ এখন তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। এ শিল্প এখন একটি শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে। করোনা মহামারির কারনে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।’
টিপু মুনশি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ব্যাপক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার জন্য সরকার প্রণোদনা প্যাকেজের মাধ্যমে সহযোগিতা দিচ্ছে। কোভিড-১৯ এর কঠিন সময়েও বাংলাদেশ অর্থনীতির চাকা সচল রাখার চেষ্টা করেছে। সরকার এবং তৈরি পোশাক শিল্পের মালিকদের আন্তরিক প্রচেষ্টা ও সহযোগিতায় করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাসহ যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে শ্রমিকদের ওপর তেমন কোন প্রভাব পরেনি।’
‘বাংলাদেশের পোশাক শিল্প বিগত যে কোন সময়ের চেয়ে অনেক বেশি নিরাপদ ও কর্মবান্ধব। কারখানায় শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এখন কারখানার মালিক ও শ্রমিকরা খুশি।’ যোগ করেন তিনি।
ইউরোপিয়ন ইউনিয়নের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত মিজ রিনসজে টেরিংক বলেন, ‘বাংলাদেশ ইউরোপিয়ন ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশিদার। বাণিজ্য ক্ষেত্রে ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন বাংলাদেশকে বেশ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। বাংলাদেশকে দেওয়া ইউরোপিয়ন ইউনিয়নের বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশ দক্ষতার সাথে সফলভাবেই কোভিড-১৯ মোকাবেলা করেছে।’
বাংলাদেশে চার বছর দায়িত্ব পালনে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি চমৎকার ও সম্ভাবনাময় দেশ। আগামী দিনেও ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন বাংলাদেশের পাশে থাকবে।’