Home Apparel পোশাক রপ্তানির পালে হাওয়া, ভিয়েতনামকে আবার পেছনে ফেলার আশা

পোশাক রপ্তানির পালে হাওয়া, ভিয়েতনামকে আবার পেছনে ফেলার আশা

মহামারীর প্রথম ধাক্কায় বিশ্ববাজারে পোশাক রপ্তানিতে নিজেদের দ্বিতীয় অবস্থান হারালেও তা ফিরে পাওয়ার ধারায় ফিরে এসেছে বাংলাদেশ।

সম্প্রতি দেশের পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, বছরের প্রথম ছয় মাস শেষে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ভিয়েতনামের চেয়ে পোশাক রপ্তানিতে প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার এগিয়ে আছে বাংলাদেশ।

রপ্তানিকারকরা বলছেন, প্রধান রপ্তানিবাজার ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলোতে মহামারী স্বাভাবিক হতে শুরু করায় বাংলাদেশে ক্রয়াদেশও বেড়েছে। এই ধারা চললে  বছর শেষে প্রতিদ্বন্দ্বী ভিয়েতনামকে টপকে যাওয়া যাবে।

তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বে বরাবরই শীর্ষে রয়েছে চীন। এক দশক আগে বাংলাদেশ দ্বিতীয় স্থানে উঠে এলেও করোনাভাইরাস মহামারীর ধাক্কায় গত বছর বাংলাদেশকে টপকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে যায় ভিয়েতনাম।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা-ডব্লিউটিওর ‘ওয়ার্ল্ড ট্রেড স্ট্যাটিসটিক্যাল রিভিউ’তে দেখা যায়, ২০২০ সালে বিশ্ববাজারে পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের অবস্থান তিন নম্বরে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের পোশাকপণ্য রপ্তানি করে প্রথম অবস্থানে ছিল চীন। বিশ্ববাজারে তাদের অংশীদারিত্ব ৩১ দশমিক ৬ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসা ভিয়েতনামের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ২৯ বিলিয়ন ডলার; বিশ্ববাজারে অংশীদারিত্ব ৬ দশমিক ৪ শতাংশ, যা আগের বছর ছিল ৬ দশমিক ২ শতাংশ।

আর গতবছর বাংলাদেশ ২৮ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করে; মোট বিশ্ব রপ্তানিতে অংশ ৬ দশমিক ৩ শতাংশ, যা আগের বছর ছিল ৬ দশমিক ৮ শতাংশ।

২০১০ সালে তৈরি পোশাকের বিশ্ব রপ্তানি বাজারে ৪ দশমিক ২ শতাংশ অংশীদারিত্ব অর্জন করে তুরস্ককে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় অবস্থানে এসেছিল বাংলাদেশ। এরপর থেকে এই অবস্থানেই ছিল।

তখন তুরস্কের অবস্থান ছিল ৩, ভারতের অবস্থান ছিল ৪। ওই সময় বিশ্ববাজারে ভিয়েতনামের অবস্থান ছিল তাদের পেছনে।

কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারীর শুরুতে বিশ্বের অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়ায় গত বছরের এপ্রিলে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় তলানিতে গিয়ে ঠেকে। তাতে ভিয়েতনাম পেছন থেকে উঠে এসে বাংলাদেশকে ছাড়িয়ে যায়।

তবে এরপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি।

সম্প্রতি বিজিএমইএর গবেষণা শাখা থেকে প্রকাশিত বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের তুলনামূলক চিত্রে দেখা যায়, চলতি বছরে জুলাই মাস পর্যন্ত ১৮ দশমিক ৮০০ বিলিয়ন ডলারের পোশাক পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। এই সময়ে ভিয়েতনামের রপ্তানির পরিমাণ ১৬ দশমিক ৮৬১ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ এরই মধ্যে ভিয়েতনামের চেয়ে ২ বিলিয়ন ডলার এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ।

বিজিএমইএর পরিচালক ও জনসংযোগ কমিটির চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন রুবেল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখন আপাতত দুই বিলিয়ন ডলার এগিয়ে থাকতে দেখা গেলেও প্রকৃত অর্থে এটা আরও বেশি হবে। কারণ ভিয়েতনাম তাদের পোশাক ও টেক্সটাইল সেক্টর মিলিয়ে তথ্য প্রকাশ করে। আমরা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে শুধু পোশাক রপ্তানির কথা বলছি। আমাদের টেক্সটাইল সেক্টরের অন্যান্য পণ্যের রপ্তানি তথ্য যোগ করে বললে অংকটা অনেক বড় হবে।”

বিজিএমইএ সহসভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চলতি পঞ্জিকা বছর শেষে ডব্লিউটিওর প্রতিবেদন বাংলাদেশের পক্ষেই আসবে।

“এখন বছরের মাঝামাঝি সময়ে দুই বিলিয়ন ডলার এগিয়ে আছে। বছর শেষে সেটা ৪ বিলিয়নেরও বেশি ছাড়িয়ে যাবে। কারণ, পোশাক খাতে এখন প্রচার অর্ডার রয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এর প্রতিফলন দেখা যাবে বলে মনে করি।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here